মুক্তকথা নিবন্ধ।। গেল মে মাসে বৃটেনের ‘জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা’(NHS) খাতের বয়স ৭১বছর পুরো হয়েছে। শ্রমিক দল সৃষ্ট এই সেবাখাতটি এ পর্যন্ত ৫কোটি ৪০লাখ মানব শিশুকে এ সুন্দর পৃথিবীর মুখ দেখিয়েছে। শ্রমিক দলীয় ছায়া সরকারের স্বাস্থ্য সচিব জনাথন এসওয়ার্থ এর হাসপাতাল জন্ম নম্বর ২কোটী ১৩ লাখ ৭৩হাজার ৫৪২। যেহেতু বর্তমান নমুনার ‘জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা’(NHS) খাতের স্রষ্টা শ্রমিক দল ফলে রক্ষণশীলরা দীর্ঘকাল ধরে মরিয়া হয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে মহামূল্যবান স্বাস্থ্য সেবার এ খাতটিকে ব্যবসার ভিত্তিতে বাজারে বিক্রিকরে দিতে। পাশাপাশি শ্রমিকদলও পিছু ছাড়তে নারাজ। তাদের শতবর্ষের বিরামহীন শ্রমের ফসল এই ‘এনএইচএস’ কে কোন অবস্থায়ই তারা ব্যক্তিমালিকানায় বাজারে ব্যবসার জন্য কোনভাবেই ছেড়ে দিতে রাজী নয়। সত্যিকার অর্থে বৃটেনের ‘এনএইচএস’ দেশের শ্রমিকদলের রাজনীতির একটি ইতিবাচক মাইলফলক। শ্রমিকদল তাদের সুদীর্ঘ রাজনীতির ইতিহাসে দেশের মানুষের কল্যাণে যে কয়টি উল্লেখযোগ্য কাজ করেছে তার মধ্যে এই ‘জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা’ একটি অনন্য অবদান। এ স্বাস্থ্যসেবার কারণে আজও বৃটেন একটি সেবাধর্মী দেশ একটি কল্যাণরাষ্ট্র যা আজও এ বিশ্বের এক মহাবিস্ময়। এমন পদ্বতির প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে গিয়ে শ্রমিকদলকে অতীতে অনেক নমুনায় বহু আপোষ করতে হয়েছে বহু ছাড় দিতে হয়েছে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে মানুষের মহামূল্যবান জীবনের নিচ্ছিদ্র-নির্মোহ-নির্লোভ নিরাপত্তাসহ জনকল্যাণমুখী বহু কাজের মধ্য দিয়ে আজ সুপ্রতিষ্ঠিত বৃটেনের ‘জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা’ বা এনএইচএস। শ্রমিকদল প্রতিষ্ঠিত আজকের এনএইচএস রক্ষণশীলদের রাজনীতিতে পায়ে ফোঁটা এক কাঁটার মত হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই তারা ‘ব্রেক্সিট’ এর আড়ালে ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে এসে ঐতিহাসিক এই ‘স্বাস্থ্যসেবা’কে ব্যবসার ভিত্তিতে বাজারে বিক্রি করে দেয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এক বছরের মাঝে প্রায় দুবার মিঃ ট্রাম্প বৃটেন সফর করেছেন। অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ অনেকের মতে ট্রাম্প চাপ দিচ্ছেন ‘স্বাস্থ্যসেবা’ খাতকে বাণিজ্যিকভাবে তার আমেরিকার মত ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিতে। এতে সরকারের উপর থেকে চাপ অনেকাংশে কমবে। মিঃ ট্রাম্প যে নমুনায় যতই চেষ্টা করেন না কেনো বৃটেনের সাধারণ মানুষ তা বাস্তবায়িত হতে দেবে না কোনদিনই। শেষ পর্যন্ত মিঃ ট্রাম্প ও তার সহচরদের কপালে “হ্যা হোতষ্মি!” ছাড়া অবশিষ্ট আর কিছুই থাকবে না।