এম এ হামিদ, মৌলভীবাজার।। মৌলভীবাজারে করোনা প্রতিরোধে সাধারণ মানুষকে আইন মানাতে কিংবা ঘরে ফেরাতে প্রশাসনের জনবান্ধব তদারকি নাই বললেই চলে। ব্যাংক ও বিভিন্ন বাজারে লোকজন প্রয়োজনের তাগিদে জড়ো হয় গাদাগাদি করে। করোনা নিয়ম ভেঙ্গে বলতে গেলে জেলার সর্বত্র বিশেষ করে সদর শহরে মানুষ কেনাবেচা করছে। সেদিকে সুনজর দেয়ার সময় নেই প্রশাসনের। ফলে এখানে মানা হচ্ছে না লকডাউন, পেটের তাগিদে নির্দেশনা অমান্য করে জনসমাগম বাড়ছে। সোনালী ব্যাংকে ভাতা নিতে জড়ো হয়েছেন হাজার খানেক পুরুষ-মহিলা। প্রশাসন বলছে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী থাকাতে জোর করা যাচ্ছেনা। আর সেনাবাহিনী ত্রাণ দিচ্ছে বিভিন্ন গ্রামে।
আজ সোমবার ২০এপ্রিল সকাল থেকে শহরের প্রতিটি জায়গায় লোকসমাগম হয়েছে চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে শহরের সোনালী ব্যাংকে হাজার খানেক পুরুষ-মহিলা ভাতা নেয়ার জন্য জড়ো হয়েছেন। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন তারা পুলিশের সহায়তায় যতটুকু সম্ভব সরকারী আইন মেনে কাজ করার চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু অতিরিক্ত সংখ্যক কর্মচারী না থাকায় ও জনগণ করোনা নিয়ম না মানাতে তারা অনেকটাই বেকায়দায়। ব্যাংক কর্মকর্তা নিজেই হতাশা প্রকাশ করে বলেন প্রতিটি শাখায় এ দূরত্ব পালন করে কাজ করা সম্ভব হচ্ছেনা। দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা বলছেন বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী হওয়াতে বাধ্য করা যাচ্ছেনা, তবুও চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে পেটের তাগিদে শহরের কাঁচা বাজারসহ সর্বত্র লোক সমাগম বেড়েছে। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় রিক্সা নিয়ে অবাধে চলাফেরা করছেন মানুষজন। শহরের প্রবেশমুখে পুলিশের পাহারা চৌকি থাকলেও শহরের মধ্যে নেই কোনও কার্যকারিতা। সাধারন দিনের মতো অনেকটাই সবকিছু স্বাভাবিক। কিছু কিছু দোকানদার অর্ধেক সার্টার খুলে করছেন বেচাকেনা। ভাতা নিতে আসা সুবিধাভোগিরা বলছেন তারা দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে এর কোনও মিল নেই। আবার একে অন্যকেও দোষারোপ করছেন।
এদিকে সেনাবাহিনী বিভিন্ন গ্রামে তাদের নিজস্ব অর্থায়নে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ত্রাণ সামগ্রী দিচ্ছেন গরীব ও অসহায় লোকদেরকে।
সিভিল সার্জন সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত জেলায় হোম কোয়রেন্টাইনের আওতায় আনা ১৪শত ১৫ জনের মধ্যে ৯ শত ৩৭ জনের হোম কোয়ারেন্টিন শেষ হয়েছে যাদের মধ্যে কোন প্রকার করোনা লক্ষন পাওয়া যায়নি। ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ৩জন প্রাতিষ্ঠানিক হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। করোনা রিপোর্ট সংগ্রহের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে ২১৫টি, রিপোর্ট এসেছে ৫৯টি। একটি বাদে সবগুলো নিগেটিভ। নতুন করে কেহ আক্রান্ত হবার খবর পাওয়া যায়নি।
ওমর ফারুক, অফিসার জেনারেল, সোনালী ব্যাংক, মৌলভীবাজার শাখা বলেন, তারা পুলিশের সহায়তায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করছেন। ব্যাংকের সময়সূচী ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত হওয়াতে চেষ্ঠার পরও তা পারা যাচ্ছেনা।
সোনালী ব্যাংকে আসা নেবাগ্রহীতাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার দায়িত্বে নিয়োজিত কামরান হাসান রিয়াদ, এসআই, মৌলভীবাজার বলেন, লোকজন বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী হওয়াতে তাদের উপর জবরদস্তি করা যাচ্ছেনা। তবে তারা চেষ্টা করছেন যেন তারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সেবা গ্রহন করেন। ২০ এপ্রিল ২০২০।