ইসলাম আজিজুল।। মৌলভীবাজারে কুলাউড়া, রাজনগর ও সদর উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহমান খরস্রোতা মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের মেরামত কাজ চলছে বালু দিয়ে। সোয়া তিন কোটি টাকার প্রকল্পটি বালির বাঁধের মতই পানির স্রোতে ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা মনু তীরের বাসিন্দাদের।
গত বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে মনু নদীর প্রতিরক্ষা ৮ স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। এসব ভাঙনকৃত ও ঝুঁকিপূর্ণ ৩২টি স্পটে চলছে মেরামত কাজ। মেরামত কাজে চলছে ব্যাপক অনিয়ম আর হরিলুট। মাটির বদলে বালি দিয়ে মেরামত করা হয়েছে প্রতিরক্ষা বাঁধ। অপরিকল্পিতভাবে হয়েছে নিম্নমানের বাঁশ আর চাটাই দিয়ে নামমাত্র কাজ। স্থানীয়রা দাবী করেন, এ কাজ কোন উপকারে আসবে না তাদের। নামমাত্র কাজ করানোর চেয়ে না করানোই ভালো ছিলো। নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত “এইবেলা” এ সংবাদ প্রকাশ করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, মনু নদীর কুলাউড়া, রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ৩২ টি স্পট ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় রয়েছে। স্পটগুলো মেরামত করার জন্য ৩ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। শুরু হয় মেরামত কাজ। কিন্তু মেরামত কাজের শুরু থেকেই চলছে হরিলুট।
সরেজমিনে শরীফপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গত বছর কয়েকদফা নদী ভাঙনে নিশ্চিন্তপুর এলাকার প্রতিরক্ষা বাঁধের অনুমানিক ২শ ফুট এলাকা ভেঙে যায়। বিলীন হয়ে যায় আশপাশের ২০-২৫ টি বাড়ী। চলতি মৌসুমে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙনকৃত এলাকায় মেরামত কাজ শুরু করে। কাজে চলে ব্যাপক অনিয়ম। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার মাঠির পরিবর্তে নদী থেকে ড্রেজার মিশিন দিয়ে বালু দিয়ে তৈরি করেছে প্রতিরক্ষা বাঁধটি। কাজ হতে না হতেই ধ্বসে পড়ছে বাঁধটি। এছাড়াও ঠিকাদারের লোকজন নামকাওয়াস্তে নিম্নমানের বাঁশ আর চাটাই দিয়ে কাজ শেষ করেছে। প্রতিরক্ষা বাঁধে মাত্র ৪-৬ ফুট বাঁশ কুপা হচ্ছে অথচ এখানে কাঁদার গভীরতা ১৫-২০ ফুট। বাঁশগুলো ফাঁকা ফাঁকা করে পুঁতে নামমাত্র কাজ করছে। এভাবে কাজ সম্পাদন করলে সামান্য পানির স্রোতে সবকিছু ছাড়িয়ে নিয়ে যাবে। একই চিত্র অন্যান্য ভাঙ্গনগুলোতেও।
স্থানীয় বাসিন্দা জসীম উল্লাহ, মনোয়ারা বেগম, তসলিম আলী, ইনাম ইল্লাহ, ছলিম উল্লাহ ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, গত বছর নদী ভাঙনে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এখন নদীতে যে কাজ করা হয়েছে তা করার চেয়ে না করাই ভালো ছিলো। নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তুলে তা দিয়ে বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার আগেই ধ্বসে পড়ছে বাঁধটি। আগামী বর্ষা মৌসুমে আমাদের কোন পরিনতি হবে তা বুঝতে পারছি না।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌ. মো. গোলাম রাব্বী জানান, স্থানীয়রা বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী জানান, শরীফপুরের নিশ্চিন্তপুরে প্রতিরক্ষা বাঁধে অনিয়মের কথা জেনেছি। অফিসের লোকজন সরেজমিনে কাজ পরিদর্শনে গেছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে দ্রুত বালি সরিয়ে মাঠি দিয়ে সুষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য চিঠি দিয়েছি। অন্যান্য স্পটেও অনিয়ম আছে কিনা খুঁজে দেখা হচ্ছে।
মৌলভীবাজার অফিস।। বাণিজ্য মন্ত্রনালয়াধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ আল-আমিন এর নেতৃত্বে সদর উপজেলার তিনটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্টানে অভিযান চালানো হয়েছে। বুধবার অভিযান চালিয়ে ইট তৈরির ফর্মাতে কারচুপি করা, নির্ধারীত পরিমাপের ইট বিক্রি না করা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপন্য তৈরি করা, খাদ্য পণ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণসহ বিভিন্ন অপরাধে রায়শ্রী এলাকার সমবায় ব্রিকস ফিল্ডকে ৪০ হাজার, বরমান এলাকার কালাম ব্রিকস ফিল্ডকে ৪০ হাজার ও ইসলামপুরের ফার্মস ফুডকে আরো ১৫ হাজার টাকাসহ মোট ৯৫ হাজার টাকা করা হয়। এ সময় সহযোগীতায় ছিলেন সদর উপজেলা সেনেটারী ইন্সপেক্টর শেকর কান্তি পাল, সদর পৌরসভার সেনেটারী ইন্সপেক্টর আলেয়া খানম, জেলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাসট্রির পরিচালক মাহিম দে ও রেপিড একশন বেটেলিয়ান-৯ কোম্পানি কমান্ডার বিমান চন্দ্র কর্মকারসহ অনেকেই।