হারুনূর রশীদ।।
অধ্যাপক সুনির্মল কুমার দেব মীনদুনিয়ার দেশে দেশে সকল মানব সমাজেই মনে হয় কিছু মানুষের জন্ম হয় সমাজকে শুধু দিয়ে যাবার জন্যে। এসকল মানুষ নির্বিকার চিত্তে হাসিমুখে শুধু দিয়েই যান। এরা নির্লুভ নিরোহঙ্কারী; অন্যের খুশীই তাদের শান্তি। যেকোন মানুষকে কিংবা মানুষের সমাজকে কিছু একটা দিতে পারলেই তারা তৃপ্তিপান। মানুষকে হাসিয়ে মাতিয়ে রেখে তারা আনন্দ পান। আমার বাল্য থেকে অদ্যাবদি তেমনই কিছু মানুষকে পাওয়ার, দেখার এমনকি তাদের সঙ্গ পাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। সত্য বলেই বলতে বাধা নেই যে এখন আর তেমন যুবক দেখি না। চলমান সময়ে আমার চিন্তা-চেতনা, মন-মানসিকতা, সবকিছু মিলিয়ে আমার আজকের অবস্থান, আমার মা-বাবা-নানীর পরেই ওইসব মহেন্দ্র ক্ষনজন্মাদের অবদান। এমন মানুষ সমাজে প্রতিদিন জন্মায় না। শত শত গড়ে উঠে না। আমার গড়ে উঠায়, আমার বর্তমান-ভবিষ্যৎ জীবনের রচনায় সেই সব পরমাত্মীয়দের সাহচর্য্য-সৌহার্দ্য প্রতিটি পদে পদে কাজ করেছে এখনও করে যাচ্ছে। আমার কাছে শ্রেষ্ঠ এ সকল হিতাকাঙ্ক্ষীদের পরম শ্রদ্ধেয়জনদের অনেকেই অজানা অনন্ত সে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। যারা এখনও বেঁচে আছেন তাদেরই একজন আমাদের সকলের শ্রদ্ধেয় মীন দা। |
|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সুনির্মল কুমার দেব মীন। ‘মীন দা’ আমাদেরই মত তার সকল অনুসারীদের দেয়া তার সংক্ষিপ্ত আদুরে নাম। এক সময় সারা শহর জুড়ে এক নামে তাঁকে সকলেই চিনত। তার জন্ম থেকে বাল্য, কৈশোর ও যৌবনের মত জীবনের মহেন্দ্রক্ষনগুলো কাটিয়েছেন ছোট্ট মহকুমা শহর মৌলভীবাজারে। তাকে দেখেছি এবং পেয়েছিও রাজপথের প্রতিবাদী আন্দোলন থেকে শুরু করে লেখা-লেখি, প্রকাশনা, অভিনয়, সমাজসংস্কার, সেবাকর্ম, চাকুরী এবং সর্বোপরি মজলিশি আড্ডায়। |
|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আমাদের অগ্রজ প্রয়াত অংকন ও অভিনয় শিল্পী মোহাম্মদ রমজান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মীনদা মানেই দিলখুলা হাসি-তামাসা আর ঠাট্টা! তখনকার সময়ের ছোট্ট সেই মৌলভীবাজার শহরকে বলতে গেলে হাসিয়ে-মাতিয়ে মাথায় তুলে রাখতেন যে ক’জনা তাদের মাঝে ‘মিনদা’ অন্যতম। তার পরেই, সুস্থ সুশীল হাস্য-রসের ফিরিস্তি দিতে যাদের নাম বলা যায় তাদের দু’জন ছিলেন জাত শিল্পী ‘মোহাম্মদ রমজান’ আর ‘রাইমোহন দেব নাথ’। একসময়ে মৌলভীবাজারের সাংস্কৃতিক আঙ্গিনায় তাদের বিচরণ ছিল বাধা-বন্ধন মুক্ত। মৌলভীবাজারের সুস্থ সংস্কৃতি গড়ে উঠার পেছনে যাদের অফুরান কর্ম রয়েছে, তাদের উত্তরসূরীদের এরাই তিন সফল ব্যক্তিত্ব। মোহাম্মদ রমজান ও রাইমোহন দেবনাথ অনেক আগেই ইহলীলা সাংঙ্গ করে জীবনের ওপারে চলে গেছেন। চলে গেছেন স্থানীয় সংস্কৃতির দিকপাল সকলেই। |