তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে মনোযোগের বদলে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও গায়েবী নির্দেশের অপেক্ষায় ছিলো। যুদ্ধাপরাধীদের সাথে নিয়ে সংঘাতের ভুল রাজনীতি এবং নেতৃত্বের সাথে সমর্থক-কর্মীদের দুরত্ব তাদের ভরাডুবির অপর মূল কারণ।’ হারলে ভোট প্রত্যাখ্যান তাদের পুরনো বদঅভ্যাস’ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীতে সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত সংলাপে তথ্যমন্ত্রী, জাসদ সভাপতি ও কুষ্টিয়া-২ আসনে জয়লাভকারী হাসানুল হক ইনু একথা বলেন।
বিএসআরএফ এর সভাপতি শ্যামল সরকারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মহসীন আশরাফের সঞ্চালনায় সংলাপে তথ্যমন্ত্রী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে বিএনপি’র পরাজয়ের কারণ তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, ‘ভুল রাজনীতির পাশাপাশি কর্মী-সমর্থক নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি’র নেতারা, মনোনয়ন নিয়ে বাণিজ্য আর অন্তর্কলহ ছিলো ব্যাপক। এছাড়া বিগত পাঁচ বছর ধরেই বিএনপি ব্যস্ত ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করা, খালেদা জিয়ার মামলা এবং তারেকের অপরাধ ঢাকার ব্যর্থ চেষ্টায়।’
ইনু আরো বলেন-‘সংসদে এবং বাইরে কোথাও বিএনপি বিরোধী দলের ভূমিকায় সফল হয়নি’ উলেখ করে জাসদ সভাপতি বলেন, দায়িত্বজ্ঞানহীন রাজনীতির কারণে বিএনপি তাদের কাজে জনগণের কোনো চাওয়ার প্রতিফলন ঘটাতে পারেনি, কোনো স্বপ্নও দেখাতে পারেনি, জনজীবনের বিষয়ে কোনো ইতিবাচক ভূমিকাও রাখতে পারেনি।’
অপরদিকে মহাজোট সরকার দেশ ও জনগণের উন্নয়নে একাগ্রভাবে কাজ করে চলেছে বর্ণনা করে ইনু বলেন, ‘মহাজোট সরকার পোশাক শিল্প, কৃষকের সার ও বীজ নিয়ে মাথা ঘামায়, নারীর উন্নয়নের বিষয়ে কথা বলে, ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সরকারি সংসদ সদস্যরাও সংসদে প্রতিবাদ করে। এসকল কারণেই জনগণ মহাজোটকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছে।’
কিছু ভোট কেন্দ্রে বিএনপি’র ‘পোলিং এজেন্ট’ ঢুকতে না দেবার অভিযোগ খন্ডন করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পোলিং এজেন্ট’ না ঢুকতে দিলে প্রিজাইডিং অফিসার বা রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করার নিয়ম। এমন একটি অভিযোগও মেলেনি।
মন্ত্রী এসময় সকল সাংবাদিককে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা দেন এবং শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সাংবাদিকদের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সামরিক বাহিনীসহ সকল সহযোগী সংস্থার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। সেই সাথে দেশের সকল মানুষকে যারা উৎসাহের সাথে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন, তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘সারাদেশে দু’শত নিরানব্বইটি আসনে চলিশ হাজারেরও বেশি কেন্দ্রে রোববার যে ভোট গ্রহণ হয় সেখানে শূণ্য দশমিক শূণ্য পাঁচ শতাংশ (০.০৫%) কেন্দ্রে বা ২২টি কেন্দ্রে সহিংসতার খবরে সেগুলি নিয়ম অনুযায়ী স্থগিত করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের তিন কেন্দ্রের ভোট স্থগিত থাকায় সে আসনের ফল স্থগিত রয়েছে।’
‘দেশী পর্যবেক্ষকদের পাশাপাশি নির্বাচনের দিনই দেশব্যাপী নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে ভারতের পর্যবেক্ষক দলের সদস্য পশ্চিমবঙ্গের প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা আরিজ আফতাব, ওআইসির সহকারি মহাসচিব ও দলনেতা হামিদ, নেপালের দলনেতা দীপেন্দ্র, সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের তানিয়া ফস্টার-সকলেই শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের অভিজ্ঞতার কথা অকপটে ব্যক্ত করেছেন এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং পদ্ধতির প্রথম প্রয়োগকেও সফল বলেছেন তারা’, জানান হাসানুল হক ইনু। আসুন, সরকারের সাথে দেশ ও জনগণের কল্যাণের কাজে অংশ নিন।’ সূত্র: রেডটাইমস.কম.বিডি