তুরাবের পরিবারের সাথে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে যোগাযোগ
সাংবাদিক তুরাব হত্যার মামলা নিচ্ছে না পুলিশ
পরিবারের পক্ষ থেকে বিচার দাবী
সিলেটে পুলিশের গুলিতে নিহত দৈনিক জালালাবাদ এর ষ্টাফ রিপোর্টার এবং দৈনিক নয়া দিগন্তের সিলেট প্রতিনিধি, এটিএম তুরাব হত্যাকান্ডের ন্যায্য বিচার দাবী করেছেন ব্রিটেনে অবস্থানরত নিহতের পরিবার ও স্বজনরা।
২৬ জুলাই শুক্রবার সন্ধ্যায় লন্ডনবাংলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, এটিএম তুরাব হত্যাকান্ডের মামলা নিচ্ছে না পুলিশ। তবে এটিএম তুরাবের পরিবারের সাথে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, নিহত এটিএম তুরাবের বড় ভাই ফ্রান্স প্রবাসী আবুল কালাম মোহাম্মদ শরিফ। গত ১৯শে জুলাই এটিএম তুরাব যখন পুলিশের গুলিতে নিহত হন তখন বড় ভাই শরিফ লন্ডন থেকে ট্রেনে ছড়ে ফ্রান্স যাচ্ছিলেন। ফ্রান্সে পৌঁছার পরপরই বন্ধু-বান্ধবরা তাকে ছোট ভাই তুরাব হত্যার খবর জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, গত ১৪ই জুলাই, দৈনিক জালালাবাদে চিনি চোরাচালান নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের কারণেই গত ১৯ জুলাই দায়িত্ব পালন কালে বন্দরবাজারে পুলিশ সরাসরি তুরাবকে ল্যক্ষ করে গুলি করে থাকতে পারে। প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন লন্ডনে অবস্থানরত দৈনিক জালালাবাদ সম্পাদক মুকতাবিস উন নুর। যার হাত ধরে সাংবাদিকতা শুরু করেছিলেন এটিএম তুরাব। জালালাবাদ সম্পাদক বলেন, ডিসি থেকে শুরু করে সিলেটের সব পুলিশ অফিসার ৩৩ বছর বয়সী অনুসন্ধানী রিপোর্টার এটিএম তুরাবকে ব্যক্তিগতভাবে জানেন এবং চেনেন। ঘটনার দিন বিক্ষোভ সমাবেশের ছবি ও সংবাদ সংগ্রহের সময় এটিএম তুরাবের গায়ে ও মাথায় প্রেস লেখা জ্যাকেট ও হ্যামলেট ছিল। এটা দেখেও পুলিশ কিভাবে গুলি করতে পারল? এমন প্রশ্ন রেখে দৈনিক জালালাবাদ সম্পাদক বলেন, গত বছর অভিবাসী নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের কারণে বাংলাদেশে সেরা অনুসন্ধানী রিপোর্টার হিসেবে পুরস্কার পেয়েছিলেন এটিএম তুরাব। গত ১৪ জুলাই, চিনি চোরাচালান নিয়েও তার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি বেশ সাড়া জাগিয়েছিল।
এটিএম তোরাব যেদিন নিহত হন। সেদিন তার বিয়ের দুমাস পুর্ন হয়। স্ত্রী থাকেন লিভারপুলে। নিহত এটিএম তুরাবের বাবা বিয়ানীবাজার প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং বিয়ানীবাজার পিএসজি স্কুলের শিক্ষক মরহুম মাস্টার আব্দুর রহীম। এটিএম তুরাবরা তিন ভাই এবং এক বোন। ভাইদের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তুরাব।
সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন লন্ডনে অবস্থানরত নিহত এটিএম তুরাবের মামা হাসান ইসলাম এবং ওয়াহিদুল ইসলাম। দু:খের সাথে জানালেন, দেশে গেলে সর্বদা এটিএম তুরাব তাদের সময় দিতেন। এমনকি সর্বদা টেলিফোনে ভাগ্নের সাথে কথাবার্তা হত। প্রেস লেখা জ্যাকেট পরনে মাথায় প্রেস লেখা হ্যামলেট। তারপরেও পুলিশ কিভাবে একজন সংবাদ কর্মীর উপর গুলি চালাতে পারে, এর উত্তর তারা খুঁজে পান না। তারা মনে করেন, তাদের ভাগ্নে এটিএম তুরাব হত্যাকান্ডের শিকার। তারা এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দেখতে চান।