লিখেছেন প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ।।
ব্রিটেনের রানীর প্রতিনিধি, কমলগঞ্জ প্রবাসী পিতা-পুত্রকে পুরষ্কারে ভূষিত করলেন
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের ছলিমগঞ্জ বাজারের ঐতিহ্যবাহী ছলিমবাড়ির কৃতি সন্তান বৃটেন প্রবাসী বিশিস্ট সমাজসেবক, ব্যবসায়ী, কমিউনিটি নেতা সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও তাঁর ছেলে মোহাম্মদ আলী সাফওয়ান চৌধুরী ব্রিটেনের মহামান্য রানীর পক্ষ থেকে এ্যাওয়ার্ড লাভ করেছেন। কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে সাফওয়ান এর ব্যক্তিগত উদ্যোগ সর্ব মহলে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায়। ব্রিটিশ স্বাস্থ্য বিভাগের ডাক্তার, নার্স, কর্মী, ব্রিটিশ এ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশ বিভাগের কর্মীদের মধ্যে নিজ উদ্যোগে বিতরণ করেছেন হাজার হাজার প্যাকেট খাবার। যার কারণে ব্রিটেনের মহামান্য রাণীর প্রতিনিধি হিসেবে লড লেপ্টেনেন্ট ও হাই শেরিপ কর্তৃক সাফওয়ান চৌধুরী ও তাঁর পিতা সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীকে “হিরো অব হার্ডফোর্ড শায়ার” খেতাবে ভূষিত করে। বাংলাদেশী বংশদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিক পিতা-পুত্র এলাকা ও দেশের জন্য অনন্য এক সম্মান বয়ে এনেছেন।
১৯৯৬ সালে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ছলিমগঞ্জের ছলিমবাড়ির কৃতি সন্তান সাফওয়ান চৌধুরী লন্ডণের কেমব্রিজ শায়ারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মাতা: জিনিফা চৌধুরী, দাদা: সিকন্দর আলী চৌধুরী, দাদি: আলেয়া বেগম চৌধুরী। লেখাপাড়ার সুত্রপাত মেরিডিয়ান স্কুল রয়স্টন, যার ধারাবাহিকতায় ব্রিটেনের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজের পিটার জন এন্টারপ্রাইজ, একাডেমী (প্রাইভেট) প্রতিষ্ঠান যার প্রতিষ্ঠাতা ইইঈ-২ ড্রাগনস এর ডেন টাইকন পিটার জনস ঈইঊ থেকে কৃতিত্বের সাথে এ লেভেল সম্পন্ন করেন। পরবর্তী পর্যায়ে ইউনিভার্সিটি অব হার্ড ফোর্ডশায়ার থেকে মার্কেটিং এন্ড ইকোনমিকস এ গ্রেজুয়েশন সম্পন্ন করেন।
মাত্র ১৮ বছর বয়সে কারী ইন্ড্রাষ্টিতে প্রথম পথ চলার শুরু। এর ফলস্বরূপ ঐ বছরই ব্রিটেনের সর্বকনিষ্ট টেকওয়ে/রেষ্টুরেন্ট ব্যবসায়িক হিসেবে স্বীকৃতি পান, যা ইইঈ ও ডেইলি স্টার বিশদভাবে তাদের নিউজে প্রকাশ করে। কারী ইন্ড্রাষ্টিতে তিন পুরুষের পারিবারিক ঐতিহ্য বজায় রেখে ২০১৯ সালে পিতার কাছ থেকে তার বর্তমান ব্যবসা ব্রিটিশ রাজ এক্সপ্রেসের দায়িত্বভার গ্রহন করেন। যা এই এলাকার ভোজন বিলাসী মানুষের অন্যতম পছন্দের জায়গা হিসাবে ইতিমধ্যেই স্বীকৃতি পেয়েছে।
ব্যবসার পাশাপাশি ইউনিভার্সিটিতেও সাফওয়ান তার উজ্জ্বল প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন বিভিন্নভাবে। ছিলেন ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট ইউনিয়নের নির্বাচিত চিফ ট্রাস্টি। যা একটি মাল্টিমিলিয়ন অগ্রেনাইজেশন। ইউনিভার্সিটির কমিউনিটিতে তার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৯ সালে জিতে নেন ঐতিহাসিক ইউনিয়ন ফেলোশীপ অ্যাওয়ার্ড। এছাড়াও হার্ড ফোর্ডশায়ার। ইউনিভাসির্টির বাংলাদেশী সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা এবং জেনারেল সেক্রেটারি দায়িত্ব পালন করেন।
সাফওয়ান চৌধুরী। ছবি: মুক্তকথা |
মাত্র ১৮ বছর বয়সে বাংলাদেশ ক্যাটারাস এসোসিয়েশন ইঈঅ এর সদস্য হিসাবে ব্রিটেনের কারী ইন্ড্রাটির সর্ববৃহৎ অভিভাবক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হন। মাত্র ২২ বছর বয়সে হন ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কমিটি, ঘঊঈ এর সদস্য। ইঈঅ এর ইস্ট অব ইংল্যান্ড ও হার্ড ফোর্ডশায়ার অ লের দু’বারের নির্বাচিত জয়েন্ট সেক্রেটারি হিসাবেও বর্তমানে কাজ করছেন। ইউ.কে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্ট অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিরও তিনি অন্যতম সদস্য। যুক্তরাজ্যস্থ কমলগঞ্জ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন এর সমাজকল্যাণ সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করছেন নিষ্টার সাথে। পারিবারিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান চৌধুরী সিকন্দর আলী ফাউন্ডেশন এর ট্রাস্টি ও ডাইরেক্টর জেনারেল হিসেবে কাজ করার জন্য তিনি অঙ্গীকারাবদ্ধ।
তরুণ সমাজসেবক সাফওয়ান চৌধুরী ব্রিটেন কমিউনিটিতে এক পরিচিত ও উজ্জ্বল মুখ। কারী ইন্ডাষ্ট্রিতে অবদানের জন্যও বিভিন্নভাবে হয়েছেন পুরুষ্কৃত ও নন্দিত। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো চ্যানেল এস এর ইয়ং রেসরেন্টার অব দ্যা ইয়ার, ক্যাটারিং সার্কেল অ্যাওয়ার্ড, এশিয়ান কারী অ্যাওয়ার্ডের ইয়ং এন্টারপ্রনর অব দ্যা ইয়ার, ব্রিটিশ হাউজ অব পালামেন্টের (ঞওঋঋওঘ ঈটচ) হাইলি কমেন্ডেড কেটারার অ্যাওয়ার্ড। এছাড়াও বৃটিশ কারী অ্যাওয়ার্ড এর ৪ বারের ফাইনালিষ্ট। সাফওয়ান চৌধুরী তিন পুরুষ ধরে প্রতিষ্ঠিত ক্যাটারাস এসোসিয়েশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
ব্যক্তি জীবনে খেলাধুলার প্রতি তার ভীষণ ঝোক। তিনি ফুটবল, ক্রিকেট খেলার অসম্ভব ভক্ত। নিজেও খেলেছেন হার্ডফোড শায়ার ও ক্যামব্রিজ শায়ার। কাউন্টির ক্লাবের অন্যতম পৃষ্টপোষক হিসেবে রয়েছে তার অবদান। বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানের চ্যারিটি অগ্রেনাইজেশন এর কাজেও সব সময় ব্যস্ত রাখেন নিজেকে।
ছলিমবাড়ির ঐতিহ্যকে বহন করে পৃথিবীর অন্যতম উন্নত দেশ ব্রিটেনে সাফওয়ান চৌধুরীর সাফল্য অর্জন স্বদেশ ও বিদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে, তা নি:সন্দেহে বলা যায়। তাঁর অসামান্য সাফল্যে গোটা কমলগঞ্জবাসী গর্বিত।
কমলগঞ্জের বিশিষ্ট লেখক-গবেষক আহমদ সিরাজ বলেন, ছলিমবাড়ির ঐতিহ্যপুরুষ বিশিস্ট শিক্ষানুরাগী মরহুম সিকন্দর আলী চৌধুরীর পুত্র, মরহুম নজির উদ্দিন চৌধুরীর ভ্রাতুষ্পুুত্র, গুণবতী স্ত্রী জিনিফা চৌধুরীর স্বামী, পুত্র সাফওয়ান চৌধুরীর পিতা ব্রিটেন প্রবাসী সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। পিতা-পুত্র উভয়েই ব্রিটেনের রানীর প্রতিনিধি কর্তৃক এ্যাওয়ার্ড পাওয়ায় আমরা আনন্দিত। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর পিতার নামে চৌধুরী সিকন্দর আলী ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে স্বদেশের মানুষের নানা সামাজিক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য সচেষ্ট থাকতে অভিব্যক্ত ব্যক্ত করেছেন। তাঁর মানবিক কর্মকান্ড আরো ব্যাপক হয়ে উঠবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমরা আরো আশা করছি সাফওয়ান চৌধুরী বয়সে নবীন হলেও নিজ এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ক্রীড়ার মানোন্নয়নসহ সামাজিক কর্মকান্ডে অবদান রাখবেন। তার দাদা চৌধুরী সিকন্দর আলী ফাউন্ডেশন এর অগ্রগতিতে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে অবদান রাখবেন।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি।