প্রকৌশলী সৈয়দ আব্দুল গফ্ফার, সিনিয়র সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কানাডা, তার একটি নির্বাচনী পর্যবেক্ষন পাঠিয়েছেন আমাদের কাছে। আমরা তার সেই পর্যবেক্ষন কোন সম্পাদনা ব্যতিরেখেই হুবহু এখানে পত্রস্ত করলাম। -সম্পাদক
প্রকৌশলী সৈয়দ আব্দুল গফ্ফার
মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ উপ-নির্বাচনের দিনক্ষন চূড়ান্ত হওয়ায় লবিং ও তদবিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। সম্ভাব্য প্রার্থীরা যে যার মতো ছুটছেন দলীয় মনোনয়ন পেতে। ভোটার, দলের নেতাকর্মী ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আর্কষণে চালাচ্ছেন নানা তদবির ও কৌশল। থেমে নেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রার্থীদের আগাম প্রচার-প্রচারণা। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রবীণ রাজনীতিবীদ, মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আজিজুর রহমান ১৮ আগষ্ট মৃত্যুবরণ করার ফলে আসনটি শুন্য হলে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ তফাদার রিজুয়ানা ইয়াসমিন সুমি অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান। বাংলদেশ নির্বাচন কমিশন ২০ অক্টোবর উপ-নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা চালালেও তারিখ ঘোষণার পর থেকে মাঠে সক্রিয় সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও। তবে দলীয় প্রার্থীর তালিকায় এগিয়ে রয়েছে আওয়ামীলীগ। অথচ যাদের জন্য এই নির্বাচনের আয়োজন সেই ভোটাররাই একেবারেই নিশ্চুপ। তবে কেউ কেউ যে প্রাপ্তি আসায় ঘুরছেন না অবশ্য একেবারেই তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
ইতিমধ্যে জানা গেল জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, আলহাজ মোঃ মিছবাহুর রহমান কেন্দ্র থেকে মনোনীত আওয়ামী লীগের(নৌকার) প্রার্থী।
আওয়মীলীগের ইচ্ছুক প্রার্থীর তালিকায় যাদের নাম শোনা যাচ্ছিল। তারা হচ্ছেন- ১। সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য, প্রয়াত সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলীর সহর্ধমিনী, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য সৈয়দা সায়েরা মহসীন, ২। মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, প্রবীণ আওয়ামলীগ নেতা ও জাতীয় পরিষদ সদস্য মোঃ ফিরুজ, ৩। কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক পুলিশের এআইজি বজলুল করিম, ৪। জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মুহিবুর রহমান তরফদার, ৫। যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি, গেল জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধীতাকারী সাবেক টাওয়ার হ্যালমেট(বৃটিশ) কাউন্সিলর ও আওয়ামীলীগ নেতা এম.এ. রহিম(সি.আই.পি). ৬। জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক ও ব্যবসায়ী আলহাজ মোঃ মিছবাহুর রহমান, ৭।জেলা যুবলীগের সভাপতি মোঃ নাহিদ আহমদ, ৮। জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও বিশিষ্ট সমাজসেবী সাইফুর রহমান বাবুল। মিছবাহুর রহমান দলের মনোনীত প্রার্থী হওয়ায় বাকীগন এখন কি করবেন এটাই এখন ভাবার বিষয়। দলের মনোনয়ন না পেলে অনেক প্রতিদ্বন্ধী অবশেষে নিজদলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্য-গোপন উভয় পথে কাজে নেমে পড়েন এমন অতীত অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে।
|
এদিকে, জেলার আরো কিছু আলোচিত ব্যক্তি, অন্যান্য দলও সতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন যাহা খুবই স্বাভাবিক। জেলা পরিষদ উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে ৮/১০ ইচ্ছুক প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক ব্যাপারে কিছু পর্যবেক্ষন উপস্থাপন করা হল। প্রথমত, দলীয় একাধিক প্রার্থীর ইচ্ছা প্রকাশ করা স্থানীয় নেতৃত্বের দূর্বলতা ও গ্রুপিং এর সুস্পষ্ট প্রকাশ। কেউ কেউ বলেন চাইতে অসুবিধা কি? চাইতে চাইতে একদিন পাইতে পারি! অর্থাৎ স্থানীয় নেতৃত্বের প্রতি কোন দৃঢ় আত্মবিশ্বাস নাই। নেতৃত্বের সর্ব উচ্চ পর্যায় থেকে দলের কাজ করার নির্দেশ প্রদান করা হয় সকলকেই, তার অর্থ কি নিজেই নির্বাচনে প্রার্থী হবার প্রচার করার কাজ? সবাই প্রচার করছে নিজ নিজ প্রার্থীতা, এটা কি দলের কাজ না-কি ব্যক্তি স্বার্থের কাজ? প্রার্থী চুরান্ত হওয়ার পুর্বে নিজেকে প্রার্থী ঘোষনা করা অনৈতিক, নেতৃবৃন্দের অবজ্ঞা করা এবং গ্রুপিং ও কোন্দলের জন্ম দেওয়া। সংগঠনের শক্তি ঐক্য, প্রশাসনের শক্তি বিভক্তি; বিভক্তি সংগঠনকে দুর্বল করে প্রশাসনকে করে শক্তিশালী। আমাদের দেশীয় প্রশাসন এখনও জঠিল আমলাতন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। মোটে, হাটি হাটি পা পা করে বৃটিশ আর পাকিস্তানী ভুতপ্রভুদের তন্ত্র-মন্ত্রিক চিন্তা-চেতনা থেকে বেড়িয়ে আসার সংগ্রামে রয়েছে। রাজনৈতিক সাংগঠনিক সাংস্কৃতিক এবং প্রশাসনিক বিষয় সম্পুর্ণ বিপরীত মুখী না হলেও একমুখী নয়। কোন একটি নির্বাচনের তফসীল ঘোষনার সাথে সাথে জনগনকে নির্বাচন মুখী করার দ্বায়ীত্ব প্রতিটি রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীর, নিজের প্রচার নয়।
এতো গেলো আওয়ামীলীগের দিক। এছাড়াও রয়েছেন নিজ এলাকার আলোচিত ব্যক্তিত্ব সাবেক এমপি, গেলো জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে(স্বতন্ত্র) প্রতিদ্বন্ধীতাকারী ও ঠিকানা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য এম এম শাহীন।
জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সমাজসেবী আলহাজ্ব সৈয়দ শাহাব উদ্দিন আহমদ। মৌলভীবাজার-১ আসন থেকে বিগত নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদে দুইবার প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী প্রার্থী কেন্দ্রীয় জাপা নেতা আহমেদ রিয়াজ।
উপ নির্বাচনে অংশগ্রহন করবেন বলে আরও যে নামগুলো শোনা যাচ্ছে তারা হলেন গেলো জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে(স্বতন্ত্র) প্রতিদ্বন্ধীতাকারী গণফোরামের সাবেক জেলা সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক বকশী ইকবাল আহমদ, বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও সাংবাদিক এম এ মোহিত, যুক্তরাজ্য কমিউনিটি নেতা ও আওয়ামীলীগের ধর্মবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য সোহেল আহমদ।
তবে বিএনপি, জামাত ও ইসলামী ঐক্যজোটসহ অন্যান্য সংগঠনের কাউকে প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাতে এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্যমতে মৌলভীবাজারের ৭টি উপজেলার ৬৭টি ইউনিয়ন, ৫টি পৌরসভা ও ৭টি উপজেলা মিলে ৯৪৩ জন নির্বাচকমন্ডলীর সদস্য বা ভোটার রয়েছেন। চেয়ারম্যান একজন, ১৫ জন সদস্য ও সংরক্ষিত আসনের পাঁচজন নারী সদস্য নিয়ে গঠিত জেলা পরিষদ। এমতাবস্থায় আওয়ামীলীগ প্রার্থী মিসবাউর রহমানই শেষ পর্যন্ত বিনাভোটে পাশ করে আসবেন কি-না তাই দেখার বিষয়।
প্রকৌশলী সৈয়দ আব্দুল গফ্ফার,
সিনিয়র সহ সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কানাডা, সদস্য ও কাউন্সিল সদস্য, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, আই,ই,বি(৮৫-৯৯ আহব্বায়ক/সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম প্রকৌশল মহাবিদ্যালয় বর্তমান চুয়েট(১৯৭৭-৮২)
সদস্য, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ(৭৪-৭৫)
সাংগঠনিক সম্পাদক, মৌলভীবাজার মহকুমা ছাত্রলীগ(৭২-৭৪)
|