লেখার মতামত সম্পূর্নভাবে লেখকের নিজস্ব। লেখকের এমন চিন্তার সাথে অনেকেই হয়তো একমত হতে পারবেন না। একমত হতে না পারলেও মত প্রকাশের অধিকার লেখকের রয়েছে এবং এমন যেকোন একটি মত তিনি পোষণ করতেই পারেন। চিন্তা ও চেতনার এমন স্বাধীনতার কথা স্মরণ রেখেই তার লেখা এখানে পত্রস্ত করা গেলো। -সম্পাদক]
বাঙালি নিজ হাতে খেতে ভালোবাসেনা, অন্যে যদি গরম ভাতের সাথে বিষও মিশিয়ে খাওয়ায় সেটা খেতে খুব ভালোবাসে। আর এটাই বাঙালির চিরাচরিত স্বভাব। সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম এ ধরনের অভ্যাসগত অনুশীলন করে আসছে।
যেমন ছোটবেলা থেকেই ছেলেমেয়েরা প্রত্যেকটি কাজে বাবা -মার উপর শতভাগ নির্ভর করে। আত্মবিশ্বাস, আত্মবিকাশ বা আত্মকর্ম বলে ওদের কিছুই শেখানো হয়না। ছেলেমেয়ে বড় হয়ে কি হবে, কোন লাইনে পড়বে, কিভাবে খাবে, কিভাবে ঘুমাবে এটাও নির্ধারণ করে পরিবার পরিজন। ছেলেমেয়েকে বাঙালি সমাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে বিদেশী সংস্কৃতির ধারায় অনুপ্রাণিত করছে। তাদের নিজস্ব কোনো স্বকীয়তা নেই, নিজস্ব স্বাধীন সত্বার কোনো অস্তিত্ব নেই, সব যেনো হাতের পুতুল। আর বাঙালি প্রজন্ম এসবের জন্য বিশাল চাপের মুখে থাকে। আর এ কারনেই প্রত্যেকটা সন্তান মানসিকভাবে বিপর্যস্থ হয়ে বেড়ে উঠে।
আমরা যদি সর্বক্ষেত্রেই কারো না কারো উপর নির্ভর হই তবে আমাদের মানসিক যোগ্যতা, দক্ষতা ও গৌরবময় চিন্তার প্রতিফলন ঘটবেনা। বাঙালি যদি সাহসিকতার পাশাপাশি একমত ও একপথে থেকে নিজেদের কাঠামোকে পরনির্ভর না করে আত্মনির্ভর করতো তাহলে বাঙালির দুর্দিন বলে কিছুই থাকতোনা। আমাদের চিন্তার স্বাধীনতা, কর্মের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক স্বাধীনতা বলে কিছুই নেই। আমরা আমাদের পথচলা থেকে শুরু করে সর্বক্ষেত্রেই কারো না কারো উপর নির্ভর করি।
আমাদের সকল ধ্যান জ্ঞান ধর্ম ও কর্মের উপরে নিজেদের চিন্তা চেতনা ঘটাতে পারিনা বা সঠিক শ্রদ্ধাটা রাখতে জানিনা। একটা আত্মনির্ভর ও বহুগুনে গুণান্বিত বাঙালি অর্থাৎ গড়ে উঠা এক বাঙালি জাতি আজ সময়ের দাবী। আর আত্মনির্ভরতা মানে এই নয় যে, নিজেকে সংসার বা সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করা।
আত্মনির্ভরতায় সংসারে, সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা। এজন্য সঠিক পরিবেশ ও চর্চার প্রয়োজন।