৭৬ বছর বয়সে মারা গেলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়কালীন ঢাকায় অবস্থানরত সাংবাদিক সায়মন ড্রিং। সাংবাদিক সায়মন ড্রিং ছিলেন প্রথম সাংবাদিক যিনি ১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানের ভয়াবহতা ও নৃশংসতার বিবরণ বিশ্বের মানুষের কাছে তুলে ধরেছিলেন। পাকিস্তানী সামরিক জান্তার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি পাক হানাদার বাহিনীর অমানবিক জঘন্য ও নৃশংসতার বিবরণ জানিয়ে দিয়েছিলেন দুনিয়ার মানুষের কাছে। গত শুক্রবার রুমানিয়ার একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সময় বাংলাদেশের এই অকৃত্তিম বন্ধু জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে চলে গেছেন অচেনা অজানা জগতে। অবিসংবাদিত এই সাংবাদিক সায়মন ড্রিং কে বাংলাদেশও তার যথাযোগ্য মর্যাদা দিতে ভুল করেনি। বাংলাদেশ তাকে সন্মানসূচক নাগরীকত্ব দিয়ে সন্মানিত করেছিল। সাংবাদিক সায়মন ড্রিং এর দ্বারা পাকহানাদার বাহিনীর নৃশংসতার খবর সংগ্রহের সে কাহিনী একদিকে যেমন দুঃসাহসিক অন্যদিকে জীবনবিনাশী লোমহর্ষকও বটে। পাকহানাদারদের নৃশংসতার খবর সংগ্রহের জন্য সায়মন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হোটেলের বাঙ্গালী কর্মচারীদের সাথে লুকিয়ে হোটেলেই থেকে যান। পরে হোটেল বয়ের সাহায্যে বেরিয়ে আসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, রাজারবাগ পুলিশ ফাঁড়ি, চারুকলা এসব যায়গা ঘুরে সংবাদ সংগ্রহ করেন। পাক হানাদারেরা এসব এলাকা বধ্যভূমিতে পরিণত করেছিল। বৃটিশ হাইকমিশনের সহযোগীতায় একদিন পর ঢাকা ছেড়ে যেতে সক্ষম হন। ব্যংকক গিয়ে সংবাদ তৈরী করে দৈনিক টেলিগ্রাফ পত্রিকায় সংবাদ পাঠান। তার সে সংবাদই ছিল বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সংবাদ যা ছাপা হয়েছিল ৩০মার্চ ১৯৭১ইং। তাই সাংবাদিক সায়মন ড্রিং বাঙ্গালিদের কাছে চিরকালের এক নায়ক হয়ে থাকবেন যুগ যুগ যুগান্তর ব্যাপী। |