সৈয়দ ছায়েদ আহমদ।। পর্যটন কেন্দ্র মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের সৌন্দর্য বর্ধনে সৌন্দর্যহানীকর ব্যানার ফেস্টুন অপসারণ অভিযান শুরু করেছে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন। ‘পরিচ্ছন্ন গ্রাম পরিচ্ছন্ন শহর’ এই শ্লোগানে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভা, স্কাউটস শিক্ষার্থী, স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দসহ স্থানীয়দের নিয়ে পর্যটন শহরের সৌন্দর্য রক্ষায় পৌর এলাকায় পরিচ্ছতা অভিযানে ব্যানার, ফেস্টুন, সাইবোর্ড, বিলবোর্ড অপসারণ কর্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।
গেল মাসের বৃহস্পতিবার(১২ ডিসেম্বর) শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে পৌর শহরে বিভিন্ন এলাকায় ফেস্টুন, ব্যানার ও বিভিন্ন অবৈধ সাইনবোর্ড অপসারন কাজ শুরু করেন। এসময় শ্রীমঙ্গল পৌরসভার থেকে জনবল সরবরাহ করা হয়। এছাড়া স্কাউট এর সদস্যরা পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেয়। এর আগে উপজেলা প্রশাসন এসব সাইনবোর্ড, ব্যানার অপসারনে সংশ্লিষ্টদের রবিবার(৮ ডিসেম্বর) পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে শহরে মাইকিং করা হয়। কিন্তু সরেজমিন প্রশাসনের আহবানে সারা না মেলায় সোমবার(৯ ডিসেম্বর) থেকে এই অভিযান শুরুর উদ্যোগ নেয়া হয়।
গত সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নজরুল ইসলাম তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পর্যটন শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে সৌন্দর্য্যহানীকর এসব সাইনবোর্ড বিলবোর্ড অপসারনে সবার সহযোগীতা কামনা করেন। তিনি বলেন, প্রথমে পৌর শহরে এবং পর্যায়ক্রমে গোটা উপজেলাজুড়ে এসব সাইনবোর্ড অপসারনের জন্য অভিযান চালানো হবে। এজন্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা হয়েছে, সবাই এতে সমর্থন জানিয়েছেন বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরো বলেন, গাছেরও তো প্রাণ আছে, অনেক অবিবেচক মানুষকে গাছে পেরেক ঠুঁকে বিজ্ঞাপনের সাইনবোর্ড লাগাতে দেখা গেছে। এই অভিযানের পর নতুন করে কেউ আইন অমান্য করে সাইনবোর্ড ব্যানার, ফেস্টুল লাগালে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে অর্থদন্ডসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান। এক প্রশ্নের জবাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, সাইনবোর্ড অপসারনের পর শহরের ফুটপাথ দখল মুক্ত করতে অভিযানে নামবে প্রশাসন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার সদর ও কালাপুর ইউনিয়নের গরীব ও দুঃস্থদের মাঝে কম্বল ও শীত বস্ত্র বিতরন করা হয়েছে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে সদর ও ৫নং কালাপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে ৫’শ করে এক হাজার গরীব ও দুঃস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র ও কম্বল বিতরণ করা হয়। অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি উপাধ্যক্ষ ড. মোঃ আব্দুস শহীদ এমপি এসব শীত বস্ত্র বিতরণ করেন।
এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুছ ছালেক, উপজেলা পিআইও কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান, শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভানু লাল রায়, কালাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মুজুল, কমলগঞ্জ পৌর মেয়র জুয়েল আহমেদ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন ।
এছাড়াও দলীয় নেতকর্মীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে উপজেলা পর্যায়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান শিক্ষার উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের সার্বিক অবস্থান ও অগ্রগতি অবহিতকরন সেমিনার অনু্ষ্িঠত হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমে এই সেমিনার অনু্ষ্ঠিত হয়।
মাল্টিপারপাস সোসিও ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশন(এমসিডা) এর আয়োজনে ও বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউ-েশনের সহযোগিতায় এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীলিপ কুমার বর্ধন এর সভাপতিত্বে এবং এমসিডা’র প্রধান নির্বাহী তহিরুল ইসলাম মিলনের সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এসি ল্যা- মো. মাহমুদুর রহমান মামুন।
সেমিনারে প্রকল্পের সার্বিক অবস্থান ও অগ্রগতি বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্হাপন করেন এমসিডা’র প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর মো.মোরসালিন মুকিত।
সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এস এম জাকিরুল হাসান, একাডেমিক সুপারভাইজার সঞ্জিত কুমার দাশ, ম্যাক বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এস এ হামিদ প্রমুখ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও হাই কোর্ট মাজার জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী বলেন, আজ সারা বিশ্বে মুসলিম জাতি নির্যাতিত-নিপীড়িত। আরাকান ও আসামে মুসলমান আজ রাষ্ট্রযন্ত্রের নির্যাতনে নিষ্পেষিত। বর্তমানে মুসলমানদের লাঞ্ছনা, পরাজয় ও পরাধীনতার জন্য তাদের অনৈক্যই দায়ী। নিজেদের পারস্পরিক হানাহানিতেই তাদের শক্তি নিঃশেষ হয়ে গেছে। মুসলমানরা যদি ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত না হয়, তবে এই দমন-পীড়ন ও নির্যাতন তাদের ওপর চলতেই থাকবে। বাংলাদেশের ছোট এই ভূ-খন্ডে সবাই’কে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আর এটাই হলো ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা।
গত মঙ্গলবার রাতে ঐতিহ্যবাহী শ্রীমঙ্গল পৌরসভা মাঠে আনজুমানে আল-ইসলাহ্, লতিফিয়া ক্বারী সোসাইটি ও তালামিয়ে ইসলামিয়ার উদ্যোগে ২দিন ব্যাপি মাহফিলের অতিথি হিসাবে তা’লিম পেশ কালে এসব কথা বলেন মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী।
আল্লামা আব্দুর নূরের সভাপতিত্বে ও কাজী মাওলানা মো. নাছির উদ্দিনের পরিচালনায় তা’লিম ও বয়ান পেশ করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাওলানা ড. আব্দুল কাদির, সৎপুর দারুল হাদিস কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা ছালিক আহমদ, জেলা আল-ইসলাহ’র সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুর আলীম।
সালাহউদ্দীন আইয়ুবীর কথা স্মরণ করে আহমদ হাসান চৌধুরী আরো বলেন, আইয়ুবী এমনই এক দুর্বার, অপ্রতিরোধ্য, দুঃসাহসী প্রাণশক্তি ছিলেন যে কিংবদন্তির এই সুলতান রক্তেভেজা পথ পাড়ি দিয়ে একের পর এক রাষ্ট্র জয় করে ফিরিয়ে এনেছিলেন মুসলমানদের ন্যায় ও সাম্যকে। এই যুগের সালাহউদ্দীন আইয়ুবী হলেন আহমদ শহীদ বেরলভী(রহ:)। আর এই আহমদ শহীদের উত্তসূরী কেরামত আলী জৈনপরী(রহ:) যিনি ৫১ বছর ধর্মের সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করেন। এই বাংলাদেশে ফুলতলী রহ. শত শত মাদরাসা মসজিদ তৈরী করে মানুষের কাছে ইসলামের শিক্ষা তুলে ধরে গেছেন। পরিশেষে প্রথম দিনের মাহফিলের কার্যক্রম দোয়ার মাধ্যমে শেষ হয়।