মুক্তকথা সংবাদকক্ষ।। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশ আবারো নিজেদের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে যে মায়ানমার যেনো রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থীদের সম্মানজনকভাবে নিরাপদে ফিরিয়ে নেয় এবং সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেনো তাদের চাপ অব্যাহত রাখেন। মায়ানমারের উপর একটি অব্যাহত ও ধারাবাহিক আন্তর্জাতিক চাপ, তৎকর্তৃক বিশ্বের ঘৃণ্যতম গণহত্যার মাধ্যমে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়ের একটি দীর্ঘম্যাদি সমাধান আনতে অনুঘটকের কাজ করবে। যে বিপর্যয়ের ক্ষত সারাতে মায়ানমার বাংলাদেশকে বাধ্য করেছে।
গত মঙ্গলবার ১৩ই নভেম্বর ২০১৮ নয়া দিল্লীতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী এমন বক্তব্য রাখেন। নয়া দিল্লীতে তিনি কূটনীতিকদের এক সভায় বক্তব্য রাখছিলেন। হাইকমিশনার এ সময়, নয়া দিল্লীতে আবাসিক ৬০দেশের কূটনীতিক যারা বাংলাদেশের বিষয়েও নজর রাখেন, তাদেরকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের মায়ানমার কর্তৃক পুনর্গ্রহন ও পূনর্বাসনের বিষয়ে চলমান অবস্থা বুঝাচ্ছিলেন। ঘন্টাব্যাপী এ সভায় মায়ানমার কর্তৃক রোহিঙ্গা ফেরৎ নেয়া ও সম্মানজনক পূনর্বাসন কাজের উন্নতি ও অগ্রগতির বিষয়ে কূটনীতিকদের অবহিত করা হয়। একই সময় রোহিঙ্গা সমস্যা বিষয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৩য় কমিটিতে ও “মায়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থতি” নিয়ে ওআইসি বৈঠকে সহযোগীতা চাওয়া হয়।
হাইকমিশনার জানান, ইতিমধ্যেই ৯৯টি দেশ, আগামী ১৫ই নভেম্বর জাতিসংঘের ৩য় কমিটিতে খসড়া প্রস্তাবনা বিবেচনার জন্য যৌথপৃষ্ঠপোষকতায় কাজ করছে। গত বছর জাতিসংঘের ওই ৩য় কমিটিতে “মায়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের অবস্থা” বিষয়ে একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। এই প্রস্তাবনার পক্ষে ১৩৫টি দেশ ভোট দেন এবং ১০টি দেশ বিরুদ্ধে ভোট দেয়। ২৬টি দেশ ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে।
২০১৭ সালের ২৫শে আগষ্ট ৭লাখের উপরে রোহিঙ্গা নাগরীক অসহায়তের মত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় চায়। সৈয়দ মোয়াজ্জেম বলেন, এসব নিপীড়িত, নিগৃহীত নারী, পুরুষ ও শিশুদের মানবতার খাতিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে প্রবেশের সুযোগ দেন।
এখন এসব রোহিঙ্গা বাস্তুত্যাগীদের দেশে ফিরে যাবার সময় এসেছে। অবশ্যই একটি অব্যাহত ধারাবাহিক পুনর্বাসন প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে নিতে হবে মায়ানমারকে। আরো কিছু যোগ করে হাইকমিশনার বলেন, সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান নির্ভর করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রস্তাবিত ৩দফা সমাধানে যা তিনি গত বছর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব করেছিলেন। এই ৩দফার মূল কথা হচ্ছে, মায়ানমারকে অবশ্যই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কাজে ব্যবহৃত বিদ্বেষী আইন, নীতিমালা এবং অনুশীলন বন্ধ করতে হবে; আস্তা ও অধিকার রক্ষার মধ্য দিয়ে একটি সহায়ক পরিবেশ তৈরী করতে হবে এবং অবশ্যই রোহিঙ্গা বিরুধী নৃশংস বর্বরতার অবশান ঘটাতে হবে।
হাই কমিশনার জানান, বাংলাদেশ-মায়ানমারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির অধীনে ২০০০ রোহিঙ্গা আশ্রয় প্রার্থীর প্রথম দলটি এই বৃহস্পতিবারে নিজেদের ইচ্ছায় ফেরৎ যাবার প্রতিক্ষায় আছে বলে আশা করা যাচ্ছে।