হারুনূর রশীদ।। নারীবাদী লেখক রাজনীতিক ডাঃ তসলিমা নাসরিন ‘No to violence against women’ ছাপ লাগানো গেঞ্জি পড়ে ছবি তোলে তার টুইটারে টুইট করে লিখেছেন-“Tshirts speak”। তসলিমা নারীদের বিভিন্ন বিষয় নিয়েই লেখা-লেখি শুরু করেছিলেন সেই আশির দশকের বেশ আগ থেকেই। নব্বুইয়ের দশকে তসলিমা তার নারীবাদী লেখা-লেখির মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী লেখা-লেখি জগতের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হন।
তসলিমা সকল ধর্মের নারীদ্বেষী বিভিন্ন বক্তব্যকে বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের নারী বিষয়ক বিভিন্ন কথাকে নিয়ে একসময় খুব সোচ্চার হয়ে উঠেন এবং তার বিভিন্ন পুস্তকে লেখার ভেতর দিয়ে তার মত প্রকাশ করেন। এতে করে বাংলাদেশের ধর্মোন্মাদ মৌলবাদী গুষ্ঠীর কোপানলে পড়ে ১৯৯৪ সালের দিকে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। তারপর শুরু হয় তার দীর্ঘ সময়ের নির্বাস জীবন। তার পক্ষে লেখার যেমন অনেককিছু আছে আবার কেউ চাইলে তার বিরুদ্ধেও লিখতে পারবে।
মনীষী কার্ল মার্কস বলেছিলেন দুনিয়াটা দ্বান্দ্বিক। বস্তু জগতের সবকিছুতেই দু’টো শক্তি ক্রীয়াশীল। হ্যাঁ বাচক ও না বাচক। সে বিচার থেকে প্রাণী জগতের একজন হিসেবে তসলিমার যেমন হ্যাঁ বাচক অনেক কিছুই আছে আবার চাইলে নেতিবাচক বহুকিছু আবিষ্কার করা যাবে। কিন্তু বড় করে দেখতে গেলে দেখতে হবে যে, বাংলাদেশে নারীদের বিভিন্নধর্মী সামাজিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে ও মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলতে গিয়েই তাকে দেশান্তরী হতে হয় এবং এখনও তিনি নির্বাসিত জীবনেই বসবাস করছেন। তিনি মানবাধিকারের বিষয়েও লিখেছেন প্রচুর এবং এ নিয়ে এখনও নিবিড়ভাবে কাজ করছেন। তারই সূত্র ধরেই তার সর্বশেষ টুইট ‘No to violence against women’।
তসলিমার সেই টুইটকে নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে অনেকেই লিখেছেন। পক্ষেই বেশী। তবে একজন রিয়া লিখেছেন-‘আপনি জাস্ট ফেমিনিজম শব্দটার মোহে পড়ে গেছেন।’ তসলিমার পক্ষে বলার কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে আমাদের সামান্য লেখা নয়। নারীবাদ, নারীদ্বেষ, মানবাধিকার এসব মৌলিক বিষয়কে বিবেচনায় আনলে তসলিমাকে সমর্থন করতে হয়। সেখানে তিনি মোহে আছেন না-কি নির্মোহ সেটি পরের বিষয়। আমরা তার ‘No to violence against women’ ধ্বনির পক্ষেই সুর মিলিয়ে বলতে চাই-‘কোন মানবীর বিরুদ্ধে কথা মানেই মানবতার বিরুদ্ধে কথা’। এ কর্মে তিনি যে ই হোন না কেনো।