মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইসলামিক মিশনের মেইন গেটের সামনে থেকে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) ভোরে ২৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ কয়েছ মিয়া (২৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ। সে পতনঊষার ইউনিয়নের শ্রীসূর্য্য গ্রামের জমশেদ মিয়ার ছেলে।
জানা যায়, শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ী কয়েছ মিয়াকে আটক করা হয়। এ সময় তার দেহ তল্লাশি করে পলিথিন মোড়ানো ২৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়। সে দীর্ঘ দিন ধরে মাদক বিক্র করে আসছে এবং তার বিরুদ্ধে মাদক মামলা রয়েছে।
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শামিম আকনজি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ২৫ পিস ইয়াবাসহ এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। আটককৃত আসামীকে মৌলভীবাজার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার কোন বিকল্প নেই। খাদ্যদ্রব্যে মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট অনিরাপদ এবং এটি হৃদরোগসহ বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগের অন্যতম কারণ। ট্রান্সফ্যাট-ঘটিত হৃদরোগে মৃত্যুর সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। সরকার “খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা, ২০২১” পাশ করলেও এখনো তা পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়ন শুরু করতে পারেনি। প্রবিধানমালাটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা জরুরি।
গত ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ‘জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস’ উপলক্ষ্যে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা(প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত “জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ট্রান্স ফ্যাটমুক্ত নিরাপদ খাদ্য ও আমাদের করণীয়” শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব তথ্য তুলে ধরেন বক্তারা। এই আয়োজনে সহযোগিতা করেছে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য “স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও সমৃদ্ধি চাই, নিরাপদ খাদ্যের বিকল্প নাই”।
ট্রান্সফ্যাটের প্রধান উৎস পারশিয়ালি হাইড্রোজেনেটেড অয়েল (পিএইচও), যা ডালডা বা বনস্পতি ঘি নামে পরিচিত। সাধারণত বেকারি পণ্য, প্রক্রিয়াজাত ও ভাজা পোড়া স্ন্যাক্স এবং হোটেল-রেস্তোরাঁ ও সড়কসংলগ্ন দোকানে খাবার তৈরিতে পিএইচও বা ডালডা ব্যবহৃত হয়।
ওয়েবিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. নাজমা শাহীন বলেন, “সম্প্রতি একটি গবেষণায় বোতলজাত সয়াবিন তেলে মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাটের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্সফ্যাটের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিএফএসএ এবং বিএসটিআইসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমরা গবেষণার মাধ্যমে এই মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় চিহ্নিত করার কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছি।”
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য(জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি) ড. মোহাম্মদ মোস্তফা জানান, “ভোজ্যতেলে ট্রান্সফ্যাট কমিয়ে আনার উপর আমরা বিশেষভাবে জোর দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনা করে খুব দ্রুতই আমরা সমাধানে পৌঁছাবো।”
বাংলাদেশ ফুড সেফটি ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যান্ড ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার বলেন, “প্রবিধানমালার বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, সরকারি সংস্থা এবং বেসরকারি সংস্থাসমূহকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে।”
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, “ট্রান্সফ্যাটঘটিত হৃদরোগে অকাল মৃত্যু কমাতে প্রবিধানমালার বাস্তবায়ন জরুরি।”
২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল ট্রান্সফ্যাট এলিমিনেশন প্রতিবেদন অনুযায়ী পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ বিশ্বের ৪৩টি দেশ ইতিমধ্যে খাদ্যে ট্রান্সফ্যাটের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ‘সর্বোত্তম নীতি’ বাস্তবায়ন করলেও, বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে রয়েছে।
ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর এর বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস, কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন এবং প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক জনাব এবিএম জুবায়ের। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন প্রজ্ঞা’র কোঅর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এই ওয়েবিনারে অংশ নেন।
জাতীয় যুবনীতি-বাস্তবায়নকল্পে জেলার সুশিল সমাজ প্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তা,সাংস্কৃতিক ব্যক্তিগণ এনজিও প্রতিনিধিদের নিয়ে জেলা পর্যায়ে আস্থা প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা হয়েছে।
গতকাল (১লা ফ্রেবুয়ারি) বৃহস্পতিবার সকালে বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তর এর আয়োজনে “আস্থা” প্রকল্পের আওতায় জাতীয় যুবনীতি-২০১৭ বা¯বায়নকল্পে জেলার সুশিল সমাজ প্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তা,সাংস্কৃতিক ব্যক্তিগণ এনজিও প্রতিনিধিদের নিয়ে জেলা পর্যায়ে আস্থা প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা জেলা প্রশাসকের সম্মেলণ কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোসা,শাহীনা আক্তার এর সভাপতিত্বে এবং বেসরকারি সংস্থা রূপান্তর এর আস্থা প্রকল্পের জেলা সমন্বয়কারী মুনজিলা এর পরিচালনায় অবহিতকরন সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ড.উর্মি বিনতে সালাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) প্রভাংশু সোম মহান,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা) বর্নালী পাল।
অবহিতকরণ সভায় বক্তব্য রাকেন সৈয়দ মোসাহিদ আহমদ, রেডিওপল্লিকন্ঠ এর সিনিয়র স্টেশন ম্যনেজার মেহেদি হাসান,জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন মাসুদ,জেলা সমাজসেবা বিভাগের উপপরিচালক মো: হাবিবুর রহমান, জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক শায়েদা আকতার, সাংবাদিক আকমল হোসেন নিপু, হাসনাত কামাল, নজরুল ইসলাম মুহিব, রূপান্তর সিলেট ক্লাস্টার-২ এর কো-অর্ডিনেটর হাসান তারেক প্রমুখ।
আস্থা”প্রকল্পটি সুইস এজেন্সি ফর ডেভলপমেন্ট এন্ড কাঅপারেশন (এসডিসি) এর আর্থিক সহযোগিতায় গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর অনুমতি ক্রমে রূপান্তর বাংলাদেশের ১৮টি জেলার ১৪৭টি উপজেলায় বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের মেয়াদকাল: ০১ জুলাই’ ২০২৩ থেকে ৩১ মার্চ ২০২৬। এরই ধারাবাহিকতায় মৌলভীবাজার জেলার সকল উপজেলায় দল-মতনির্বি শেষে জাতীয় যুবনীতি বাস্তবায়ন এবং যুবদের সামাজিক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করে দক্ষতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে এই কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে রিলায়েন্ট উইমেন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন-আর.ডবিøউ.ডি.ও’ এর আয়োজনে সিভিল সোসাইটির লোকদের নিয়ে প্রজনন স্বাস্থ্য, বয়োসন্ধিকাল, বাল্যবিবাহ ও কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্য বিষয়ক আন্ত:প্রজন্ম সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহষ্পতিবার সকাল ১১টায় প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় ওয়াই মুভস প্রকল্প এর আওতায় ভানুগাছ বাজারস্থ গ্রামের বাড়ি রেষ্টুরেন্ট এন্ড গেষ্ট হাউসে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
আর.ডবিøউ.ডি.ও’ এর প্রকল্প কর্মকর্তা বাবুল কুমার সিংহের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শামসুন্নাহার পারভীন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হোসনে আরা বেগম, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রিপন চন্দ্র দাশ।
আলোচনায় অংশ নেন লেখক-গবেষক আহমদ সিরাজ, প্রভাষক রাবেয়া খাতুন, আহমদ ইকবাল মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল চন্দ্র দাশ, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিরঞ্জন দেব, আরডবিøউডিও এর এডমিন এন্ড একাউন্টস অফিসার মহসিন রেজা, শব্দকর সমাজ উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি প্রতাপ শব্দকর, স্কুল শিক্ষার্থী সুমী রানী কর প্রমুখ। সংলাপে শিশু অধিকার, যৌন, বয়োসন্ধিকাল, প্রজনন স্বাস্থ্য, বাল্যবিবাহ, কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা, স্থানীয় শিশুদের সমস্যা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করা হয়।
আন্ত:প্রজনন সংলাপে বক্তারা স্ব স্ব অবস্থান থেকে নারী ও শিশুদের অধিকার ও নারী সহিংসতা প্রতিরোধে সচেতন হওয়া, সকলে মিলে প্রতিরোধ করা, নারীদের সমস্যা বা বাল্যবিবাহ হলে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানোর জন্য অনুরোধ করেন। সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ের কর্তব্যরত ব্যক্তিবর্গ তরুণদের বিশেষত মেয়েদের এবং তরুণীদের প্রজনন স্বাস্থ্য, যৌন ও জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা এবং বাল্যবিবাহ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। কমিউনিটির বিশেষত বাবা-মা এবং কর্তব্যরত ব্যক্তিবর্গ প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব রাখবে এবং তারা প্রজনন স্বাস্থ্য প্রচারের ক্ষেত্রে যৌথ পদক্ষেপের মাধ্যমে মেয়েদের এবং তরুণীদের সমর্থন করবে বিশেষত মেয়েদের জন্য কমিউনিটির মধ্যে একটি সক্ষম পরিবেশ তৈরি করবে। যে সব সামাজিক নিয়ম যা মেয়েদের গতিশীলতা এবং অংশগ্রহণকে সীমাবদ্ধ করে সেগুলোর পরিবর্তন করতে হবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন ও স্বাগত বক্তব্য দেন আর.ডবিøউ.ডি.ও’ এর প্রকল্প কর্মকর্তা বাবুল কুমার সিংহ।