মৌলভীবাজার অফিস।। মৌলভীবাজারে রোপা আমন(ব্রি ধান-৭৫) ধানের নমুনা শস্য কর্তন অনুষ্ঠানিকভাবে হয়ে গেল। সম্প্রতি মৌলভীবাজার সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের আজমেরু এলাকায় কৃষক সৈয়দ হুমায়েদ আলী শাহিন ও সৈয়দ উমেদ আলীর শস্য মাঠে এ নমুনা শস্য কর্তন করে সংগ্রহ করেন কৃষি কর্মকর্তারা।
সরেজমিনে এসে ঢাকাস্থ খামারবাড়ি ক্রপসিং উইং পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কম সময়ে অধিক ফলন হয় এমন জাতের ধান কৃষকদের জমিতে রূপণের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এ জাতের মধ্যে রয়েছে ব্রি-৭৫ জাতের ধান। এ ধান ১১৫ দিনে ফসল কাটার জন্য উপযোগী হয়ে যায়। ব্রি-৭৫ জাতের চাল সরু থাকায় খেতে অধিকাংশ মানুষ পছন্দ করেন। এর চাল মানসম্পন্ন হওয়ায় বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। হেক্টর প্রতি এ ধানের উৎপাদন সাড়ে ৫ মেট্রিক টন পাওয়া গেছে।
এছাড়াও জমি থেকে ধান কাটার পর একই জমিতে সময়মতো রবিশষ্য যেমন সরিষা, সুর্যমূখি, ভুট্টা, ডাল চাষ করা যায়। রবিশষ্য চাষাবাদ বৃদ্ধি পেলে বিদেশ থেকে তৈল ও ডাল আমদানি নির্ভরতা অনেকটা কমে আসবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মৌলভীবাজারের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী বলেন, এবছর রোপা আমনের আবাদ হয়েছে ১লক্ষ ১শত ৫০ হেক্টর জমিতে। রোপা আমন উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ২লক্ষ ৭০হাজার ৪শত ৫ মেট্টিক টন চাল।
তিনি বলেন, এ মৌসুমে ব্রি ধান-৪৯ সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে। এছাড়াও চাষ হয়েছে হাইব্রিড, ব্রি-৫৮, ব্রি-৫২ ধান। নতুন ধান ব্রি-৭৫ ছাড়াও ব্রি ধান-৭১, ব্রি ধান-১৪ ফলন ভালো হয়েছে।
সৈয়দ হুমায়েদ আলী শাহিন বলেন, এ বছর তারা ১৩০ কেয়ার জমিতে রোপা আমন ব্রি ধান-৪৯, বিআর ১১ ও পরিক্ষামূলক ২ কেয়ার জমিতে ব্রি ধান-৭৫ চাষ করেছেন। প্রত্যেকটি জাতের ধানের ফলন ভাল হয়েছে। এর মধ্যে স্বল্পকালিন ব্রি ধান-৭৫ আশাতিত ফলন হয়েছে। গতবছর আমন মৌসুমে ১৩০ কেয়ার জমিতে ১ হাজার ৯শত ৭০ মন ধান পেয়েছেন। এ বছরও ২ হাজার মনের বেশী ধান পাবেন বলে আশাবাদি। তবে তিনি ধানের ন্যয্যমূল্য পাবেন কিনা এ নিয়ে শঙ্কিত রয়েছেন।
নমুনা শস্য কর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকাস্থ খামারবাড়ি ক্রপসিং উইং পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি ছিলেন খামারবাড়ি ক্রপসিং উইং এর অতিরিক্ত পরিচালক আলিমুজ্জামান মিয়া, সিলেট অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ শাহজাহান, মৌলভীবাজার কৃসি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী, জেলা পরিসংখ্যান অফিসার নন্দিতা দেব, সদর উপজেলা কৃষি অফিসার সুব্রত কান্তি দত্ত, শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফার মোনালিসা সুইটি, নিরাপদ পান উৎপাদন প্রযুক্তি বিষয়ক কর্মসূচী প্রকল্প পরিচালক তরিকুল ইসলাম টুটুল।
আরো উপস্থিত ছিলেন টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন(ইমজা) মৌলভীবাজার সভাপতি শাহ অলিদুর রহমান, সাংবাদিক আকমল হোসেন নিপু, তমাল ফেরদৌস দুলাল, বিকুল চক্রবর্তী, হাসনাত কামাল, মু. ইমাদ উদ-দীন, মাহবুবুর রহমান রাহেল, সাইফুল ইসলাম, হোসাইন আহমদ, আশরাফ আলী ও মনজু বিজয় চৌধুরী।