মৌলভীবাজার অফিস।। ষাটের দশকে মৌলভীবাজার এসডিও কোর্টের নাজির সাহেব বলে খ্যাত আব্দুল খালিক নাজির আর নেই (ইন্নালিল্লাহি…রাজেউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। গত ২৪শে জুন রোববার ভোর ৫-৪০ মিনিটে সিলেটের আল হারামাইন উপশহর চিকিৎসাকেন্দ্রে তিনি পরলোকগমন করেন। ওইদিনই তার নিজের গ্রাম জগৎসীর নাজির বাড়ীর বুনিয়াদী গুরুস্থানে দাফন করা হয়।
পুরনো সুপরিচিত প্রতিবেশী কয়েকজনের সাথে নাজির আব্দুল খালিক। তার ডানে এক সময়ের মৌলভীবাজার মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী ও পড়ে অধ্যাপিকা শ্রী সাথী সিনহা, বায়ে সাথী সিনহা’র স্বামী অধ্যাপক খোকন দা, পেছনে দাঁড়িয়ে বায়ে মৌলভীবাজার খৃষ্টান মিশনের মিঃ ডেভিড মনোধীর পাত্র ওরপে কাজল ও অন্য একজন।
পঞ্চাশ-ষাটের দশকে মৌলভীবাজারের ক্রিড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে সজীব রেখে নির্দ্বিধায় হাসিমুখে যিনি মানুষের বিনোদন সঙ্গী হতেন, এমন এক হাস্যরসোজ্জ্বল মানুষ ছিলেন নাজির আব্দুল খালিক। তার বাবাও মৌলভীবাজার এসডিও কোর্টের নাজির ছিলেন এবং তিনি খোরশেদ মিয়া নাজির হিসেবেই সুখ্যাত ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি ৪ছেলে ও ৪মেয়ে, ২৪জন নাতি-নাতনি ও ৩জন প্রপৌত্র-পুত্রি রেখে গেছেন।
ক্রীড়া ও সংস্কৃতিপাগল এ মানুষটি তার যৌবনের বহুমূল্যবান সময় কাটিয়েছেন এলাকার ক্রীড়া ও সংস্কৃতিকে গণমুখী করার কাজে নিবেদিতভাবে। তিনি ওই সময়ে একাধারে মৌলভীবাজারের ক্রীড়া ও সংস্কৃতির একজন নিবেদিতপ্রান সংগঠক ছিলেন আবার স্থানীয় এসডিও কোর্টের নাজিরের দায়ীত্বও পালন করেছেন ক্লান্তিহীনভাবে। মৌলভীবাজারের একসময়ের সবেধন নীলমণি সাংস্কৃতিক সংগঠন নবারুণ সংঘের তিনি সম্পাদক ছিলেন।
সমাজের বাঁধভাঙ্গা বিদেশ যাওয়ার জোয়ারের কোপানল থেকে নাজির আব্দুল খালিক শেষাবদি নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি। ১৯৬০ সালের এক শুভদিনে তিনি বিলেতের উদ্দেশ্যে লণ্ডন পাড়ি জমান। সুদীর্ঘকাল লণ্ডনে অবস্থানের পর ২০০৮সালে বৃদ্ধ বয়সে বাকী জীবন অবসরে কাটানোর উদ্দেশ্যে নিজের জনম মাটিতে ফিরে যান।
তিনি ১৯২৫ সালে মৌলভীবাজারের জগৎশী গ্রামের মন্দির পাড়ার নাজির বাড়ীতে জন্মগ্রহন করেন।