মুক্তকথা প্রতিবেদন।। এক সময়ের মুক্তবাজারের প্রবক্তা, ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, নব্ব্ই দশকের গোড়ার দিকে ভারতে উদার অর্থনীতি নামের মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু করার নেতা ৮৮ বছরের বর্ষীয়ান অর্থনীতিবিদ মনমোহন সিংহ’ মনে করেন, বিশ্বের চলমান মন্দা আরো গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী হতে যাচ্ছে। তিনি আরো মনে করেন, সাধারণ মানুষের জীবনের তাগিদ ও জীবিকা সুরক্ষিত করা এবং তারা যাতে নগদ টাকা খরচ করতে পারেন, সরাসরি নগদ অনুদানের মাধ্যমে তা সুনিশ্চিত করা সরকারের উচিত।’ আত্মনির্ভরতার নামে রক্ষণশীল হওয়া উচিত নয় বলেই তিনি মনে করেন। ভারতের প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার এমন একটি খবর প্রকাশ করেছে।
বর্ষীয়ান এই অর্থনীতিবিদ রাজনীতিক বিবিসি’র সাথে আলাপ করতে গিয়ে বলেছেন- “গত তিন দশকে ভারতের বাণিজ্যনীতিতে শুধু যে উচ্চবিত্ত শ্রেণির জন্য সুবিধা হয়েছে এমন নয়, বরং সমাজের সব স্তরের সাধারণ মানুষ তার সুবিধা পেয়েছেন।”
বর্ষীয়ান এ অর্থনীতিবিদের এ কথা দিয়ে প্রকারান্তরে তিনি অবশ্য স্বীকার করে নিলেন যে মুক্তবাজার অর্থনীতির কারণে ভারতে টাটা-বিরলাদের তালিকায় নতুন নতুন অম্বানীদের নামও যোগ হয়েছে। যাদের পকেটে এখন গোটা ভারতের সম্পদ কুক্ষিগত হয়ে উঠেছে। দিল্লী, মুম্বই কিংবা কলকাতার আগের ঘেঁটো ঘেঁটোই রয়ে গেছে।
এ নেতার ভারত শাসনের আমলেই বাংলাদেশেও মুক্তবাজার চালু হয়েছিল। মুক্তবাজার মৌলিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ফড়িয়া বা দালাল পুঁজির মালিক তৈরী করা ছাড়া আর কিছু্ই করতে পারেনি। জাতীয় পুঁজি গঠনের নামে কিছু কিছু ব্যবসা হাজার হাজার কোটী টাকা ব্যাংক ঋণের নামে লোপাট করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০১৮সালের হিসেব মতে(daily star 2018, 10August) ৯৩হাজার ৯১১কোটি টাকা অনাদায়ী ব্যাঙ্ক ঋণ। মুক্তবাজারের কৃপায় কি পরিমাণ সম্পদ যে এরা বিদেশে পাচার করেছে আমাদের মত সাধারণ মানুষের দ্বারা এর হিসেব বের করাই এক বিশাল যজ্ঞকাণ্ড! ক্ষুদ্র বুদ্ধী দিয়ে এটুকু বলা যায়, মুক্তবাজার এখন বাংলাদেশের গলার কাঁটা। এই মুক্তবাজার যখন চালু হয়, প্রয়াত রাজনীতিক সায়ফুর রহমান তখন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী ছিলেন।
হারুনূর রশীদ, সোমবার, ১০ অগষ্ট ২০২০