সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে গেলো শনিবার ২৮ অক্টোবর অনেকটা যুদ্ধক্ষেত্রের রূপ ধারণ করেছিল কাকরাইল ও পল্টন। নিহত হয়েছে এক পুলিশ ও এক যুবদল নেতা, আহত ২০০, আটক ৭ শতাধিক। ৩০ সাংবাদিকও আক্রান্ত হয়েছেন এবং সারা দেশে আজ সোমবার হরতালের আহ্বান জানানো হয়েছে।
আরও জানা গেছে, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে দলটির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। প্রায় ৩ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে নয়াপল্টন, কাকরাইল, বিজয়নগর, আরামবাগ, দৈনিক বাংলাসহ আশপাশের এলাকা যুদ্ধক্ষেত্রের রূপ ধারণ করেছিল।
পুলিশের সাথে সংঘর্ষে দৈনিক বাংলা মোড়ে আরিফুল রহমান নামে একজন পুলিশ সদস্য নিহত হন। এ ছাড়া যুবদল নেতা শামীম মোল্লা পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন এমন দাবী জানিয়েছে বিএনপি। সংঘর্ষের পর বিভিন্ন ভবনে অবস্থান নেয়া অর্ধ শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে বহু সংবাদ মাধ্যম প্রকাশ করেছে।
দেশের সংবাদ মাধ্যম আরো লিখেছে যে, মহাসমাবেশকে ঘিরে বিগত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপি-জামায়াতের গ্রেপ্তার হওয়া ৮ শতাধিক নেতকর্মীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিএনপি তাদের মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছিল। একই কারণ দেখিয়ে বিএনপি’র সাথে হরতাল ডেকেছিল জামায়াতে ইসলামীও। এ ছাড়া গণতন্ত্রমঞ্চসহ বিএনপি’র সমমনা দলগুলোও রোববার হরতাল আহ্বান করেছিল কিন্তু হরতাল সাধারণ মানুষের মাঝে তেমন সাড়া জাগাতে পারেনি।
বিস্তারিত হল, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলেছে তারা রাজনৈতিকভাবেই বিএনপিকে মোকাবেলা করবে এবং সারাদেশে যে হরতাল ডাকা হয়েছে সেটাও প্রতিরোধ করবে তারা। আজ দুপুর দুইটায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালের সামনে সমাবেশ করবে দলটি। এছাড়া দেশজুড়ে বিএনপি-জামাতের বিরুদ্ধে সতর্ক থেকে শান্তি সমাবেশ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কাঁদানে গ্যাস ও শব্দবোমার হৃদয়কাঁপানো শব্দের মধ্যে বিএনপি তাদের মহাসমাবেশ শেষ করতে পারেনি, মাঝপথেই তা পণ্ড হয়ে যায়। এ অবস্থায় বিএনপি-জামাত ৩১ অক্টোবর মঙ্গলবার থেকে ২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩দিনের অবরোধ কর্মসূচীর ঘোষণা দিয়েছে।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিএনপি জামাতের ডাকা হরতালটি ছিল নিরুত্তাপ। এ হরতালে জনজীবনে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। হরতাল ডেকেও উপজেলায় বিএনপি জামাতের কোনো নেতাকর্মীকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মাঠে দেখা যায়নি। বিএনপি জামাতের নেতাকর্মীদের নেই কোনো মিছিল, মিটিং বা পিকেটিং। এর বিপরীতে চৌমুহনা দখল করে শান্তি সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
রোববার(২৯ অক্টোবর) সকাল থেকে দিনভর শ্রীমঙ্গল চৌমুহনা চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শ্রীমঙ্গল চৌমুহনায় অবস্থান নেন।
এছাড়া উপজেলা, পৌর এলাকা, কলেজ, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের একাংশের নেতৃবৃন্দ শ্রীমঙ্গল শহরের প্রত্যেকটি সড়কে হরতাল প্রতিরোধ করতে মোটরসাইকেল র্যালি বের করেন। শান্তি সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগ, পৌর আওয়ামী লীগ, উপজেলা জেলা যুবলীগ, পৌর যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবকলীগ, কৃষকলীগ নেতৃবৃন্দ শান্তি সমাবেশে যোগ দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অর্ধেন্দু কুমার দেব, সাধারণ সম্পাদক জগৎজ্যোতি ধর শুভ্র, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনাম হোসেন চৌধুরী মামুন, প্রচার সম্পাদক দিবাংশু সেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বেলায়েত হোসেস, সহ দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন রাহিদ, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তহিরুল ইসলাম মিলন, আওয়ামী লীগ সদস্য মহসিন মিয়া, ইকবাল মিয়া, মো. মোশাইদ মিয়া, সাজ্জাদুর রহমান সাজু, সাবেক কমিশনার ঝিনু মিয়া, মো. মোমিন মিয়া, উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহিদুর রহমান, পৌর যুবলীগের সভাপতি আকবর হোসেন শহিন, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইমাম হোসেন সোহেল, কামরুল হাসান দুলন, নেপাল, সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগের আব্দুল বারী বেলাল, জেলা যুবলীগ নেতা শেখ নোমান, যুবলীগ নেতা মনির মিয়া, বেলাল আহমেদ, কুটি মিয়া, বদরুল মিয়া, সোহেল, মামুন, সাদিকুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন সোহাগ, এ এফ এম এম হিমেল, মো. আবেদ হোসেন, কৃষক লীগের যুগ্ম আহবায়ক আবু তালেব বাদশা, মো. হেলাল আহমেদ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আকাশ মিয়া, স্বপন, মো. সাবের আহমেদ, উজ্জ্বল কান্তি দাস, ছাত্রলীগের নেতা তাসলিম আহমেদ, সালাত মিয়া, সাজ্জাদ মিয়া, শিমুল নাহিদ, মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি আশিকুর রহমান প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ। এদিকে শ্রীমঙ্গলে বিএনপি জামাতের হরতালে তেমন প্রভাব দেখা যায়নি। দূরপাল্লার গাড়ি কম চললেও অন্যান্য যানবাহন চলতে দেখা গেছে।