শাহরিয়ার কবিরের মুক্তি
দাবি করেছেন মানবাধিকার কর্মীগন
৩ ডিসেম্বর পূর্ব লন্ডনের একটি ভেন্যুতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ ও কর্মীরা সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী শাহরিয়ার কবিরের অবিলম্বে মুক্তির আহ্বান জানান। ইউরোপীয় বাংলাদেশ ফোরাম আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বক্তারা তার গ্রেফতার এবং বাংলাদেশে মানবাধিকারের অবস্থা সম্পর্কে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাবেক সিনিয়র গবেষক এবং এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রভাষক আব্বাস ফয়েজ মূল বক্তব্য রাখেন। শাহরিয়ার কবিরের মামলা সম্পর্কে আবেগের সাথে কথা বলতে গিয়ে, আব্বাস ফয়েজ সমালোচনামূলক মতামত প্রকাশের জন্য আইনি নিপীড়নের মুখোমুখি হওয়ার সাংবাদিকের দীর্ঘ ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন যে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর আগে ২০০১ সালে কবিরকে “বিবেকের বন্দী” হিসাবে ঘোষণা করেছিল আটক হওয়ার পর।
আব্বাস ফয়েজ জোর দিয়ে বলেন যে শাহরিয়ার কবিরের বর্তমান গ্রেপ্তার মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে হয়েছে বলে মনে হচ্ছে, সম্ভবত জামাত-ই-ইসলামী সহ রাজনৈতিক দলগুলি সম্পর্কে তার সমালোচনামূলক লেখা থেকে উদ্ভূত। বক্তা মত প্রকাশের স্বাধীনতার মৌলিক গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে আব্বাস ফয়েজ বলেন যে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন এবং বাংলাদেশের সংবিধান নিপীড়নের ভয় ছাড়াই ব্যক্তিদের মতামত প্রকাশের অধিকারকে রক্ষা করে।
সংবাদ সম্মেলনটি শাহরিয়ার কবিরের আদালতে উপস্থিতির সময় সহিংসতার বিরক্তিকর প্রতিবেদনের প্রতিও দৃষ্টি আকর্ষণ করে আব্বাস ফয়েজ বেআইনি বলে নিন্দা করেন এবং অবিলম্বে এর তদন্তের প্রয়োজন ছিল বলে উল্ল্যেখ করেন। তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে চার দফা সুপারিশ পেশ করেন: শাহরিয়ার কবিরকে জরুরী চিকিৎসা প্রদান করুন, কোর্টে হামলার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনুন, বানোয়াট অভিযোগ প্রত্যাহার করুন এবং একাধিক অভিযোগ একত্রিত করে একটি ন্যায্য আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করুন।
সেক্যুলার বাংলাদেশ মুভমেন্টের পুষ্পিতা গুপ্তা, আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মুক্তিযোদ্ধা এম এ হাদি, কূটনৈতিক সংবাদদাতা ডানকান বার্টলেট, ব্যারিস্টার তানিয়া আমির এবং রেডব্রিজের সাবেক মেয়র রায় এমমেট সহ অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেন ও শাহরিয়ার কবিরের প্রতি তাদের একাত্মতা প্রকাশ করেন । কনফারেন্সটি বাংলাদেশের সাংবাদিক এবং মানবাধিকার রক্ষক যারা তাদের চলমান চ্যালেঞ্জগুলিকে তুলে ধরে।
বাংলাদেশের বিদেশী বন্ধু ব্যরিষ্টার নোরা শরীফের মৃত্যু বার্ষিকীতে
স্মরণ সভা ও মিলাদানুষ্ঠান
আগরতলা ষঢ়যন্ত্র মামলা থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তিতে বিভিন্ন ক্রান্তি কালে বাংলাদেশের পাশে দাড়ানো অকৃত্রিম বিদেশী বন্ধু ব্যারিস্টার নোরা শরিফের মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর অবদানকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করলেন ব্রিটিশ বাঙ্গালীরা।
গেল ২৯শে নভেম্বর ২০২৪ পুর্ব লন্ডনের মাইক্রো বিজনেস সেন্টারে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙ্গালীদের পাশে দাড়ানো বিদেশী বন্ধু আইরিশ নাগরিক জাতীয় পদক প্রাপ্ত প্রয়াত নোরা শরীফ এর স্মরণে নোরা শরীফ ফাউন্ডেশন ইউকে এর উদ্যোগে স্মরনসভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
স্মরণ সভায় বক্তারা বলেন ব্যরিষ্টার নোরা শরীফ বাঙ্গালী না হলেও বাংলাদেশকে অন্তরে ধারন করতেন। তাই মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে আমৃত্যু বাঙ্গালী এবং বাংলাদেশের পাশে ছিলেন। আমরা তার অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।
সংগঠনের সভাপতি আব্দুল আহাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও জামাল আহমদ খান, জোবায়ের আহমদ এবং সরোয়ার কবিরের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্টিত স্মরন সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সদ্যসাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিজুর রহমান ফারুক।
এছাড়াও স্মরণ সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নঈম উদ্দিন রিয়াজ, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সদ্যসাবেক কাউন্সিলার আজাদর রহমান আজাদ, লন্ডন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুর রহমান মোজাহিদ, হিউম্যান রাইটস কমিশন ইউকে‘র এর সিনিয়র সহসভাপতি আনসার মোহাম্মদ উল্লাহ। মিলাদ ও দোয়ার অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মুফতি মৌলানা সৈয়দ মোহাম্মদ আলী।
স্মরন সভায় আরো বক্তব্য রাখেন আন্জুমান আরা আঞ্জু, ইয়াসমিন পলিন, আাঁখি প্রমুখ।
রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পি শামা রহমানের সম্মানে
সুধি সমাবেশ
স্বনামখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ও শিক্ষাবিদ শামা রহমানের লন্ডন আগমন উপলক্ষে বার্কিং এন্ড ড্যাগেনহ্যাম কাউন্সিলের ব্রিটিশ বাংলাদেশী মেয়র মঈন কাদরী শিল্পির সম্মানে ২ নভেম্বর বিকেল চারটায় বার্কিং টাউন হলের মেয়র পার্লারে এক চা-চক্র ও সুধি সমাবেশের আয়োজন করেন। এতে কাউন্সিলার ছাড়াও সাংবাদিক-আবৃত্তিকার সহ লন্ডনের বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীর বিশিষ্ট জনেরা অংশ নেন।
স্বাগত বক্তব্যে মেয়র মঈন কাদরি শিল্পি শামা রহমানের পরিচয় ও তাঁর কর্মের বিবরন দিতে গিয়ে বলেন শামা রহমান রবীন্দ্রসংগীতের একজন আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি। তার কণ্ঠে রবীন্দ্র সঙ্গীত বিশ্বের সঙ্গীতপ্রেমীদের মোহিত করেছে, বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সিঙ্গাপুর এবং যুক্তরাষ্ট্রে। তিনি একজন ক্লাসিক্যাল রবীন্দ্রসংগীতের প্রশিক্ষিত শিল্পি। তার মধুর কণ্ঠ শ্রোতাদের বিশ্ব কবির কবিতা ও দর্শনের সাথে গভীর সম্পর্ক স্থাপন করে।
উল্লেখ্য যে শিল্পী শামা রহমান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি লিডার ও বাংলাদেশ আওয়ামীলগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দা সাজিদা চৌধুরীর একমাত্র কন্যা। শিল্পী শামা রহমান ইউনেস্কোতে একক সংগীত পরিবেশন ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্বব্যাপী কনসার্টে অংশগ্রহণ তার কর্মজীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা।
মেয়র পার্লারে কাউন্সিলারবৃন্দ, কাউন্সিলের কর্মকর্তা কর্মচারী এবং লন্ডনের ব্রিটিশ বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীর কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক , রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী ও সুশীল সমাজের সরব উপস্থিতিতে শামা রহমান সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এতে এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বিশিষ্ট জনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান গৌস সুলতান, সাংবাদিক আজিজুল আম্বিয়া , সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব স্মৃতি আজাদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কিটন শিকদার, আশরাফুল হক রানা, মীর আব্দুর রহমান সহ আরো অনেকে। শামা রহমান, মেয়র পার্লারে এনে তাঁকে সম্মানীত করার জন্যে মেয়র ও সুধীজনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।