লন্ডন: আজ ছিল বিশ্ব মুসলমানের মহাপবিত্র ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত বকর ঈদের ২য় দিন। এ দিনে হজ্জ্ব পালনকারীরা আরাফাত পাহাড় ও ময়দানে সমবেত হয়ে থাকেন মহানবী মোহাম্মদের পূণ্যস্মৃতি তর্পণের জন্য। আরাফাত ময়দান ও পাহাড় সেই ভূমি যাকে বিশ্বমুসলিম, জীবনে সংঘটিত সকল অনাচার থেকে মুক্তি পাবার মহাপবিত্র ভূমি হিসেবে বিশ্বাস করে। এই সেই ময়দান যেখানে মহানবী মোহাম্মদ, আজ থেকে ১৪শত বছর আগে তার জীবনের শেষ ভাষণ দিয়েছিলেন।
খুবই সংক্ষেপে এই হল আজকের দিনের হজ্জ্বের চিত্র যেখানে সারা দুনিয়ার ২০ লাখ মুসলমান পাপমোচনের মহাপবিত্রস্থান যাকে আরবিয়ানরা বলে ‘জাবাল আল রহমা’য় সমবেত হয়। পড়নে সাদা পোষাক নিয়ে ভোর থেকে শুরু হয় আরাফার আগুনের মত গরম পাথুরে পাহাড়ে প্রার্থনার জন্য হাজীদের জমায়েত হওয়া। ৫দিনের হজ্জ্বের আজ ২য় দিন, সক্ষম সকলের জন্য প্রার্থনায় অংশ নেয়া খুবই জরুরী এবং অবশ্য পালনীয় একটি কাজ। অবশ্য, অনেকেই যারা কিছুটা অক্ষম, বেশী হাটতে পারেন না তারা নিজেদের তাবুতেই বসে সময় কাটান। তাবুকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কাজও করেন।
জ্বলন্ত সূর্যের নিচে থাকা আরাফার ময়দানের আজকের তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। মক্কা নগরীর পূর্ব দিকে অবস্থিত আগুনের মত উত্তপ্ত এই আরাফা পাহাড়ের চূড়ায় লাখে লাখে হাজীগন খালি পায়ে উঠেন হৃদয়ে অন্তরে একটি সুরই তখন ধ্বনিত হয়-“আমরা হাজির হয়েছি প্রভু তোমার সামনে” যা মুখ দিয়ে প্রতিধ্বনিত হয় প্রতিটি পায়ের তালে লয়ে। এতো আবেগ, উচ্ছাস নিয়ে স্রষ্টার আরাধনায় মসগুল হয়ে তপ্তমরুর অগ্নিদাহকে তুচ্ছজ্ঞান করে সমবেত হয় বিশ্বাস শুধু ওই যে এখানেই মহানবী তার জীবনের শেষ নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এই দাবদাহে যারা পীড়িত হয়ে পড়েন তাদের জন্য আরাফা পাহাড়ের অন্যপাশে বিশাল হাসপাতাল রয়েছে। রেড ক্রিসেন্ট সেখানে ৩২৬টি এম্বুলেন্স গাড়ী রেখেছিল অসুস্থদের তড়িৎ চিকিৎসা দেয়ার জন্য।
এখান থেকে সন্ধ্যার দিকে তীর্থ যাত্রীগন শয়তানকে পাথর মারার জন্য মোজদালিফার দিকে রওয়ানা হবেন। এখানেই বিগত ২০১৫ সালে “জামারাত সেতু”র কাছে ২৩০০ জন হাজী প্রান হারিয়েছিলেন। মুসলমানদের হজ্জ্ব জীবনের এক কলঙ্কময় ঘটনা ঘটেছিল। অবশ্য এবারের হজ্জ্বে হাজীদের নিরাপত্তার জন্য সৌদি সরকার ১ লাখ নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ করেছে। তথ্যসূত্র ও ছবি: ডেইলি মেইল থেকে। http://www.dailymail.co.uk/news/article-4839462/Pilgrims-scale-Mount-Arafat-peak-hajj.html#ixzz4rSnUb3Ho