মৌলভীবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা দায়ের ও প্রতিপক্ষকে হয়রানির অভিযোগে সি.আর ৪৭৫/২০২২(সদর) নং মামলার বাদী সুন্দর আলীর বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য মৌলভীবাজার মডেল থানা-কে নির্দেশ প্রদান করেছেন বিজ্ঞ প্রধান দেওয়ানী বিচারক(চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) জনাব মুহম্মদ আলী আহসান। বিজ্ঞ প্রধান দেওয়ানী বিচারক(চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) গত বুধবার, ৯নভেম্বর ২০২২খ্রি. তারিখ দুপুর ১২.০০ ঘটিকায় এই আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বিগত ১৫জুন ২০২১খৃ: তারিখ রোজ মঙ্গলবার বিকাল ৩.০০ ঘটিকায় উল্লিখিত মামলার বাদী সুন্দর আলী এই মর্মে অভিযোগ করেন যে, তার কাছে থেকে কন্যার বিবাহ দেয়ার নিমিত্তে তার পরিচিত নিতেশ দাশ ও গীতারানী দাশ ৪,০০,০০০(চারলক্ষ টাকা) কর্জ গ্রহন করেন। পরবর্তীতে কর্জকৃত টাকা পরিশোধ করতে না পারায় বর্ণিত আসামীদের বিরুদ্ধে সুন্দর আলী বাদী হয়ে গত ২৭/০৬/২০২২খৃ: তারিখ ১নং আমলগ্রহণকারী আদালত, মৌলভীবাজার সদর-এ ১৮৬০ এর ৪০৬/৪২০/৫০৬(দ্বিতীয় অংশ) ধারায় মামলা দায়ের করলে আদালত উক্ত ধারায় মামলা আমলে নিয়ে আসামীদের প্রতি আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ জারী করেন এবং ৯ নভেম্বর ২০২২খৃ: মামলার শুনানীর তারিখ ধার্য করেন।
ওই তারিখে জামিন শুনানীতে পৌঁছে আদালত জানতে পারেন যে মূলত: অভিযুক্ত দু’জন ৪লাখ টাকা নয় বরং মাত্র ২৫হাজার টাকা চিকিৎসার জন্য কর্জ নিয়েছিলেন। এমতাবস্থায়, বিজ্ঞ আদালত বিস্তারিত অবহিত হয়ে বাদী সুন্দর আলীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মৌলভীবাজার মডেল থানা কে নির্দেশ দিয়ে বাদী সুন্দর আলী কে আদালতের দায়ীত্ব ও তত্ত্বাবধানে প্রেরণ করেন এবং আসামীদের জামিনের আদেশ দেন।
শুনানীর সময় বিজ্ঞ বিচারক আদালতে উপস্থিত জেলা বারের বিজ্ঞ আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এ দেশের অধিকাংশ মানুষই অসহায় দারিদ্রপীড়িত। গরীব, অসহায় ও নির্যাতিত সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের পাশে থেকে আইনী সেবা প্রদানের জন্য তিনি অনুরোধ জানান এবং মানুষ যেন মিথ্যা মামলায় হয়রানী না হয় সেজন্য মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে বিজ্ঞ আইনজীবীদের আরও সতর্ক থাকার নির্দেশনা প্রদান করেন।
মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাবেক পি,পি জনাব এ. এস. এম. আজাদুর রহমান বলেন, অনিবন্ধিত সুদের কারবারীর বিরুদ্ধে উক্ত ব্যতিক্রমী ও যুগান্তকারী আদেশের ফলে সমাজে অবৈধ সুদের কারবার হ্রাস পাবে।
মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জনাব মোঃ বদরুল হোসেন ইকবাল বলেন, আদালত যে দৃষ্টান্তমূলক আদেশ দিয়েছেন যার ফলে সমাজে নিরীহ ও নির্যাতিত মানুষের অবৈধ ও অনিবন্ধিত সুদের কারবারীদের করাল গ্রাস থেকে মুক্তি পাবার বিষয়ে আশার সঞ্চার হয়েছে।
পাবলিক প্রসিকিউটর জনাব রাধাপদ দেব সজল বলেন, সুদ মানুষকে প্রকৃত অর্থনৈতিক কার্যকলাপ থেকে ফিরিয়ে রাখে। আদালতের উক্তরূপ আদেশের ফলে সমাজে অবৈধ সুদের কারবারীর সংখ্যা হ্রাস পাবে।
সূত্র: সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে, প্রণব চন্দ্র গোপ, বেঞ্চ সহকারী, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, মৌলভীবাজার