1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
কিছুই জানি না, এ সৃষ্টি শক্তির কোন ইংগিত! - মুক্তকথা
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১১ অপরাহ্ন

কিছুই জানি না, এ সৃষ্টি শক্তির কোন ইংগিত!

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ৪৬৬ পড়া হয়েছে
Garry Mabbutt opens the press confr At the Foreign office on the World Cup in South Africa see attached Story

হারুনূর রশীদ॥

২৮ জানুয়ারী, বৃহস্পতিবার ২০২১ সাল। আজকের এ দিনটি জীবনের শেষকাল অবদি ঝল মল করে আলোকিত হয়ে স্মরণে থাকবে। অতীতের সকল সময়ের মত গত বছর এই দিনে, আমার সবকিছু জুড়ে যার অস্তিস্থ আমার সেই প্রয়াত স্ত্রী হেলেনা আমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। মনের সে মানুষটি অধরা স্মৃতি হয়ে আজ মনোজগতের বিশাল স্বপ্নরাজ্যে বিচরণকারী অমৃতের সন্তান!
জীবন যুদ্ধে হারমানা এই আমার সেই জন্মদিনে আজ করোণা মহামারীর টীকা দিতে যাবো। এর আগের সপ্তাহে আমাকে তারিখ দিয়েছিল টীকা নেয়ার। কিন্তু নিন্দুকদের নিন্দাবাদে কলুষিত হয়ে দেবো কি দেবো না এ অস্থিরতায় অবশেষে আর দেয়াই হয়নি। পরে দ্বিতীয় দফা ডাক্তারবাড়ী থেকে তারিখ দিয়েছে ২৮জানুয়ারী একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে টীকা নিতে।
প্রত্যুষে ঘুম থেকে উঠে প্রস্ত্ততি নিচ্ছি বের হবো এমন সময় টেলিফোনটা বেজে উঠলো। আমার একমাত্র ছেলে মাহমুদ টেলিফোনটা ধরলো। চমৎকৃত চেহারায় দৌড়ে এসে আমাকে ফোন দিয়ে বললো- আব্বা, তোমার ফোন।
বললাম, আমার ফোন, তা তুই এতো খুশী খুশী চেহারায় হাসছিস কেনো?
ছেলের প্রতি আমার অবোধ জিজ্ঞাসা!
মাহমুদ আনন্দের হাসি আরো জোড়ে হেসে বললো দেখোনা কে?
‘হ্যালো!’ বলতেই অপর প্রান্ত থেকে এক অজানা মানুষের কণ্ঠস্বর ভেসে উঠলো। একজন ইংরেজীতে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন- “হেপি বার্থডে টু ইউ”। অচেনা অজানা মানুষের দ্বারা দূরালাপনীতে জন্মদিনের শুভেচ্ছা আর আশীর্বাদ চাওয়া জীবনের কল্পনায়ই ছিল না কখনও। অবাক বিস্ময়ে পুত্রের কাছে লোকটির পরিচয় জানার আগ্রহ জানালাম।
২৮শে জানুয়ারী আমার জন্মতারিখ ঠিকই। তবে তারিখটা নিয়ে আমার মনোজগতে আজো কিছু প্রশ্ন ঘুরে বেড়ায়। কারণও আছে। এসএসসি পরীক্ষার সময় আমার জন্মকালে কিছুটা কালির আঁচর কাটতে হয়। কিছুদিন বাড়িয়ে লিখতে হয়। কতদিন বা মাস বাড়িয়ে দেয়া হয়েছিল তা’ আজ আর মনে নেই। সন্দেহ থাকুক আর না থাকুক জন্মদিন হিসেবে এই ২৮জানুয়ারীকেই আমি ইচ্ছের বিরুদ্ধে হলেও মেনে নিয়েছি সে অনেক আগেই। অবশ্য মেনে নিলেও এ সন্দেহ মনের কেনভাসে এখনও ভেসে বেড়ায় আর এভাবেই চলবে আমৃত্যু বলেই মনে হয়।
বছর ঘুরে জন্মদিন উপস্থিত হলেই এ কথাটি আমার মনে আসে। করালগ্রাসী কালের আবর্তনে প্রতিবছরই, দিনটি আসে আর নিজের মনোজগতে চিন্তার ঢেউ তুলে দিয়ে যায়। সে ঢেউ দীর্ঘ সময় ভেসে বেড়ায় মনের অজানা দিগন্ত থেকে দিগন্তে।
চোখ খোলা অবস্থায় সে আনন্দে অবগাহন করা যায় না। অনিন্দসুন্দর সে জগতকে দেখতে হলে মুদ্রিত নয়নে ধ্যানমার্গে নিজের উত্তরণ ঘটাতে হয়।
অসীম সে জগতে ক্ষনিকের জন্য ঘুরতে গিয়ে শুধুই ভাবি কেনো জন্মদিনের পুরো তারিখটা লিখে রাখলাম না। যৌবনের সে মহেন্দ্রক্ষণগুলোতে রাজনীতি আর সমাজবদলের রাম-রাবণ লড়াইয়ে বীরবাহু অর্জুণ হয়ে হাওয়াই তীর উড়াতে এতই উদ্বাহ হয়েছিলাম যে নিজের জন্মতারিখটা লিখে রাখার সময় করে নিতে পারিনি। এ নমুনায় প্রতিবছরই একদিন কাটে চিন্তার অসীম বিশাল জগতে বিচরণ করে। চিন্তা জগতে ডুব দিয়ে নিস্ফল তোলপাড় আর মেনে নেয়া সমান্তরালে চলে আসছে সে কোন সময় থেকে তা’ আজ আর মনে পড়েনা।
একই ধারাবাহিকতায় এবারের জন্ম তারিখে ঘটলো জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য একটি ঘটনা।
সে ঘটনার নায়ক গেরি মাবুট(Gary Mabbutt)। পুরো নাম গেরি ভিনসেন্ট মাবুট এমবিই। এমবিই বৃটিশ সরকারী সনদ। পুরোটা দাঁড়ায় ‘মেম্বার অব দি অর্ডার অব দি বৃটিশ এমপায়ার’। গেরি নামকরা পেশাজীবী ফুটবলার। তিনি বৃটেনের বৃষ্টলের মানুষ। তাই যতদিন ফুটবল খেলেছেন, বৃষ্টল রবার্স এর হয়েই খেলেছেন। আর খেলেছেন টোটেনহাম হট্সপার-এর হয়ে। নন্দিত এই খেলুড়ে তার ফুটবল জীবনে সর্বমোট ৭৫০দফা খেলতে নেমেছেন মাঠে। এর পর ইংল্যাণ্ড জাতীয় দলের খেলোয়াড় হয়ে ১৬বার আন্তর্জাতিক ফুটবলে খেলেছেন। তিনি মধ্যমাঠে দলের মূল প্রতিরক্ষায় খেলতে পারদর্শী। ১৯৮২সালে, মাবুট টোটেনহাম হট্সপার ক্লাবে যোগ দিয়ে খেলেছেন ১৯৯৮সাল অবদি টানা ১৬ বছর।
এ সময়ে ১১বছর খেলেছেন ক্লাবের কেপটেন হয়ে। 
তেজী এই মানুষটি তার খেলুড়ে জীবনের প্রথম ৫বছরেই অর্জন করেন ১৬ কেপ্স। অর্থাৎ এ সময়ের মধ্যেই তিনি ১৬দফা আন্তর্জাতিক খেলার মাঠে নামেন ইংলণ্ডের হয়ে। ১৯৯৩ সালে খেলতে গিয়ে তার মাথার খুলিতে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমের খেলার প্রথম দিনই নন্দিত এই খেলুড়ের পা ভেঙ্গে যায়। এর পরের বছরই তিনি খেলা থেকে অবসর নেন।
বিবিসি টেলিভিশনের ‘ব্লু পিটার’ অনুষ্ঠানে শিশুদের জন্য মাবুট হাজিরা দিতেন। ২০১০সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের চূড়ান্ত খেলার একজন ‘ambassador’ এর দায়ীত্ব পালন করেন মাবুট। আমোস ট্রাষ্ট্রের পক্ষে তাদের প্রতিনিধি হয়ে মাবুট বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকার দুরবানে পথ শিশুদের ফুটবল খেলায় আকৃষ্ট করার স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করে যাচ্ছেন।
খেলুড়ে মাবুট বর্তমানে টোটেন হাম হট্সপার’, ইংলিশ ফুটবল এসোসিয়েশন এবং প্রিন্সেস ট্রাষ্টের ‘এমবাসাডর’ হিসেবে দায়ীত্ব পালন করে যাচ্ছেন; একই সাথে ‘ডায়েবিটিক ইউকে’এর একজন পৃষ্ঠপোষক।
বিশ্ব নন্দিত এই খেলুড়ে আমার জন্ম দিনে, যখন মহামারীর টীকা নেয়ার জন্য বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি ফোন করে বসেন আমাকে। অবাক, আমিতো চিনিই না। পরে আমার ছেলে বুঝিয়ে দিয়ে পরিচয় দিল মানুষটার। তিনি আমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন। আর আশীর্বাদ চাইলেন! জানালেন, এদিন তিনি বৃটেনের ২০০০ সত্তোরোর্ধ মানুষকে টেলিফোনে তাদের শুভ জন্মদিন বলেছেন। এটি তার এক আন্তরিক ইচ্ছা!
ধনীদেশের আরামি মানুষের চিন্তা-ভাবনাই ভিন্ন। তবে মাবুট অসুস্থতায় সময় কাটাচ্ছেন। হয়তো তাই বেছে নিয়েছেন এরকম একটি কাজ। মনে মনে হয়তো তিনি এসকল মানুষের কাছ থেকে আশীর্বাদ চান সুস্থ হয়ে উঠার। নিজের মন থেকে বলেছি আমি তাকে আমার প্রার্থনায় রাখবো।
মুক্তিযুদ্ধে শরিক হওয়া ছাড়া গর্বের তেমন কোনো কাজ জীবনে কিছু আছে বলে আমারই মনে হয়না। গুণীজনের আশীর্বাদ আসবে কোত্থেকে! জীবনের এমন বিপর্যস্ত অর্জনহীন অবস্থায় খেলুড়ে মাবুট’এর দূরালাপনী শুভেচ্ছাকে আমার কাছে এক স্বর্গীয় আশীর্বাদ বলেই মনে হলো। মনে হলো এ যেনো জীবনে নতুন দিগন্তের এক দ্বারোন্মোচন! এ মূহুর্তে ভীষণভাবে মনে পড়ছে কবিগুরুর সেই মহান ছন্দটি-“হে অতীত তুমি ভুবনে ভুবনে, কাজ করে যাও গোপনে গোপনে…”। কিছুই জানিনা, এ সৃষ্টি শক্তির কোন ইংগীত!

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT