দেশের বৃহত্তম হাওর হাকালুকির ৮টি মাছের অভয় আশ্রম থেকে মাছ ধরার হরিলুট চলছে। খোদ ভূমি মন্ত্রনালয় বিলগুলোর বর্তমান অবস্থা জানতে চেয়েছে। এদিকে হরিলুট আর লুটপাটের কারণে অভয় আশ্রমের কমিটি বাতিলসহ নতুন কমিটি ঘোষনার প্রক্রিয়া চলছে। তবে বিস্ময়ের বিষয় হলো মাছ লুটের পরও অজ্ঞাত কারণে মৎসখেকোদের বিরুদ্ধে নেয়া হচ্ছে না কোন ব্যবস্থা। অবস্থায় মনে হয় স্বয়ং সরিষায়ই নতুন করে ভুত চেপেছে!
জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, হাওরের কুলাউড়া উপজেলার কাংলী গোবরকুড়ি চিকনমাটি গ্রুপ ফিসারী, জুড়ী উপজেলার আগদার বিল, মাইছলার ডাক ও বড়লেখা উপজেলার নিমু বিল, কৈয়ারকোনা বিল, মাইয়াজুড়ী বিল, তোকোনি বিল কৈরের মুড়া ও কেশবডহর গ্রুপ নামের এই ৮টি বিল বিভিন্ন সংগঠনকে দেখভালের দ্বায়িত্ব দেয় সংশ্লিষ্ট দফতর। দীর্ঘদিন যাবৎ মৎস লুটের কারণে পুরো হাকালুকি জুড়ে মাছের অভাব দেখা দেয়। স্থানীয়রা বলেছেন, এক-একটি বিল থেকে প্রতি বছরে কমপক্ষে ১ কোটি টাকার মাছ লুট হয়। এ হিসেবে ৮টি বিলে এক বছরে লুট হয়েছে ৮ কোটি টাকা।
জুড়ী বেলি মৎস ফিসারী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক জমির আলী বলেন, “সরকার অভয় আশ্রম করে যেসব সংগঠনকে বিল তদারকির দ্বায়িত্ব দিয়েছিল তারাই মাছ লুটে-পুটে খাচ্ছে। সেচের মাধ্যমে ধরে সব মাছ বিক্রি করে পকেট ভারি করছে। এছাড়াও এরা বিষটুপে অতিথি পাখিও নিধন করছে। তিনি বলেন, তাদের দ্বায়িত্ব বিলে বাঁধ সংস্কার, মাছের খাদ্য নিশ্চিতসহ জলাধারে মাছের অভয়বিচরণ নিশ্চিত করা। কিন্তু সেটা তারা করতে পারেনি। দেখাশুনা করার পাহারাদার বাড়িতে ঘুমিয়ে সময় কাটায়।
জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, আশ্রম পরিচালনাকারী সংগঠনের অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসায় কমিটি ভেঙ্গে নতুন করে কমিটি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, তেকোনি বিলে নতুন একটি কমিটি হয়েছে। মৎস লুট বন্ধ না হবার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা অভিযানে গেলে মৎস খেকোদের পাইনা।
বড়লেখা উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা নাজরাতুন নাইমা বলেন, মাছের অভয় আশ্রমগুলো একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা দেখাশুনা করছেন। কেহ যদি অভয় আশ্রম থেকে মাছ লুট করে তবে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য যে, হাকালুকি হাওরজুড়ে ব্যাপক মৎস বৃদ্ধির কারণে ভূমি মন্ত্রনালয় এবং মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে শ্রীমঙ্গলের বাইক্কাবিলসহ হাকালুকি হাওরে ৮টি মাছের অভয় আশ্রম তৈরি হয়।