মুক্তকথা সংবাদ।। মার্কিসন উল্কাপিণ্ড বা নভোজ্যোতির্ময়।
১৯৬৯ সাল। অষ্ট্রেলিয়ার ভাগ্যাকাশে নবসূর্য্যের অভ্যুদয়। স্রষ্টা যাকে দেন একেবারে নিজের সিন্দুক উজাড় করে দেন। সেদিন কোন মেঘবৃষ্টি ছিলনা। ছিলনা কোন ঝড়-তুফান। পরিষ্কার উষার আকাশ থেকে ঝড়ে পড়ে অষ্ট্রেলিয়ার মার্কিসন এলাকায় এক খণ্ড পাথর। সাধারণ ভাষায় বুঝাতে গেলে একটি উল্কাপিণ্ডই বলতে হবে। ইংরেজীতে বলে “মেটেওরাইট” বা “মিটোরাইট”। সারা বিশ্বের মাত্র ৮ কিংবা ১০টি দেশে এই উল্কাপাতের ঘটনা ঘটেছে। উল্কাপাত হচ্ছে সেই ঘটনা যা কি-না শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিতে মহাশূণ্যের ভ্রাম্যমান কিছু কিছু পাথর তাদের গতিপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে মানবের এ ধরার বুকে মাটিতে এসে পড়ে। সেসব পাথরের মাঝে উজ্জ্বল কাচের মত অসংখ্য গুটিকা পাওয়া যায়। শুদ্ধ বঙ্গভাষায় তাকে বলা হয়েছে নভোজ্যোতির্ময় বা ইংরেজীতে Chondrules বলে থাকে। এসব গুটিকা এতো শক্ত যে হীরার চেয়েও দামী বলেই “জিওলজি ইন” সাময়িকী লিখেছে।
তেমনি একটি আস্ত পাথর ১৯৬৯ সালে অষ্ট্রেলিয়ার মার্কিসন এলাকায় এসে পড়েছিল। গবেষক বিজ্ঞানীদের কথায় “জিওলজি ইন” লিখেছে, অষ্ট্রেলিয়ায় পাওয়া এ উল্কাপিণ্ডটি এতই পুরানো এবং এর গঠন যে প্রক্রিয়ায় তাতে অনুমান যে, দুনিয়া সৃষ্টি লগ্নের বলেই মনে হয়। বিজ্ঞানীরা হিসেব করে এর মোটামুটি এক বয়স ঠিক করেছেন এবং বলেছেন ৪৬০,০,০০০,০০০ কোটী বছর (৪৬০কোটী বছর) আগের। অন্য কথায় বলা যায় এ বিশ্ব ও নভোমণ্ডল সৃষ্টি লগ্নের সময়কার তৈয়ারী এই পাথর বা উল্কাপিণ্ড।
এতো দামী আলোকোজ্জ্বল নভোজ্যোতির্ময় এটিই প্রথম। তাই বলছিলাম, সৃষ্টি লিলা বুঝা ভীষম দায়। মহামূল্যবান দামী হীরক গুটিকায় ভর্তি এমন পাথর পড়লো কোথায়! ধনী দেশ অষ্ট্রেলিয়ায়।
সূত্র: জিওলজি ইন