মুক্তকথা প্রতিবেদন।। নতুন মালিকের দ্বারা কর্মচারী ও খদ্দেরদের প্রতি নির্মম অবজ্ঞার এক হৃদয়ষ্পর্শী অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে এই বলে যে নতুন এই মালিকপক্ষ কোন পূর্ব অবগতির কোন ব্যবস্থা না করেই একেবারে হঠাৎ করেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছেন। যা বৃটেনের কোন আইনে নেই। গণতন্ত্রের সূতিকাগার বলে খ্যাত এই বৃটেনে যে কেউ নিজের সুবিধেমত অনেক কিছুই করতে পারেন না। বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত প্রথা ও নিয়ম মেনেই তাকে ব্যক্তি স্বাধীনতা ভোগ করতে হবে। অন্যে ক্ষতি হতে পারে এমন কিছু ইচ্ছে হলেই কেউ করতে পারেন না। সে ব্যক্তি হোক কিংবা কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হোক।
অত্যাধুনিক সভ্যতার খোলাবাজারী ব্যবসা ও দুনিয়াজোড়া গণতান্ত্রিক খ্যাতির এই দেশে তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছে গত সপ্তাহে “কনস্টিটিউশন” নামের একটি পাবঘর বা সুরিখানার ব্যবসাকে কেন্দ্র করে। এমন অগণতান্ত্রিক, স্বেচ্ছাচারি বে-আইনী ঘটনার হৃদয়স্পর্শী বিবরণ দিয়ে লিখেছে স্থানীয় প্রভাবশালী সংবাদপত্র “কেমডেন জার্নাল”।
৩৪বছরের পুরোনো কর্মচারী মেরী ফিলিপের উদৃতি দিয়ে পত্রিকাটি লিখেছে যে, ঘটনার দিন আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে “ইয়ঙ্গ” নামের একটি ব্যবসা কোম্পানীর মানুষজন “কনস্টিটিউশন” ‘পাব-ঘর’এ আসে এবং ‘পাব’ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে সকল কর্মচারীদের তাৎক্ষনিক বের হয়ে চলে যাবার নির্দেশ দেয়। ঘটনার স্বেচ্ছাচারী নমুনা ও আকষ্মিকতায় পুরো পাবঘরের কর্মচারী ও খদ্দের সকলেরই আকাশ থেকে পড়ার অবস্থা। কর্মচারী মেরী ফিলিপ মন্তব্য করেন এই বলে যে, ঘটনাটি মর্যাদাহানীকর ও লজ্জাজনক! অবস্থায় আমাদের মনে হয়েছে এটি নির্ঘাত একটি যুগের পরিবর্তন।
“কনস্টিটিউশন” পাবঘরের নানাবিদ সুবিধা ও ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির বর্ণনা দিয়ে ৪০ বছরের পুরোনো খদ্দের জন মারফি বলেন, দক্ষিন লণ্ডনের এই মাপের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান “ইয়ঙ্গ” এর এমন ব্যবহার আমাদের জন্য একটি কান্না আসার মত লজ্জা। স্থানীয় সুরাপানকারীদের প্রতি “ইয়ঙ্ক” ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের এ আচরণ নির্মম অবজ্ঞাপ্রসূত যা ক্ষমার অযোগ্য। “কনষ্টিটিউশন” পাবঘরে কর্মরত আমাদের বন্ধু-বান্ধবদের সাথে তাদের অব্যবসায়িক দূর্ব্যবহার ও ব্যবসা থেকে উচ্ছেদের মত এমন আচরণের পর “ইয়ঙ্গ” এর কোন ব্যবসায়ই আমাদের মত স্থায়ী গ্রাহক কোনদিনই পা রাখবে না।
পক্ষান্তরে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান “ইয়ঙ্ক”এর একজন মুখপাত্র জানান যে তারা “পাবঘর” খানা খরিদ করতে পেরে খুবই খুশী। আগামী ৫মাসের মধ্যে পাবঘরের সংস্কার শেষ করতে চান যাতে আগামী গ্রীষ্মের আগেই তারা পুনরায় পাবঘরের ব্যবসাটি খুলতে পারেন। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সংস্কার কাজের জন্য কর্মচারীদের উপর প্রভাব পড়েছে। নতুন করে ব্যবসা খোলার সময় পুরাতন কর্মচারীদের কাজের দরখাস্তের জন্য আমরা উৎসাহিত করবো।
স্থানীয় কতিপয়ের মন্তব্য ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার সূচনালগ্নে ছোট একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আচরণ, কর্মচারী ও সাধারণ মানুষের প্রতি যদি এমন হয় তা’হলে বড় বড় প্রতিষ্ঠান যে কি লঙ্কাকাণ্ডই ঘটাচ্ছে তা-কি আর সকলে জানতে পারছে? সিলেটের কথ্যভাষায় একটি প্রবাদ আছে যার অর্থ দাড়ায় “বায়ূনিঃসরণের দূর্গন্ধ থেকে পেট ফাঁপার মাত্রা অনুমান করা যায়।” ব্রেক্সিটের পরিণতি এমন না হলেই সাধারণ মানুষ খুশী।