এম. রাজু আহমেদ, জুড়ী, মৌলভীবাজার।। জুড়ীতে পৈতৃক সম্পত্তিকে কেন্দ্র করে সমাজপতিরা দশ বছর থেকে ফাতির আলী নামক এক ব্যক্তিকে একঘরী করে রেখেছেন। ঘটনাটি উপজেলার গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের এরালীগুল (দক্ষিণ গোয়ালবাড়ি) গ্রামে ঘটেছে।
গ্রামের বাসিন্দা মরহুম মোঃ তৈমুছ আলীর পুত্র ফাতির আলীর অভিযোগে জানা যায়, দুই মা’র ঘরে তাঁরা ৫ভাই ও ৭ বোন। পিতা জীবিতাবস্থায় সকল ভাই-বোনকে মৌখিক ভাবে সম্পত্তি বন্টন করে দেন। সকল ভাই সমান অংশ পেলেও এক ভাই শরাফত আলীকে ৮শতাংশ জমি বেশি দেন। কিন্তু শরাফত উক্ত জায়গায় মাটি কেটে ঘর বানানোর সামর্থ তাঁর ছিল না। তখন তাঁদেরই আতœীয় লাল মিয়া মহালদার সমঝোতার ভিত্তিতে ফাতির আলীর সাথে জায়গা বদলি করে দেন। দীর্ঘ প্রায় চল্লিশ বছর থেকে ফাতির আলী এখানে বসবাস করলেও তখন কোন বিরোধ ছিল না। প্রায় দশ বছর পূর্বে ফাতির আলী নিজ খরচে উক্ত জায়গায় মাটি কেটে ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। তখন সেটেলমেন্ট জরিপ কাজ শুরু হলে উল্লেখিত ৮শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। পঞ্চায়েতের কয়েক মুরব্বী উক্ত জায়গা ছেড়ে দিতে ফাতির আলীকে চাপ প্রয়োগ করেন। এক পর্যায়ে ফাতির আলীর এক ভাই শ্রমিক লাগিয়ে বেড়া দিয়ে জায়গা দখলের চেষ্টা করেন। এতে ফাতির আলী ও তাঁর স্ত্রী বাঁধা দিলে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। পরে থানায় ফোন দিলে পুলিশ গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। পুলিশ নেয়ার কারনে ক্ষিপ্ত হয়ে পঞ্চায়েত মুরব্বীরা ফাতির আলীকে একঘরী করেন। প্রায় ৪বছর পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন লেমন ফাতির আলীকে দিয়ে পঞ্চায়েতের সকল মুরব্বীর বাড়ি বাড়ি গিয়ে এমনকি মসজিদেও সবার কাছে ক্ষমা চাইয়ে তাঁকে পঞ্চায়েতে ঢুকিয়ে দেন। এর দেড় মাস পর স্থানীয় মুরব্বী ছমির উদ্দিন ছতি ও উস্তার আলীর প্ররোচনায় পঞ্চায়েতের মোতাওয়াল্লী আপ্তাব আলী আতাই পুনরায় ফাতির আলীকে পঞ্চায়েত থেকে বহিস্কার করে একঘরী করেন। প্রথমদফা বহিস্কারের পর পার্শ্ববর্তী সকল পঞ্চায়েতে চিঠি দিয়ে ফাতির আলীকে একঘরী করার বিষয়টি জানিয়ে কোন পঞ্চায়েতে তাঁকে না নেয়ার অনুরোধ করা হয়। যদিও সকল পঞ্চায়েত চিঠি ফেরৎ পাঠায়। এমনকি ফাতির আলীর মেয়েদের বিয়েতেও বিভিন্ন ভাবে বাঁধার সৃষ্টি করা হয়। একঘরীর বিষয়ে আটপনীর মুরব্বী ও ষোলপনীর মুরব্বী হাজী আপ্তাব উদ্দিন মহালদার ও সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাছিব অনেক চেষ্টা করলেও পঞ্চায়েতের মুরব্বীরা বিষয়টি আমলে নেন নি।
পঞ্চায়েত মোতাওয়াল্লী আপ্তাব আলী আতাই একঘরীর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ফাতির আলীর স্ত্রী পঞ্চায়েতকে গালিগালাজ করেছে। তাকে ক্ষমা চাইতে বললেও সে রাজী হয় নি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিন্টু চৌধুরী বলেন, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।