লন্ডন: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেছেন, দেশে আইনের শাসন ও মানবাধিকার বলে কিছু নেই। বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করুক তা প্রশাসন বা অন্য বিভাগগুলো চায় না। আইনমন্ত্রী দাবি করেছেন অন্য দেশের প্রধান বিচারপতিরা প্রকাশ্যে এত কথা বলেন না। কিন্তু আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই অন্য দেশে প্রধান বিচারপতির প্রকাশ্যে কথা বলার প্রয়োজন হয় না, কারণ সেখানে আইনের শাসন আছে। বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করছে। আমাদের দেশেও আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার থাকলে প্রধান বিচারপতির এত কথা বলার প্রয়োজন হত না।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন এসব কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এম মাহবুবউদ্দিন খোকন, সহ-সভাপতি উম্মে কুলসুম রেখা, সহ-সম্পাদক শামীমা সুলতানা দীপ্তি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বার সভাপতি বলেন, বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা বিধি প্রণয়নের জন্য সর্বোচ্চ আদালত বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়ার পরেও এ সংক্রান্ত গেজেট জারি হয়নি। সরকার এ পর্যন্ত ৬৭ বার সময় নিয়েছে। সুতরাং বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করুক তা সরকার চায় না, এই সময়ক্ষেপণ তারই প্রমাণ।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মানবাধিকার রক্ষার জন্য বিচার বিভাগকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে এটাই জনগণের দাবি। বার সভাপতি বলেন, যদি আইন বিভাগ সংবিধান মোতাবেক আইন প্রণয়ন না করে বা সংবিধান পরিবর্তন করে, সংবিধানের অভিভাবক হিসাবে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা রয়েছে সে আইন বাতিল করার।
এর পরই সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সরকার সমর্থিত ছয় জন সদস্য আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে বারের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. অজি উল্লাহ বলেন, সরকারের কেউই বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় কিংবা এর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কোন বক্তব্য প্রদান করেননি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য থেকে একটি বিষয় খুবই পরিষ্কার যে সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ভাবমূর্তি রক্ষায় কতটা আন্তরিক। বিচার বিভাগের আরও কোন চাহিদা বা সরকারি সমর্থন প্রাপ্য হলে তা সরকারের দুই বিভাগের নিজেদের ভেতর আলোচনা সাপেক্ষ বিষয়। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে টুইস্ট করে তার বিপরীতে একটি প্রতিক্রিয়া আইনজীবী সমিতির দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। এ ধরনের প্রতিক্রিয়া বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে বিরাজমান সম্প্রতির ফাটল ধরাতে পারে। এ সময় কোষাধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম হিরু, সহ-সম্পাদক শফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। খবর ইত্তেফাকের।