আব্দুল ওয়াদুদ, মৌলভীবাজার।। মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে এক যুক্তরাজ্য প্রবাসী নারী মারা গেছেন। ধারনা করা হচ্ছে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। প্রায় ১ মাস পূর্বে রেজিয়া বেগম(৬০) নামের এই নারী যুক্তরাজ্য থেকে দেশে এসে শহরের কাশিনাথ রোডের এম.আর.ভিলা নামীয় নিজস্ব বাসায় উঠেছিলেন।
একটি সূত্রে জানা যায়, গত রোববার(২২ মার্চ) দূপুর দেড় টার দিকে রেজিয়া বেগমকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কিছুক্ষণপর চিকিৎসাধিন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তরিঘরি করে সদর হাসপাতাল থেকে আত্মীয়স্বজন শহরের লাইফলাইন হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেও চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। পরে লাশ কাশিনাথ রোডের বাসায় নিয়ে গোছল শেষে কাপনের কাপড় পড়িয়ে রাত ৯টার দিকে একটি ফ্রিজিং গাড়ীতে রাখা হয়।
সোমবার দুপুরে সদর উপজেলার ভাদগাঁও গ্রামে স্বামীর বাড়ি নেয়া হয়। ওখানে দুপুর ২টায় গাড়ীতে রাখা অবস্থায় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তার লাশ নিয়ে যাওয়া হয় একই উপজেলার গিয়াস নগরে। সেখানে বিকেল ৩টায় ২য় জানাজা শেষে মাদ্রাসার পাশে তাকে দাফন করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে শহরের কাশিনাথ রোডের ৫টি বাসাকে প্রশাসন হোম কোয়ারেন্টাইনের আওতায় নিয়ে আসে। পাশাপাশি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফ মিলে ৭ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। মৃত্যুবরণকারী প্রবাসী রেজিয়া বেগমের আত্মীয়রা জানান, প্রায় এক মাস পূর্বে যুক্তরাজ্য থেকে তিনি দেশে ফিরেন। হার্টের সমস্যার কারণে হাসপাতালে নেয়া হয়। এর আগেও একবার ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া হয়। এ বিষয়ে একটি মেডিক্যাল টিম তার বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে।
এবিষয়ে জানতে সিভিল সার্জনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ওই মহিলার চিকিৎসার সকল কাগজপত্র আমরা সংগ্রহ করেছি। উনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন না কিনা সেটা বলা যাচ্ছেনা তবে, ঘন্টা দুই-এক পরে আমরা কি সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেটা আপনাদের জানাতে পারবো।
পর্যটন জেলা ও প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজারে হোম কোয়ারেন্টাইন’র নিয়ম ভঙ্গসহ অহেতুকভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করায় বিভিন্ন আইনে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত। মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অধিনে গেল মঙ্গলবার সহকারি কমিশনার(ভূমি) শ্রীমঙ্গল এর নেতৃত্বে হোম কোয়ারেন্টাইন না মানার দায়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় একজনের বিরুদ্ধে ১টি মামলা দায়েরসহ ২ হাজার টাকা ও জুড়ী উপজেলা কর্মকর্তার নেতৃত্বে অন্য আরেক জনকে ৪শ টাকা জরিমানা করেন।
এদিকে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন বুধবার গণমাধ্যমকে জানান, করোনা ভাইরাস’র প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে ও জেলার সাধারণ নাগরীকের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা বিবেচনায় রেখে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত কাঁচাবাজার, খাবার, ফার্মেসী, হাসপাতাল ও জরুরী সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে।
এছাড়াও শপিংমল, দোকানপাট, সড়কের পাশে চায়ের দোকান, সেলুন, হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অপরদিকে মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন বুধবার বিকেলে জানান, বুধবারের সর্বশেষ হিসেবে জেলায় ৫শ ৫৮জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। কোয়ারেন্টাইনে ১৪ দিনের মেয়াদ শেষে জেলা থেকে আরো ১শ ৫১ জন বাহিরে বের হয়েছেন। তাদের শরীর সুস্থ আছে।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গোরারাই “ওয়াহিদ সিদ্দেক উচ্চ বিদ্যালয়ে”় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন করা হয়েছে। রোববার দুপুরে চতুর্থ তলা বিশিষ্ট ভবনটির শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আবু মিয়া চৌধুরী’র সভাপতিত্বে ও কমিটির সদস্য আমিরুল ইসলাম সাহেদ’র সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন খলিলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অরবিন্দ পোদ্দার বাচ্চু। বক্তব্য দেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুল ইসলাম চৌধুরী,প্রকৌশলী এনায়েত মোঃ সিরাজ, এডভোকেট সাইফুর রহমান,মোঃ শামীম,লতিফুর রহমান,প্যানেল চেয়ারম্যান হাজী ইলিয়াছ মিয়া, খালিছুর রহমান প্রমূখ।
জানা যায়, ভবনের ২, ৩ ও ৪র্থ তলায় কাজ শেষ করতে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। ভবনের প্রথম তলার কাজ এর আগেই শেষ হয়। মৌলভীবাজার শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর’র মাধ্যমে রিয়া কন্ট্রাকশন ভবনটির কাজ শেষ করে।
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার এক মাদ্রাসা শিক্ষকের উপর হামলা করেছেন এক অভিভাবক। মারাত্বক আহত উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের মাওঃ আব্দুল মুমিন(রামপুরী) এখন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ঘটনাটি বিগত মঙ্গলবার ঘটলেও বেশি জানাজানি না হওয়াতে বিষয়টি অন্তরালে থেকে যায়। পরবর্তীতে ছাত্র-অভিভাবকের বিক্ষোভের মুখে ঘটনাটি খুলাসা হয়। এ ঘটনায় বিগত শনিবার উপজেলার কালারবাজারে শিক্ষক আহতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, কালারবাজার সংলগ্ন কুশিয়ারা নদীর ওপাড়ে সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার মুসলিমাবাদ(ডেকাপুর) আলীম মাদ্রাসার শিক্ষক মাওঃ আব্দুল মুমিন ক্লাশ চলাকালীন সময়ে ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বাহিরে আসতে দেখে কঞ্চি দিয়ে তাড়া করেন। ছাত্ররা মৌলানাকে দেখে দৌড়ে ক্লাশে যাবার সময় অন্যান্য ছাত্রদের মত ডেকাপুর গ্রামের শেখ নজরুল’র মাদ্রাসা পড়ুয়া ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রের হাতে কঞ্চির আঘাত লাগে। পরবর্তীতে ঘটনাটি অভিভাবক নজরুল জেনে গেলে তিনি বিচারপ্রার্থী হন।
তাৎক্ষনিক বিষয়টি সমাধানে আব্দুল মুমিন মাদ্রাসার অন্য শিক্ষক মাওঃ আব্দুল লতিফ ও মাওঃ আতাউর রহমানকে নিয়ে শেখ নজরুলের পশ্চিম ডেকাপুরস্থ বাড়িতে যাওয়ার পথে সন্ধ্যায় আহত ছাত্রের পিতা শেখ নজরুলের সাথে পথেই দেখা হয়ে যায়। শেখ নজরুলের সাথে এ কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে নজরুল দেশীয় কাঠের টুকরো দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলে তিনি ডান হাত দিয়ে প্রতিরোধ করেন। এসময় তার হাতের দুটি আঙ্গুলে মারাত্মক আঘাত প্রাপ্ত হন এবং তার মাথায় চোঁঠ লাগে।
সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি হলে তার হাতে অপারেশসহ হাড্ডিগুলোকে আগের যায়গায় আনতে রড লাগানো হয়েছে। এদিকে ওই ঘটনায় আহত আব্দুল মুমিন’র গ্রামের বাড়ি রাজনগর উপজেলার ডেকাপুর মাদ্রসার অন্যান্য ছাত্র- অভিভাবকরা বিক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। শনিবার দুপুরে মাদ্রসা ছাত্র সংসদ’র পক্ষে পার্শ্ববর্তী কালারবাজারে সাধারণ ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা’র আয়োজন করে। তারা হামলাকারীর শাস্থি দাবীসহ মাদ্রসা সুপার নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অপর মাওলানার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে।