মুক্তকথা সংবাদকক্ষ॥ চৈত্রমাস গরমের মাস। আজ ২০ চৈত্র শনিবার। ইতিমধ্যেই দেশে কয়েক দফা বৃষ্টিপাত হয়েছে। চৈত্রের এ বৃষ্টি দেশের জন্য, মাটির জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। এটি একটি শুভ লক্ষন। খনার বচনে আছে-
“চৈত্রেতে থর থর।
বৈশাখে ঝর পাথর॥
জৈষ্ঠেতে তারা ফুটে।
তবে জানবে বর্ষা ঘটে॥”
চৈত্র মাসে অধিক শীত থাকলে, তার পর বৈশাখ মাসে শিলাবৃষ্টি হয়, জ্যৈষ্ঠ মাসে বৃষ্টিপাত না হলে ভাল বর্ষা হওয়ার সম্ভাবনা। আর চৈত্র মাসে বাদল নামলে বোশেখে ঝড়-তুফান কম হয়। ফলে ক্ষয়-ক্ষতি কম হয়।
এবার চৈত্রের এ বৃষ্টি দেশের বিভিন্ন নমুনার খামারীদের জন্য সুখবর বটে। বিশেষ করে সিলেট তথা মৌলভীবাজার অঞ্চলের চা-বাগান খামারীদের জন্য খুবই সুখবর। বাগান ব্যবসায় যারা জড়িত আছেন তাদের মতে, আগাম এই বৃষ্টিতে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে চা-গাছ। গাছে গাছে গজাবে আগাম পাতা, নতুন কুঁড়ি ফুঁড়ে বের হবে। সময়মতো বৃষ্টিপাত ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার চায়ের ফলন মাত্রাতিরিক্ত হবে বলে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন চা বাগানের অনেক মালিক ঢাকা ট্রিবিউনের কাছে। তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা, ইতিমধ্যে অজোর বৃষ্টির ছোঁয়ায় নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে চারা গাছ। আগাম এই বৃষ্টিতে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে চা-গাছ। গাছে গাছে গজাবে আগাম পাতা, আসবে নতুন কুঁড়ি।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত একটি চা বাগানের একজন ব্যবস্থাপক এ সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন যে, বৃষ্টি হওয়াতে বাগানীরা স্বস্তিতে আছেন। প্রথম দিকে শিলাবৃষ্টি হওয়াতে চা বাগানে কিছুটা ক্ষতি হয়েছিল। তবে এ পর্যন্ত যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে গত বছরের চেয়ে এবার উৎপাদন অনেক অনেক বেশি হবে।
সিলেট তথা মৌলভীবাজারের পাহাড়ী অঞ্চল অধিক বৃষ্টিপাতের জন্য বাংলাদেশে খ্যাত আছে। আর এ কারণেই অনুমান দেড়শ’ বছর আগে ব্রিটিশরা এখানে চা আবাদ শুরু করেছিল। কারণ চায়ের চারা গঁজানো থেকে শুরু করে গাছে চাপাতা আসা অবদি বৃষ্টির ভূমিকা প্রশ্নাতীতভাবে উল্লেখযোগ্য। এখানের উঁচু-নিচু টিলাঘেরা এ অঞ্চলের পাহাড়ি জমিগুলো চায়ের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় উপাদেয়। সময়মতো বৃষ্টি চায়ের জন্য সবসময়ই আশীর্বাদ। এতেকরে চাযের নতুন কুঁড়ি বেশি করে গঁজায়। সার্বিক দিক বিবেচনায় চায়ের উৎপাদন এবার ভাল হবে বলেই অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন।
প্রসঙ্গত, দেশে ১৬৭টি চা বাগানের মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় মোট ৯৩টি চা বাগান রয়েছে। সূত্র: ঢাকা ট্রিবিউন ও অন্তর্জাল
|