ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে গত ৩ মে থেকে চলা সহিংসতায় শান্তি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার দাবিতে শান্তি সমাবেশ করেছেন বাংলাদেশের মণিপুরিরা। শুক্রবার (৯ জুন) দুপুরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মণিপুরি কালচারাল কমপ্লেক্সের হলরুমে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশের শুরুতেই মণিপুর রাজ্যে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে মণিপুরে দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও অশান্তির অবসান ঘটিয়ে পূর্ণ শান্তি ও দ্রুত আগের মতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ প্রতিষ্ঠার জন্য জোর দাবি জানানো হয়।
মণিপুরি কমিউনিটি নেতা এল ইবুংহাল শ্যামল এর সভাপতিত্বে ও অয়েকমপ অঞ্জুর সঞ্চালনায় সমাবেশে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ মণিপুরি সাহিত্য সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কবি এ.কে শেরাম, কমলগঞ্জ শাখার সভাপতি মাইবাম বীরেন্দ্র, মণিপুরি কালচারাল কমপ্লেক্সের সভাপতি এল জয়ন্ত, শিক্ষিকা বৃন্দারানী সিনহা, থোঙাম প্রহল্লাদ, এল প্রসেনজিৎ, সোরাইজাম উৎপল, অশোক অঙোম, হাওবম সুধীর, থাংজম সুখ প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভারতের মণিপুর রাজ্যে কুকি জনগোষ্ঠীর লোকেরা অতর্কিতে সেখানের মণিপুরি জনগোষ্ঠীর ওপর আক্রমণ করে তাদের ঘরবাড়ি জ্বালানোসহ জানমালের ক্ষতি করে। মণিপুরিরাও একইভাবে প্রতি-আক্রমণ করে। ফলে এই দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে জাতিগত দাঙ্গা শুরু হয়। মণিপুরে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ভারত সরকার প্যারা-মিলিটারি বাহিনী আসাম রাইফেলসসহ কেন্দ্রীয় মিলিটারি বাহিনীও নিয়োগ করে। তারপরও পরিস্থিতি পুরো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এখনও বিভিন্ন স্থানে দাঙ্গা পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং জানমালের ক্ষতি হচ্ছে। মণিপুরে সহিংসতার এ পরিস্থিতিতে যাতে সেখানে পুরোপুরি শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় সেজন্যে আমরা বাংলাদেশের মণিপুরিদের উদ্যোগে সর্বজনীন শান্তি সমাবেশ করছি।
মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী মাধবপুর ইউনিয়নের ধলই সীমান্ত এলাকা থেকে বিজিবি সদস্যরা তিন রোহিঙ্গা নারীকে আটক করে শুক্রবার দুপুরে পুলিশে দিয়েছে। আটককৃত রোহিঙ্গারা হলেন, মিনারা বেগম (২০), স্বামী-সৈয়দুল আমিন, উখিয়া ক্যাম্প-১৪, ব্লক-সি-১; ফরমিনা বেগম(২০), পিতা-ইকবাল আহমদ, ক্যাম্প-৫, ব্লক-বি-১; হামিমা বেগম(২০), পিতা-নুর আলম, ক্যাম্প-১৪, ব্লক-বি-৩।
পুলিশ ও স্থানীরা জানান, কক্সবাজার উখিয়া ক্যাম্প হতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা ৩জন নারী ও ৪ জন পুরুষ সদস্য কমলগঞ্জের ধলই সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাওয়ার জন্য গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে উখিয়া ক্যাম্প থেকে পালিয়ে আসে। শুক্রবার সকাল ১০টায় ৪ জন পুরুষ রোহিঙ্গা ধলই সীমান্তের কাটাতার অতিক্রম করলেও ৩ জন নারী সদস্য ধলই বিজিবি সদস্যদের হাতে আটক হয়। খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানার এসআই সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় কমলগঞ্জ থানায় নিয়ে আসেন।
এদিকে বাংলাদেশ অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশের পর ৪ জন পুরুষ রোহিঙ্গাকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর(বিএসএফ) সদস্যরা আটক করে বলে জানিয়েছেন এসআই মহাদের বাচাড়।
কক্সবাজার উখিয়া ১৪ ও ১৬ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ সোহেল আহমদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, রাতের আঁধারে তারা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে গিয়েছিল।
কমলগঞ্জ থানার ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, আটককৃত ৩ নারী রোহিঙ্গাদের সংশ্লিষ্ট রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।