কুশিয়ারা নদীতে ৬০ কোটি টাকার ভূমি বিলীন
মৌলভীবাজারে হদিস নেই পুরানো বাজারসহ ২ শতাধিক ঘর-বাড়ির
পাহাড়ি ও সীমান্ত অধ্যুষিত মৌলভীবাজারে কুশিয়ারা নদীতে ভাঙ্গন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। প্রায় ৪ যুগ ধরে এসব ভাঙ্গন চলতে থাকলেও সরকারি তরফ থেকে ঠেকানোর কোন উদ্যোগ না নেয়াতে বাড়ি-ঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন নদী পাড়ের প্রায় ৩ সহ¯্রাধীক জেলে ও কৃষকেরা। সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার বারো ঠাকুরি সংযোগস্থরের বরাক নদী থেকে আসা মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলা হয়ে প্রায় ৪০ কিলোমিটার যায়গা জুড়ে বয়ে গেছে চিরচেনা এ নদীটি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঠিক সংরক্ষণ’র অভাব ও খামখেয়ালির কারণে অর্ধ্বশত বছর ধরে এমন ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা যাচ্ছেনা। সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের নদী পাড়ের বকসিপুর, ছিক্কাগাঁও, কামালপুর, শত বছরের কালারবাজার, আমনপুর, সুরিখাল, যুগিকোনা, কেশরপাড়া, সুনামপুর, উমরপুর, কান্দিগাঁও, জোড়াপুর, রামপুর ও ফতেপুর ইউনিয়নের সাদাপুর, হামিদপুর, বেড়কুড়ি, পশ্চিম বেড়কুড়ি (দাশপাড়া), শাহাপুর, জাহিদপুর, আব্দুল্লাহপুর, রশীদপুর ও সদর উপজেলার আরো ১০টি গ্রামের প্রায় ২ শতাধিক ঘর-বাড়ি একেবারে বিলীন হয়ে গেছে।
উরোক্ত এলাকা থেকে নদীতে হারিয়ে গেছে প্রায় ১ হাজার কিয়ার জমি। এখানকার স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এসব জমির কিয়ার প্রতি বর্তমান বাজারমূল্য সর্বনি¤œ ৬ লাখ টাকা ধরা হলে ১ হাজার কিয়ার জমির দাম হবে ৬০ কোটি টাকা। এসব গ্রামের ভুক্তভোগী মধ্য ও নি¤œবৃত্ত মানুষেরা নিজেদের বাড়ি হারিয়ে মাথাগুজার ঠাই পাচ্ছেন না এখনো। এক নজড়ে কৃষক ও জেলেদের দিকে থাকালে মনে হয়, এতো টাকার জমি হারিয়ে সহজ-সরল মনের এসব মানুষগুলো যেন এখনো প্রতিবাদী হয়ে উঠেননি।
এলাকার জনপ্রতিনিধি ও সচেতনমহলের দাবী খুব দ্রুত ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় গার্ড ওয়াল অথবা ব্লক’র আওতায় নিয়ে আসলে ভাঙ্গনরোধ করা যেতে পারে। ফতেপুর ইউনিয়নের তীর ঘেষা শাহাপুর গ্রামের ভোক্তভোগী সুয়েজ আহমদ বলেন, নদী পাড়ের গ্রামের শাহাপুর জামে মসজিদ ও ২০/২৫টি বাড়িসহ প্রায় অর্ধ্বেক গ্রাম নদীতে হারিয়ে গেছে সেই কবে থেকে। সরকারি তরফ থেকে যদি এখনো কোন পদক্ষেপ নেয়া যায়, তবে গ্রামের বাকি অংশটুকু হয়তো রক্ষা পাবে। ওই গ্রামের সুরমান আলী জানান, তার ঘরের অর্ধ্বেক অংশ নদীতে হারিয়ে গেছে। অবশিষ্ট তার কোন জমি-জমা না থাকার কারণে এই ভাঙ্গা অংশে বউ-বাচ্চাদের নিয়ে আতঙ্কে বাস করছেন। তিনি আরো জানান, ঘরের অবশিষ্ট এই অংশটুকুর সাথে যদি ঘুমের ঘরে আমরাও হারিয়ে যাই এই ভয়ে প্রতি রাতে এখন তার আর ঘুম হয়না। পশ্চিম বেড়কুড়ি ও জাহিদপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম বাচ্চু ও মাধবচন্দ জানান, ৪ যুগ ধরে ওই দুই গ্রামে অব্যাহত ভাঙ্গন চলছে। গ্রামের মসাই মিয়া,ইয়াছিন মিয়া, নর্মদা দাসসহ আরো অনেকের ঘর হারিয়ে গেছে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী সোমবার যায়যায়দিনকে জানান, কুশিয়ারা নদীতে ওয়াপধা বাঁধ সংলগ্নের কালারবাজার,শেরপুরসহ আরো বেশ কিছু যায়গা রক্ষা করতে আমরা ২৫৬ কোটি টাকার প্রজেক্ট প্রস্তুত করেছি। আগামী জুলাই-আগষ্ট মাসে সংশ্লিষ্ট দফতরে জমা দেবো। নদী পাড়ের ভাঙ্গন কবলিত ঘর-বাড়ি রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডর কোন প্রজেক্ট আছে কি না জানতে চাইলে প্রকৌশলী রনেদ্র বলেন, ওয়াপধা বাঁধের বাহিরের কোন অংশে (নদী পাড়) আমরা কাজ করবো না। আমাদের কাজ হচ্ছে ওয়াপধা বাঁধ ও তার আশপাশ রক্ষা করা।
কামরানের মৃত্যুতে পরিবেশ ও বন ও মন্ত্রীর শোক
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট মহানগর আ’লীগ’র সাবেক সভাপতি বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেধনা জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন এমপি।
সোমবার গণমাধ্যমে দেয়া এক শোকবার্তায় পরিবেশ মন্ত্রী মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা ও তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। বন মন্ত্রী বলেন, সিলেটের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানের অবদান চিরস্মরণীয়। তাঁর শূন্যতা পূরণ হবার নয়। সিলেটের উন্নয়ন ও জনসেবার জন্য তিনি দীর্ঘদিন মানুষের মনে বেচে থাকবেন। উল্যেখ্য, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কামরান(৬৯) রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাত ৩টায় মৃত্যুবরণ করেন।
|