প্রসারের জন্য প্রচার করতে হয় এটি মানুষের অতি প্রাচীন একটি কাজ বা চাহিদাও বলা যায়। তবে এই প্রচারের একটি ভয়ঙ্কর দিকও আছে। সে হলো মিথ্যাকে আড়ালে রেখে সত্যের নামে প্রচার। প্রাণীজগৎ বিশেষ করে মানুষের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় ‘পণ্যসামগ্রী’র প্রচার আর কল্যাণধর্মী ‘সেবা’র প্রচার এক নয়, দু’টি ভিন্ন ধারার প্রচার। ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যের খদ্দের বাড়ানোর জন্য প্রচার করে থাকে। ধর্ম গুরুরা ধর্মের কথা মানব কল্যাণের সহায়ক বলে তা প্রচার করে থাকেন। ঠিক একই ভাবে, মানব সমাজের সকল স্তরেই যার যার আসল কথা বা রূপ মানুষের কল্যাণের লক্ষ্য থেকে ‘জেনে রাখা ভাল’ মনে করেই, প্রচার কাজ চলে আসছে সভ্যতার উষালগ্ন থেকেই।
মানুষের কল্যাণীয়া যে কোন মৌলিক বিষয় বা বস্তুর এই প্রচারের গ্রহনযোগ্যতা মানুষের কাছে বাড়ানোর জন্য এই অত্যাধুনিক যুগে এসে প্রচারকাজের সাথে সংগত কারণেই জড়িত হয়, প্রচারের নিত্য নতুন পদ্মতির রকম জানার বিষয়। চলে গবেষণা। গবেষণার ফসল হিসেবে বেরিয়ে আসে নতুন নতুন বক্তব্যসহ প্রচারেরও নিত্য নতুন নমুনা ও কৌশল। ফলে সাবেকি প্রচারের রকমফের ঘটে। কালের যাত্রায় সেই প্রচারের নমুনায় কত যে বৈচিত্র এসেছে তা নিবিড়ভাবে অবলোকন না করলে কিছুই বুঝার উপায় নেই।
এক সময় ছিল যখন প্রচারে মানুষের আস্তা ছিল। একেবারে খাঁটী সত্য না জেনে কিংবা স্বচক্ষে না দেখে কেউই কোন বিষয়ে আলাপে শরিক হওয়াকে নীতিবিরুদ্ধ মনে করতো। মিথ্যাচারকে মানুষ সহজে অনুধাবন করতে পারতো। খুব সম্ভবতঃ মানব সমাজের সেই সদগুন থেকেই হাজার হাজার বছর আগের প্রাচীন বিচার পদ্বতিতে সাক্ষীর ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছিল ন্যায় বিচারের লক্ষ্যে। যা আজো বিদ্যমান আছে। কিন্তু এখন, সাক্ষী দিতে গিয়ে মিথ্যা সাক্ষীর জন্য সাক্ষীকে গ্রেপ্তার হতে হয়। একসময় মানুষ রেডিও টিভি’র খবরকে বা বিজ্ঞাপনকে সর্বোচ্চ সত্য বলে বিশ্বাস করতো। এখন সে বিশ্বাস আর নেই। তিরোহিত হয়েছে।
মানব সভ্যতার সবকিছুতেই একটি বিষয় খুবই সহজে পরিলক্ষিত হয় আর তা হলো যে কোন কথা, বিষয় বা বস্তুই সুদীর্ঘকাল ব্যবহৃত হওয়ার পথে এক পর্যায়ে চূড়ান্ত বিকশিত হয়। এই বিকশিত হওয়ার কাল হলো নিত্য নতুন চিন্তার সংযোজন। এরপর ধীরে ধীরে তাতে ক্ষয় শুরু হয়। এই ক্ষয় আর সংযোজন হতে হতে এক সময় দেখা যায় মূল বিষয়, বস্তু বা কথাটিই হারিয়ে গেছে। সে স্থান দখল করে নিয়েছে আসল বিষয়ের পরিবর্তে বিপরীত একটা স্থিতি বা কিছু। যা সময়ের বিবর্তনে হীতের বিপরীতে অহীতের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই ক্ষয় শুরু হওয়ার আগ মূহুর্তে নির্দিষ্ট সেই বস্তু বা নীতির বিকাশ চূড়ান্ত হয়। সমাজ তার যেকোন স্তরে এমন অবস্থায় পৌঁছালে তখনই প্রয়োজন হয় সংস্কারের। সংস্কার না হলে বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠে। বস্তু জগৎ থেকে উদাহরণ দিতে গেলে আমরা বলতে পারি- গাড়ী মানব সেবায় এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। একটি নতুন গাড়ী মানব সমাজে আশীর্বাদ কিন্তু ওই গাড়ীটি পুরানো হয়ে গেলে এবং সংস্কার বা মেরামত না করলে অভিশাপ হয়ে দাঁড়াতে পারে। রাস্তায় সে চলতে পারবেই না বরং বলপ্রয়োগে চালাতে গেলে প্রানঘাতী দূর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আরো স্পষ্ট করে বলতে গেলে বলতে হয় বস্তুজাগতিক নিয়মে যে কোন বস্তু বা নিয়ম-নীতি দীর্ঘকাল চলার পর এক সময় অচল অকার্যকর হয়ে উঠে। তখনই তার সংস্কার বা মেরামত প্রয়োজন হয়। তা না হলে সমূহ বিপর্যয় অনিবার্য্য হয়ে উঠে।
হাজার বছরের প্রচার চর্চ্চায় প্রচার এখন হয়ে উঠেছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও অবশ্যকরণীয় কাজ। এখন মানুষ যা কিছুই করে তার প্রচার করতে চায়। সুদীর্ঘকালের অনুশীলনে প্রচারের নমুনায় এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। কিন্তু আমি লক্ষ্য করেছি নবযুগের পরিশীলিত প্রচার একেবারে হারিয়েছে তার অতীব প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গটি। আর তা হলো সত্যতা। এতো সুন্দর সুক্ষ হয়েছে প্রচারের নমুনা যে ওখান থেকে আসল সত্যটি বের করে আনা রীতিমত দুষ্কর। অথচ মানব সভ্যতায় প্রচারের মূল উদ্দেশ্য ছিল, মন্দ থেকে ভালকে তুলে ধরা, ওই সভ্যতারই সরল সঠিক বিকাশের স্বার্থে। আধুনিক প্রচারে সেই মূলমন্ত্রটিই একেবারে লুন্ঠিত হয়ে পুরোপুরি উল্টো হয়ে ভিত গড়ে নিতে চলেছে অত্যাধুনিক প্রচার। আধুনিক প্রচারের মূল কথা হয়ে দাঁড়িয়েছে সত্য হোক আর মিথ্যা হোক, মানুষের অজানা তথ্যকে কল্যাণময় কথা দিয়ে যত প্রচার করতে থাকবে ততই দেখবে মানুষ তা গ্রহন করে নিতেছে। সেখানে কল্যাণ নিহীত থাক বা নাথাক! অল্প কিছু ক্ষেত্র ছাড়া বর্তমান বিশ্বে যা কিছুই প্রচারিত হচ্ছে সবকিছুইতেই গভীর মনোনিবেশ দিয়ে দেখলে দেখা যাবে সেখানে আসল সত্য বলতে কিছুই নাই। সম্পূর্ণটাই অলীক এক বানোয়াট মিথ্যা কথনের ফুলঝুড়ি। এখানে সকলের বুঝার কারণে উদাহরণের জন্য দু’টি ঘটনার উল্লেখ করতে চাই। একটি, বৃটেনের ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসার বিষয়। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে এতোই প্রচার চলেছে যে এখন একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে আদৌ আর সম্ভব নয় কোনটা সঠিক নির্ধারণ করা। আরেকটি হলো অতি সম্প্রতি সংঘটিত বাংলাদেশের একটি আবাসিক সরাইখানায়(হোটেল রেইনট্রি) ধর্ষণের ঘটনা। এ দু’টি ঘটনা ভিন্ন দুই নমুনার। প্রথমটির জনসম্পৃক্তি বা জনসাধারণের জানার প্রয়োজন যেমন খুবই বেশী ঠিক পরেরটির বিষয়ে তেমন নয়। তবে দ্বিতীয়টির সাথে খুবই নাজুক নীতি-নৈতিকতার বিষয় জড়িয়ে আছে। সে দিক থেকে সাধারণ মানুষের জানারও অধিকার রয়েছে। কিন্তু যেভাবে পক্ষ নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার-প্ররোচনা চলছে তাতে একসময় দেখা যাবে তার আসল রূপটি হারিয়ে গেছে।
একজন পলাশ রায় তার ফেইচবুকে নীতিকথার হাট বসিয়ে লিখেছেন- Palash Roy -কাম যখন ধ্যান-জ্ঞানে সদা চিত্তে বিরাজ করে, তখন আত্মা অসুর রূপ ধারন করিয়া, অন্ধ হইয়া যায়, অন্ধ আত্মা হিতাহিত জ্ঞান শূণ্য হইয়া, শিশু, তরুনী, বয়স্ক, বৃদ্ধা এমন কি পশুর উপরেও তার কাম-কামনা প্রয়োগ করে, কারন, সে আত্মাতো তখন নর-পশুকার ধারন করে। আর তার ঘৃনীত: মনবাসনা চরিত্রার্থে সে সবই পারে।
তার অনেক কথা অপ্রাসঙ্গিক হলেও আরেকজন জিয়াউল হোসেইন লিখেছেন- Ziaul Hussain: 2 hrs · ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ার কারন কি ?
সহজলভ্য ইয়াবা, যৌন উত্তেজক সিরাপ, যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট, হাতে হাতে মোবাইল ইন্টারনেট, আর পর্নোসাইট।
এই কারনগুলোর নিয়ন্ত্রক কিন্তু কর্পোরেট মোড়লেরা ।
আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অভিযান শুরু করুক ব্যাঙ এর ছাতার মতো গজিয়ে উঠা আমাদের দেশের ওষুধ কোম্পানির ওষুধ তৈরীর কারখানাগুলোতে।
দেখবেন সেখানে পাওয়া যাবে ফেন্সিডিল, ইয়াবা, অবৈধ যৌন উত্তেজক ওষুধ তৈরী হচ্ছে।
ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন,,,,,,!!!
দেশের মানুষের টাকা নাই কিন্তু অবৈধ টাকার অভাব নাই।
অবৈধ আয়, অবৈধ ব্যয়,,, দুটোই রমরমা।।
ভয় এখানেই, অত্যাধুনিক প্রচার শিল্পের বিভিন্নমুখী বহুরংগা প্রচারের ধুম্রজালে অবশেষে সত্য কি-না মিথ্যা হয়ে যায়! বৃটেন হারায় সঠিক পথ আর বাংলাদেশে ধর্ষণ হয়ে উঠে…!