ঢাকা: সুপ্রিম কেটের্র সামনের ভাস্কর্য অপসারনের প্রতিবাদে প্রেসক্লাবের সামনে জাসদের মানব বন্ধন করেছে। মানব বন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি।
‘ভাস্কর্য নির্মাণ এবং স্থাপন মূর্তিপূজা নয়, ভাস্কর্যের কারণে ধর্মের অসম্মান হয়না’ উল্লেখ করে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা ধর্মকে অসম্মান করা নয়। একারণে ভাস্কর্য নির্মাণ এবং স্থাপনে ধর্মের অসম্মান হয়না। ভাস্কর্য বাংলাদেশ ও পৃথিবীর হাজার হাজার বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প মাধ্যম।’
‘ভাস্কর্যবিরোধী হেফাজতী সাম্প্রদায়িক চক্রের সাথে কোনো ধরনের রাজনৈতিক সম্পর্ক বা লেনদেন দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য আত্মঘাতী’ বলে সাবধান বাণী উচ্চারণ করে জাসদ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বপক্ষে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে যারা রয়েছেন, সাম্প্রদায়িক তেঁতুল হুজুর চক্রের সাথে কোনো ধরনের রাজনৈতিক লেনদেন করবেন না।’
জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গণে মৃণাল হকের ভাস্কর্য স্থাপনের পর থেকেই হেফাজতে ইসলাম ও তেঁতুলহুজুর গোষ্ঠী ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করছে। আমরা পরিষ্কার বলতে চাই সুপ্রীম কোর্টের ভাস্কর্যকে উপলক্ষ্য করে হেফাজতের সাম্প্রদায়িক চক্র বাংলাদেশের সকল ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান পরিস্কার করেছে। তারা ভাস্কর্যকে উপলক্ষ্য করে কার্যত অতীতের সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী অপরাজনীতির জিগির তোলার চেষ্টা করছে।’
‘যে সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে পিছনে ফেলে আমরা সম্প্রীতি ও গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাচ্ছি, সেই অগ্রযাত্রাকে বাধা দেয়ার জন্য সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আবার চক্রান্তের রাজনীতির আশ্রয় নিচ্ছে’ উল্লেখ করে ইনু বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধান সাহিত্য, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ভাস্কর্য নির্মাণ ও স্থাপনের অধিকার প্রদান করে। সংবিধানের এ অধিকার ধর্মবিরোধী নয়, ধর্মের অসম্মানও নয়, এটি দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি রক্ষার মৌলিক অধিকার। এ অধিকার রক্ষার জন্যে সকল ভাস্কর্য ও শিল্প-সাহিত্যচর্চা অক্ষুন্ন রাখা সরকার ও প্রশাসনের পবিত্র দায়িত্ব। জাসদ আশা করে, সরকার সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখতে সফলভাবে এ দায়িত্ব পালন করবে।’
‘সকল ভাস্কর্যকে রক্ষা করুন, ভাস্কর্যকে উপলক্ষ্য করে হেফাজতের সাম্প্রদায়িক চক্রের জঙ্গিবাদী অপরাজনীতির জিগির তোলার চেষ্টা কঠোরভাবে দমন করুন। সেইসাথে ভাস্কর্য সরিয়ে নেয়ার বিরোধিতা করার জন্য যে সকল ছাত্র ভাইদের আটক করা হয়েছে, তাদের অবিলম্বে মুক্তির ব্যবস্থা করুন’, সরকারের প্রতি দাবি জানান তথ্যমন্ত্রী।
জাসদ ঢাকা মহানগরের সমন্বয়ক মীর হোসাইন আখতারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগরের যুগ্ম সম্বন্বয়ক নুরুল আখতার, জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্থায়ী কমিটির সদস্য নাদের চৌধুরী সহ-সভাপতি ফজলুর রহমান বাবুল, ঢাকা মহানগর-উত্তরের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউদ্দিন মোল্লা, জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চুন্নু, জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় যুব জোটের সভাপতি রোকনুজ্জামান রোকন, কাজী সালমা সুলতানা, জাসদ ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব শামীমসহ জাসদের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দ।