নুরুর রহিম নোমান॥ আমেরিকান শাসকশ্রেণী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকার- রাষ্ট্রপ্রধানদেরকে হত্যা-ক্যু সংগঠিত করতে মদদ দিয়েছে, ‘গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার নামে সারা মধ্যপ্রাচ্যকে রণক্ষেত্রে পরিণত করেছে। ইরাক, লিবিয়া সিরিয়া, প্যালেস্টাইন ইয়েমেন, আফগানিস্তান অনেকটা চিরস্থায়ী যুদ্ধাবস্থা বিরাজমান দেশগুলোতে! এই অবস্থার মূলহোতা আমেরিকার শাসকশ্রেণী, দুই দল-ই।
আজকের আমেরিকার ‘প্রেসিডন্ট ইলেক্ট’ জো-বাইডেন ইরাকে আক্রমণের সময় তার দলের (ডেমোক্রেট) সিদ্ধান্ত অমান্য করে ইরাকে আক্রমণের জন্য রিপাবলিকদের পক্ষেই ভোট দিয়েছিলেন। তিনি এখন ‘মুসলমানদের’ বন্ধু সেজেছেন! স্মরণ করুন, চিলির প্রেসিডেন্ট আলেন্দের কথা, কংগোর প্রধানমন্ত্রী প্যাট্রিস লুমম্বার কথা, মিসরের জামাল আবদেল নাসের এর কথা, আর্জেন্টিনার প্যারন এর কথা, ইন্দোনেশিয়ার সুকর্ণের কথা, বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধুর কথা, ভারতের ইন্দিরা গান্ধীর কথা, আমেরিকার জন এফ কেনেডির কথা! এঁদের সকলকে হত্যা-ক্যু’তে মদদ দিয়েছে আমেরিকা। আফগানিস্থানের ড. নজীবুল্লাহ্, ইরাকের সাদ্দাম হোসেন, লিবিয়ার গাদ্দাফিকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে এরা।
আরো স্মরণ করুন, চিলি, কিউবা, বাংলাদেশ, পানামা ভেনিজুয়েলার কথা! অমানবিক খাদ্য এমবার্গ দিয়েছিলো সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা। নিরীহ নারী, পুরুষ, শিশুর রক্তে রঞ্জিত এদের হাত।
পৃথিবীর যেখানেই মুক্তির সংগ্রাম, সেখানেই আমেরিকা হাজির হয়েছে নিজ স্বার্থ উদ্ধারে। আমেরিকা যার বন্ধু তার আর শত্রুর প্রয়োজন নেই, এটাও প্রমাণিত। ‘গণতন্ত্র’ রপ্তানিকারক দেশেই কী আজ গণতন্ত্রের সংকট?
না, এটা পুঁজিবাদের অভ্যন্তরের সংকট, গণতন্ত্রের নয়। উগ্র জাতীয়তাবাদের বিপজ্জনক উত্থান সৃষ্ট এই সংকট। বিশ্বব্যাপি যুদ্ধবিগ্রহ-নৈরাজ্য সৃষ্টিকারিরা তাদের নিজদেশে দেরীতে হলেও এর ফল কিছুটা তো ভোগ করতেই হবে; এটাই স্বাভাবিক, আশ্চর্য হই নাই।
পুনশ্চ- তাদের জটিল নির্বাচনী ব্যবস্থার পরিবর্তন করবেন হয়তো, আগামীতে নির্বাচন সৃষ্ট এরকম সংকটের অবসানে।
|