লন্ডন: শিশুদের যৌনাঙ্গচ্ছেদের অপরাধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলা ডাক্তার। ৪৪ বছর বয়সী জুমানা নাগরওয়ালা ইংরেজি ও গুজরাতি ভাষায় চোস্ত। মিশিগানের লিভোনিয়ায় নিজের ক্লিনিকে এই কারবার চালাতেন তিনি। মূলত ৬ থেকে ৮ বছর বয়সী বালিকারাই সেখানে আসতো। শুধুমাত্র মিশিগান নয়, আমেরিকার অন্যান্য প্রদেশ থেকেও শিশুদের নিয়ে তাঁর ক্লিনিকে হাজির হতেন মানুষ।
অভিযোগ পেয়ে ডঃ নাগরওয়ালাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। ডেট্রয়েট যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালতে বিচার হবে তাঁর। মিশিগান বিচার বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সহকারী কেনেথ ব্ল্যাঙ্কো জানিয়েছেন, ‘কর্তব্যপরায়ণ ডাক্তার হিসেবে বেশ সুনাম ছিল নাগরওয়ালার। শিশুদের প্রতি তাঁর নিষ্ঠুর ব্যবহারের কথা জানতে পেরে শিউরে উঠেছেন স্থানীয় মানুষ। আমেরিকায় অপ্রাপ্তবয়স্কদের যৌনাঙ্গচ্ছেদ নিষিদ্ধ। মেয়েদের ওপর এ ধরণের শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।’ পূর্ব মিশিগানের আইনজীবী ড্যানিয়েল লেমিস্ক এই ঘটনাকে মহিলা ও বালিকাদের ওপর শারীরিক নির্যাতনের চরম উদাহরণ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, পৃথিবীর অন্য কোথাও কী প্রথা আছে জানি না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই ধরণের কাজ গুরুতর অপরাধ বলে গণ্য হয়। আধুনিক সমাজে এর কোনও জায়গা নেই। শিশুদের ওপর এভাবে অত্যাচার চালালে কড়া শাস্তি ভোগ করতে হবে।’ নাগরওয়ালার ফোনের রেকর্ড খতিয়ে দেখে এক দম্পতির খোঁজ পেয়েছে পুলিস। কিছুদিন আগে দুই কন্যা সন্তানকে নিয়ে নাগরওয়ালার ক্লিনিক থেকে ঘুরে গিয়েছিলেন তাঁরা। ওই দুই বালিকাকে জেরা করে অনেক তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তাদের মধ্যে একজন জানিয়েছে, বেড়াতে যাচ্ছি বলে তাদের মিশিগানে নিয়ে আসে বাবা–মা। হোটেলে পৌঁছে পেট ব্যথার বাহানায় তাদের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। আফ্রিকা, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে মেয়েদের যৌনাঙ্গচ্ছেদের প্রথা থাকলেও, অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের ওপর এই ধরণের অত্যাচার চালানো যাবে না বলে ১৯৯৬ সালে মার্কিন সেনেটে আইন পাশ হয়। এই ধরণের কাজে যুক্ত থাকলে ৫ বছর পর্যন্ত জেল হেপাজত হতে পারে বলে ঘোষণা করা হয়। তবে ওই আইনে বেশ কিছু গলদ রয়ে গিয়েছে। ৫০ টির মধ্যে দেশের ২৬টি প্রদেশে এখনও এই ধরণের ঘটনা অপরাধের তকমা পায়নি। মিশিগান তারমধ্যেই পড়ে। রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ১৯৯৭ সালের পর থেকে আমেরিকায় এই অপরাধ ঘটনা চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় ৫১৩,০০০ মহিলা এবং বালিকার যৌনাঙ্গচ্ছেদের ঝুঁকি রয়েছে। যৌনাঙ্গচ্ছেদের মাধ্যমে মহিলা ও বালিকাদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় বলে দাবি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু।’ -আজকাল থেকে