পাগলা কুকুরের আক্রমণে শিশুসহ আহত ৩২
শ্রীমঙ্গলে একটি পাগলা কুকুরের আক্রমণে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আহত হয়েছে শিশু ও বৃদ্ধসহ ৩২ জন। এ পর্যন্ত ২৯ জন শ্রীমঙ্গল সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। কুকুরের আক্রমণের শিকার আড়াই বছরের শিশু থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধ রয়েছেন। তাদের পা, হাত, মুখসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম হয়েছে কুকুরের কামড়ে।
রবিবার (৯ জুন) বিকাল পর্যন্ত শ্রীমঙ্গল শহর ও শহরতলী ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় একাধিক পাগলা কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। পাগলা কুকুরকে আটক করতে শহরে তল্লাশি চালাচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। কুকুর থেকে সাবধান হতে মাইকিংও করা হচ্ছে। কুকুরের কামড়ে আহত হওয়া একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে তারা জানান, রাস্তার মধ্যে হেঁটে যাওয়ার সময় হঠাৎই একটি কুকুর তাদের হাত, পাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কামড় বসিয়ে দেয়। কুকুরের মুখ দিয়ে লালা ঝরছিল। বিভিন্ন এলাকায় একাধিক কুকুরের অবস্থান ।
কুকুরের কামড়ে আহত হওয়া ১০ বছরের শিশু রুহিত মিয়া জানায়, সে শুক্রবার সন্ধ্যার পর বাসা থেকে বের হয়ে মৌলভীবাজার রোডের একটি দোকানে পেনসিল কিনতে এসে হঠাৎ কুকুরের সামনে পড়ে। কোনো কিছু বোঝার আগেই কুকুরটি দৌড়ে এসে তার হাতে কামড় বসায়। তখন কোনোরকমে কুকুরকে শরীর থেকে সরিয়ে দৌড়ে এসে রেহাই পায়।
হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও ওয়ার্ড বয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল হাসপাতাল করুণ অবস্থার সৃষ্টি হয়। একসঙ্গে অনেকগুলো কুকুরের কামড়ে আহত রোগী এসে ভীড় করে। কুকুর যেভাবে কামড় বসিয়েছে, কারও মুখ, কারো হাত ও পায়ের মাংস বেরিয়ে এসেছে।
পথচারীকে কামড়ে ধরেছে কুকুর। ছবি: ইকবাল |
এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. সুচিশ্রী সাহা বলেন, গত দুই দিনে কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে আমাদের হাসপাতালে মোট ২৯ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে একজনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও তিনজনকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের আমরা এখানেই চিকিৎসা দিয়েছি। আমরা প্রতিটি রোগীকে ভ্যাকসিন ও অন্যান্য ওষুধ দিয়েছি। তাদের মধ্যে জয়শ্রী সূত্রধর নামের আড়াই বছরের শিশু ছিল। তার অবস্থা খারাপ থাকা উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। গুরুতর আরও দুজনকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে এ পর্যন্ত কুকুরের কামড়ের রোগীরা হাসপাতালে আসা শুরু করেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কুকুরের কামড়ে আহত ব্যক্তিরা শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা ও ভ্যাকসিন নিয়েছেন। ভয়ের কিছু নেই, পর্যাপ্ত পরিমাণ ভ্যাকসিন মজুত আছে।
তবে বেওয়ারিশ কুকুরকে জলাতঙ্ক রোধে প্রতিষেধক টিকা দেওয়ার বিষয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কর্ণ চন্দ্র মল্লিক জানান, প্রতিষেধক টিকা বরাদ্দ না থাকায় আমাদের কার্যক্রম চালাতে পারছি না। তিনি বলেন, একটি কুকুরই সবাইকে কামড় দিচ্ছে। সম্ভবত কুকুরটি পাগল হয়ে গেছে। শহরে কুকুরটি থেকে সাবধানে থাকার জন্য ইতোমধ্যে সবাইকে সচেতন থাকার জন্য অনুরোধ করে মাইকিং করা হয়েছে।