লন্ডন: পঞ্চাশ-ষাটের দশকের প্রখ্যাত হাডু-ডুডু ও কাবাডি খেলোয়াড় মৌলভীবাজারের কৃতিসন্তান মোঃ আবু তাহির আজ মঙ্গলবার ১ লা আগষ্ট বিকেল ৩:০০ ঘটিকায় নিজ বাড়িতে পরলোকগমণ করেছেন। তিনি মৌলভীবাজার অঞ্চলে সকলের কাছে তারণ মিয়া নামেই পরিচিত ছিলেন। মৌলভীবাজার শহর লগ্ন পশ্চিম প্রান্তের শ্রীরাই নগর গ্রামের বাড়ীতেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আবু তাহেরেরা তিন ভাই। তার সেই দুই ভাইও বিলেত প্রবাসী। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ পক্ষাঘাত রোগে ভোগছিলেন।
আবু তাহির পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে লন্ডন প্রবাসী হন। তার মরহুম পিতা সমুজ মিয়াও লন্ডন প্রবাসী ছিলেন। লন্ডনের সেই সময়কার নামীদামী এলাকা মারলিবন ওয়ে (অফ ওক্সফোর্ড ষ্ট্রীট)তে তার বাবা প্রয়াত সমুজ মিয়া ‘আযাদ রেষ্টুরেন্ট’ নামে প্রথম রেস্তোরাঁ ব্যবসার শুরু করেন। আযাদ রেস্তোরাঁ ব্যবসার মাধ্যমে সমুজ মিয়া বিলেতে সফল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেন। এই ব্যবসাকে মনের মত সফল উচ্চতায় নিয়ে যাবার লক্ষ্যে পুত্র আবু তাহিরকে বিলেত চলে আসার বিষয়ে বাবা খুব উৎসাহী হয়ে উঠেন। ফলে ষাটের দশকের প্রথম দিকে তরুণ আবু তাহির মৌলভীবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় বিলেতে পাড়ি জমান।
নিজের অধ্যবসায় ও পরিশ্রম দিয়ে তরুণ কর্মবীর তাহির, বাবার ব্যবসাকে সফলতার চরম উচুঁতে নিয়ে যান। তরুণ ব্যবসায়ী আবু তাহির ব্যবসার সম্প্রসারণ লক্ষ্যে নিজের দেশের মাটি মৌলভীবাজারে গড়ে তোলেন বিশাল ফলমূলের বাগান। ঢাকার ধানমন্ডিতে নির্মাণ করেন বাড়ী। মৌলভীবাজারের একসময়ের তুখোড় কাবাডি ও হাডু-ডুডু খেলোয়াড় সময়ের দাবী মেটাতে হয়ে উঠেন সফল ব্যবসায়ী তারণ মিয়া।
তারণ মিয়া বিষয়ে ফোনে আলাপ হয় বিলেতে বসবাসরত বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশনের একসময়ের কৃতি সভাপতি, তারই সম্পর্কিত চাচা ৮৩ বছর বয়স্ক জালালউদ্দীন আহমদ সাহেবের সাথে। ভাতিজা তারণ মিয়াকে নিয়ে কিছু বলতে গিয়ে, হারিয়ে যাওয়া অতীতের দিনগুলি স্মরণ করে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে জনাব জালালউদ্দীন বলেন তারণ ছিল তেজোদ্দীপ্ত যৌবনের প্রতিক। তার মাঝে বহু গুনের সমাহার ছিল। তাকে দেখেছি সুদর্শন সৌম্যকান্তি চৌকুস একযুবক লন্ডনের সুখ্যাতিময় একটি এলাকায় চুটিয়ে রেস্তোরাঁ ব্যবসা চালাচ্ছে। আমি তার চিরশান্তি কামনা করি।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রীসহ ২ ছেলে ও ২ মেয়ে রেখে প্রয়াত হয়েছেন। তার জানাযার নামাজ আগামীকাল সকাল ১১:০০ ঘটিকায় নিজ গ্রামের বাড়ি শ্রীরাই নগরে অনুষ্ঠিত হবে।