লণ্ডন।। কেইম্যান আইল্যান্ডসের গভর্নর, বৃটেনের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কূটনীতিক আনোয়ার চৌধুরীকে গভর্নরের দায়ীত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার কারণ জানা গেছে। খুব বেশীদিন হয়নি, এই গত মার্চমাসে তিনি কেইমেন আইলেণ্ডসের গভর্নরের দায়ীত্ব পেয়েছিলেন। কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণ ও উত্যক্ত করার বিভিন্ন অভিযোগে তাকে গুরুত্বপূর্ণ এ দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। বৃটেনের ‘দৈনিক মেইল’ এ তথ্য পরিবেশন করে সংবাদ প্রকাশ করেছে।
অভিযোগের বর্ণনা দিতে গিয়ে মেইল আরো লিখেছে, আনোয়ার চৌধুরী, অফিস ও বাসায় নিয়োজিত সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণের পাশাপাশি স্ত্রী ও শাশুড়ির সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করেছেন। গত ২৪শে জুন প্রকাশিত তাদের এক প্রতিবেদনে সংবাদপত্রটি উল্লেখ করে যে তিনি তার সরকারি ভবনে নিয়োজিত কর্মীদের সঙ্গে চিৎকার করে কথা বলেন এবং তাদের নানাভাবে ভয়-ভীতি দেখান। এক নারী কর্মীকে তিনি তার উদোম পিঠ মালিশ করে দিতে বলেছিলেন, যা তার কাছে ঠিক বলে মনে হয়নি। অবশ্য তাতে কোনো যৌন আবেদন ছিল না বলেও মেইল লিখেছে। মেইল আরো লিখেছে, তিনি তার শিশু কন্যাকে দেখভাল করার জন্য বাসার কর্মচারীদের বলেছিলেন কিন্তু যেহেতু শুধু বাসা পরিষ্কার করাই এদের দায়ীত্ব তাই তারা তার হুকুম তামিল করেনি। এছাড়াও ৫৯ বছর বয়সী আনোয়ার চৌধুরী তার ১৬ বছরের ছোট স্ত্রী মমিনার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছিলেন এবং মদ খাওয়া নিয়ে বৃদ্ধা শাশুড়ির সঙ্গে ঝগড়া করেছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ এ দায়ীত্ব পাবার পরই একের পর এক তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসতে থাকায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এই অভিযোগগুলির সুষ্ট নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে।
জনাব চৌধুরী ২০০৪ সালে বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের হাই কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন যা ছিল একজন বাঙ্গালী হিসেবে সকলের গৌরবের বিষয়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই তাকে হত্যার জন্য সিলেটের শাহজালাল(র:)এর মাজারে তার উপর বোমা আক্রমন হয়েছিল। সে বোমা আক্রমনে তিন’জন মানুষ নিহতও হয়েছিল এবং আনোয়ার চৌধুরীসহ প্রায় ৪০জনের মত আহত হয়েছিলেন। বোমা ঘটনার সাথে জড়িত হিসেবে এই কিছুদিন আগে আরো তিনজনের ফাঁসীও হয়েছে।
কেইম্যান আইল্যান্ডস হল বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম ব্যাংকিং সেন্টার যেখানে ২৭৯টি ব্যাংক রয়েছে এবং এরমধ্যে ২৬০টি আন্তর্জাতিক ব্যবসার জন্য অনুমোদিত। কেইমেন আইল্যান্ডসের আয়তন মাত্র ২৬৪ বর্গকিলোমিটার। এর রাজধানী জর্জটাউন। লোকসংখ্যা ৬০ হাজার। প্রশাসনিক কাঠামো অনুযায়ী, গভর্নরই এ দ্বীপের প্রধান। ব্রিটিশ সরকারের পরামর্শে রানি নিয়োগ দেন গভর্নরকে। আর গভর্নর দ্বীপের প্রশাসন চালাতে নিয়োগ দেন একজন প্রিমিয়ার ও একটি কেবিনেট। এই কেইম্যান আইল্যান্ডস পরিচিত বিশ্বের অন্যতম ফাইনানসিয়াল সেন্টার হিসেবে।