২৫ বছর বয়সী পারভিন। এ কথাটি উনার নিজের। বিয়ে হয়ে গেছে বেশ আগেই। ১৪ বছর বয়সেই তার বিয়ে হয়, বাংলাদেশে যা খুবই স্বাভাবিক। পারভিনের স্বামী একটি স্কুলের ‘ভেন’ চালক। রেভশু নামে তাদের একটি ১০ বছর বয়সী কন্যা সন্তান রয়েছে, সাথে আছে আরো ছোট একটি।
ঢাকা, মিডফোর্ডের স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিডফোর্ড হাসপাতালে পারভিন তার দ্বিতীয় কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। এই হাসপাতালের ডাক্তারী বিভিন্ন কর্মচারীদের পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে যুক্তরাজ্যের সহায়তায় প্রশিক্ষন দেয়া হয়। এ কর্মসূচীতে যে কোন ইচ্ছুক মহিলাকে খুবই উচ্চ মানের মহিলা বিষয়ক সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়।
দ্বিতীয় কন্যা সন্তানের জন্মের পর পারভিন হাসপাতালের বিশেষ প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত সেবা কর্মীদের সাথে পরামর্শ করেন এবং দীর্ঘম্যাদী পরিবার পরিকল্পনা পদ্বতি ‘the copper-bearing Intrauterine Device (IUD)’ নিজের জীবনে প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেন। তার ইচ্ছা তিনি তার পরিবারের লোকসংখ্যা তার পরিচালনা ক্ষমতার মধ্যে রাখবেন।
পারভিনের নিজের কথায়- “আমি সবসময় একটি ভয়ে থাকতাম, মনের ভুলে যদি কখনও আমার ঔষধের বড়ি খাওয়ায় ভুল করে ফেলি। কারণ আমার প্রথম কন্যা থেকে দ্বিতীয় কন্যা জন্মের মাঝামাঝি সময়ে আমি পরিবার পরিকল্পনার সেই মহৌষধ বড়ি খাওয়ার ডাক্তারী পরামর্শ পালন করছিলাম। উত্তম এ বড়ি গ্রহন করার জন্য আমি আমার মত অন্য মহিলাদের পরামর্শ দিতে পারি। এখন কিন্তু আমি খুব আশ্বস্ত মনেই বুঝতে পারছি যে আমার এ দু’টি সন্তানকে আমরা সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারবো। আমাদের ক্ষমতা ও সম্পদ সীমিত কিন্তু এর পরও আমাদের দু’টি মেয়েকে শিক্ষার আলো দিতে পারবো। আমি চাই আমার মেয়েরা অন্ততঃ দশম মান পর্যন্ত লেখা-পড়া করুক।”
এদিকে, আগামী ১১ জুলাই ‘জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল’(UNFPA) ও ‘মিল এন্ড মেলিন্দা গেইট ফাউন্ডেশন’ এর সাথে মিলে বৃটেন, লন্ডনে পরিবার পরিকল্পনার উপর একটি আন্তর্জাতিক শীর্ষসম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে।
এ সম্মেলন, পরিবার পরিকল্পনার সাথে সম্পৃক্ত দুনিয়ার সকল অংশীদারদের এক টেবিলে আসার সুযোগ করে দেবে এবং তাদের লক্ষ্য হবে পরিবার পরিকল্পনার উপর তাদের সকলের যে বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি ছিল তাকে একটু বেগবান করা যা’তে দুনিয়ার গরীব দেশগুলোর নিরীহ গরীব খেটে খাওয়া নারী ও কিশোরীরা পরিবার পরিকল্পনার সহায়তা ও সেবা কার্যক্রমের সুবিধে সহজেই নিতে পারে।
Picture: Ashley Winter/DFID