বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬.৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস। হিমেল হাওয়ার সাথে শীতের তীব্রতার কারণে সময়মত কাজে যোগ দিতে পারছেনা শ্রমজীবি মানুষেরা। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন বোরো ধানচাষী, ছিন্নমূল ও দিনমজুর। দিনে ও রাতে অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। গরম কাপড়ের দোকানে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের কেনাকাটা সবচেয়ে বেশী দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি গবাদিপশু নিয়েও মানুষ পড়েছে বিপাকে। পশুর গায়ে ছেড়া বস্তা ও কাঁথা দিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্যদিকে শীতের তিব্রতায় শীতকালীন সবজীরও বেশ ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান কৃষকরা। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলস্থ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা বিবলু চন্দ্র জানান, ঘন কুয়াশা ও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন না থাকায় শীতের তীব্রতা বেড়ে গেছে। আজ সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ অঞ্চলে মূলত জানুয়ারি মাস থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত শীতের তীব্রতা বেশী থাকে। উল্লেখ্য, ১৯৬৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি এ অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ২দশমিক ৮ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে কুশিয়ারা নদী পাড়ের মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলার আখাইলকুড়া, মনূমুখ, ফতেপুর ও উত্তরভাগ ইউনিয়নের মানুষ পড়েছেন মহা বিপাকে। শীতের তীব্রতাকে যেন জয় করতে পারছেন না তারা। গেল ৬ মাস বর্ষায় কুশিয়ারা তান্ডবে জলমগ্ন ছিলেন নদী পাড়ের ৪ ইউনিয়নের প্রায় ৪০ গ্রামের ২লাখ মানুষ। এর রেস কাটতে না কাটতেই শীতের সাথে লড়াই করতে হচ্ছে তাদের। এদিকে মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ জানান, শীতের কারণে রোরো ধানের বীজতলায় চারা বৃদ্ধি বিলম্বিত হয়েছে। শীত ও ঘন কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী হলে ধানে চিটা আসতে পারে। মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুরর্শেদ জানান, অন্য সময়ের তুলনায় এখন শীতজনিত রোগে প্রতিদিন জেলার সরকারি ও বেসরবারি বিভিন্ন হাসপাতালে শিশু ও বয়স্কদের ভর্তির সংখ্যা অনেক বেশি। মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, জেলায় মোট বরাদ্দ এসেছে ৩৫ হাজার ২শত ৮০ টুকরো কম্বল। ইতোমধ্যে কম্বলগুলো জেলার ৭টি উপজেলার ছিন্নমূল, দিনমজুর ও অসহায় মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। |