আব্দুল ওয়াদুদ।। চলমান করোনা ( কোভিড-১৯) পরিস্থিতিতে কর্মহীন শ্রমজীবী ও দুস্থ অসহায় মানুষের পাশে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে দাঁড়ালো কুলাউড়া বিএনপি। দেশ ও প্রবাসে থাকা বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা এই ত্রাণ কাজে আর্থিক সহায়তা করেন। সোমবার দুপুরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে কর্মহীন শ্রমজীবী ও দুস্থ মানুষের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। পুরো উপজেলার প্রকৃত কর্মহীন শ্রমজীবী ও দুস্থ মানুষের মধ্যে সামাজিক ও শারিরীক দূরত্ব বজায় রেখে এই খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন নেতাকর্মীরা।
কুলাউড়া শহরেরর কোল্ড ষ্টোরেজ এলাকায় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ পূর্বে টেলি কনফারেন্সে আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
টেলি কন্সফারেন্সে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ত্রাণ নিয়ে সরকার জনগনের সাথে প্রতারণা করছে। সুষ্ঠু ভাবে ত্রাণ বন্টন হচ্ছেনা। বর্তমান সংকটে দেশ ও পূরো জাতি ভয়াবহ হুমকির মধ্যে রয়েছে। উপযুক্ত সময়ে যে সঠিক প্রদক্ষেপ নেয়া উচিত ছিল সরকার তা নেয়নি। তারা সেচ্ছাচারিতা করছে। তিনি সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে সাধারণ মানুষের পাশে ঐক্যবদ্ধ ভাবে দাঁড়ানোর আহবান জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এডভোকেট আবেদ রাজা, কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সজলসহ যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ সংগঠনের সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন এবং উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের ৫ হাজার পরিবারের মধ্যে চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করা হয়। বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন,করোনার কারণে স্ব-শরীরে উপস্থিত না হতে পারলেও টেলিফোনে স্থানীয় জনসাধারণের কাছে শুভেচ্ছা ও সহায়তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেছেন। এর মধ্য দিয়েই করোনাযুদ্ধে তিনি সবার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। নেতাকর্মীরা দুর্যোগ সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানান।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো: আল-আমিনের নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা শাখার পুলিশ ফোর্সের সহযোগিতায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর হাট বাজার ও দোকানে মনিটরিং ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। গতকাল সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের কুসুমবাগ পয়েন্ট, কুদরত উল্ল্যা রোড, সেন্ট্রাল রোড, সাইফুর রহমান রোড, পশ্চিমবাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় তদারকি করা হয়। খুচরা ব্যবসায়ীদের ক্রয় ভাউচারের সাথে বিক্রয়মূল্য যাচাই করা হয়।
অনেক মানুষের আয় কম এবং অনেকের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে উল্যেখ করে ব্যবসায়ীদেরকে সর্বনিম্ন লাভে বিক্রয় করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। ওই অভিযানে টিসিবি কর্তৃক ন্যায্য মূল্যে পণ্য সামগ্রী তেল, চিনি, ডাল, পেঁয়াজ বিক্রির কাজে নিয়োজিত ট্রাক ডিলারের কার্যক্রমও তদারকি করা হয়। ওই তদারকি অভিযানে অনৈতিক ভাবে পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা, মূল্য তালিকা না রাখা, অতিরিক্ত দামে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিক্রয় করা, মেয়াদ উত্তীর্ণ খাদ্য পণ্য বিক্রয় করা, ক্রয় ভাউচার সংগ্রহ না করাসহ বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে কুসুমবাগ পয়েন্টের রিয়াদ নামে একজন অভিযোগকারী লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ফারুক এন্ড সন্সকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেন্ট্রাল রোডের মেসার্স সাজ্জাদ এন্টারপ্রাইজকে ১ হাজার টাকা, সাইফুর রহমান রোডের মেসার্স আহম্মদ ষ্টোরকে ১ হাজার টাকা, পশ্চিমবাজারের খসরু এন্ড ব্রাদার্সকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
প্রিতম রায় নামের অপর একজন অভিযোগকারীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে পশ্চিমবাজারের পাল ট্রেডার্সকে ৪ হাজার টাকা জরিমানা হয়। অভিযানে মোট ৫ টি প্রতিষ্ঠানকে ৯ হাজার টাকা জরিমানা ও তা আদায় করা হয় এবং দুইজন অভিযোগকারীকে আইন অনুসারে জরিমানার ২৫% টাকা প্রদান করা হয়।