পশ্চিম বঙ্গের সিপিআই(এম) দলের সমর্থক শৈবাল বিষ্ণু ২০১৫সালের ২৯শে জানুয়ারী শঙ্খ করভৌমিকের এ লিখা নিয়ে একটি টুইট করেছিলেন। সে টুইটটি ছিল এরূপ-
-শঙ্খ করভৌমিক
“বাবা, এটা কিসের ছবি?”
– “হারমিট ক্র্যাব, সন্ন্যাসী কাঁকড়া।”
“ওরকম নাম কেন?”
– “এরা খুব নিরীহ। সাধুদের মত। কেউ ওদের খেতে চাইলেও ওরা কিছু বলে না।”
“তাহলে সবাই ওদের খেয়ে ফেলে না কেন?”
– “কি করে খাবে? ওরা তো ফাঁকা ঝিনুক বা শাঁখের খোলায় ঢুকে থাকে। ওটা খুব শক্ত হয়, তাই ওদের কেউ কামড়াতে পারে না।”
“ও তাইতো, ওর জামাটা শাঁখের মত দেখতে।”
– “হ্যাঁ, জামাও বলতে পারো, বাড়িও বলতে পারো।”
“বাবা, ও যে শাঁখটাকে জামা বানিয়ে পরে নিল, শাঁখটা কোথায় গেল?”
– “মরে গেছে। ওরা তো আর জ্যান্ত শাঁখ দিয়ে জামা বানায় না।”
“সবাই মরে যায়?”
– “যায়।”
“তুমিও মরে যাবে?”
– “হ্যাঁ, তবে তুমি বড় হবার পর।”
“আমার যে খুব কষ্ট হবে। আমার সঙ্গে কে খেলবে?”
-“বললাম যে, তুমি বড় হয়ে যাবে। আমার সঙ্গে খেলার মত ছোট আর থাকবে না।”
“তাহলে তোমার বাবা মরে যাবার পর তুমি কেঁদেছিলে কেন? তুমি তো বড়।”
– “বাহ! আমি বাবার সঙ্গে খেলতাম না তো কি হয়েছে। গল্প তো করতাম।”
“এখন তো তুমি আমার সঙ্গে গল্প করতে পারো।”
– “হ্যাঁ, সেইজন্যই তো আর কাঁদি না।”
“জানো বাবা, আমি আগে ভাবতাম শুধু আমারও বাবা আছে। দাদা স্টার হয়ে যাবার পর বুঝলাম তোমারও বাবা ছিল।”
-“স্টার? হতেও পারে।”
“কি বলছ? মরে গেলে সবাই স্টার হয়ে যায় না?”
– “ওইরকম ভাবতে ভাল লাগে আর কি।”
“মরে গেলে লোক তাহলে কোথায় যায়?”
– “আমরা সবাই জল, মাটি, বাতাস এসব দিয়ে তৈরি। তাতেই মিশে যায়।”
“তাহলে তোমার বাবা এখনো আছে?”
– “যা দিয়ে তৈরি সেটা থেকে যাওয়া মানে যদি থাকা হয়, তাহলে আছে।”
“তাহলে তুমি মাঝে মাঝে মন খারাপ করো কেন?”
– “যেমন আমার ভাই বিদেশে থাকে। তোমার বোন বিদেশে থাকে। আমরা জানি ওরা আছে, তবু দূরে আছে বলে মন খারাপ করি- অনেকটা সেরকম ব্যাপার।”
“তাহলে তুমি স্টার হয়ে গেলে আমার মন খারাপ হবে না।”
– “সেকি, কেন?”
“তুমি তো জল, মাটি, বাতাস এসব হয়ে থেকেই যাবে। আর আকাশের দিকে তাকালেই তোমাকে দেখা যাবে। ওয়েবক্যামট্যামের দরকারই হবে না।”