লণ্ডন।। পাশ্চাত্য মুল্লুকে বিয়ে নিয়ে মজার মজার গল্প-কাহিনী প্রচলিত আছে। শুধু কি বিয়ে, বিয়ের পোষাক নিয়ে পর্যন্ত তাদের শ্রুতিমধুর গল্প আছে। অবশ্য বিয়ে বা বিয়ের চুক্তির ইতিহাস বিয়ের পোষাকের ইতিহাসের চেয়ে অনেক পুরনো।
এসব কাহিনীর শুরু অনেকটা আমাদের ঠাকুর মা’র ঝুলির গল্পের মতই।
এসব গল্পের শুরু এভাবেই- এক যে ছিল সবুজ ধূসর দেশ বিশ্বের ঠিক মাঝখানে। সেখানে বাস করতো এক চতুর কুকুর। সে কিন্তু কুকুর ছিলনা, ছিল আসলে ড্রাগন। আর জানা কথা যে সে ছিল অবিবাহিত। সেই ড্রাগন কুকুরের একটি নামও ছিল। পানহু নামে সকলেই তাকে চিনতো। পানহু নামের এই ড্রাগন কুকুর এক সম্রাটের সেবকও ছিল।
যে সময়ের কাহিনী সে সময়ে সম্রাট তারই এক খিটখিটে বদমেজাজি সেনাপতির বিরুদ্ধে ঘরোয়া যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন। বিদ্রোহী বদমেজাজি সেনাপতির বিরুদ্ধে ঝগড়া-বিবাদ করতে করতে অতিষ্ঠ সম্রাট একসময় বুদ্ধি স্থির করলেন। তিনি ঘোষণা করলেন, যে ব্যক্তি তার শত্রুর মুণ্ডু কেটে সম্রাটের পায়ে উপহার দেবে, বিবাহের মাধ্যমে তার হাতে তুলে দেবেন তিনি তার অপরূপ সুন্দরী কন্যাকে। বিয়ে নিয়ে পাশ্চাত্যের প্রচলিত গল্প-কাহিনীর এখান থেকে শুরু নয়। তবে বিয়ে নামক শব্দটি এখানে পাওয়া যায়।
শক্তিশালী সেই ড্রাগন কুকুরতো মানুষ ছিল না। তাই তাকে মানুষ হতে হলো। সে প্রতিজ্ঞা নিল যে করেই হোক সে তার সম্রাটকে উদ্ধার করবে দুরাচার এই সেনাপতির কোপানল থেকে। লড়াই করে সে বিজয়ী হয়ে সম্রাটের পায়ের কাছে দুরাচার সেনাপতির খণ্ডিত মস্তক রাখলো। সম্রাট তার কন্যাকে পানহুর হাতে তুলে দিলেন। এগুলো সাহিত্যের নমুনায় পাশ্চাত্যের কল্পকাহিনী। তবে বাস্তবতা হলো প্রাচীনকালে বিশেষ করে সেই ব্যাবিলনিয়ান সময়ে কুমারী মেয়েদের বিয়ে বলতে কিছু ছিল না। কুমারীগন যৌবনবতী হয়ে উঠার পর তাদের অন্য পুরুষের হাতে তুলে দেয়ার জন্য উপরের ছবির মতই বাজারে উঠতে হতো পুরুষের পছন্দের জন্য। সেখান থেকে পছন্দ করে কিনে নিয়ে যাওয়া হতো পুরুষের ঘরে।
হাজার হাজার বছর দুনিয়ার মানুষ এভাবেই তাদের প্রার্থিত সঙ্গিনী পেয়েছে। বিবাহ বলতে পৃথিবীতে একসময় কিছুই ছিল না।
তার পর ধীরে ধীরে পুরুষ মানুষের সঙ্গিনী সংগ্রহের নমুনায় বিভিন্নভাবে রূপান্তর এসেছে। প্রাচীন ধর্মীয় গ্রন্থ বাইবেলে বিবাহের কোন উল্লেখই নাই। ঐতিহাসিক হুরাডেটাসের বর্ণনার আলোকে ১৮৭৫ সালে বৃটিশ শিল্পী এডউইন আসিরিয়ান, ব্যাবিলনিয়ান কুমারী বাজারের যে চিত্র একেঁছিলেন তাতে কুমারী মেয়েদের দাস বিক্রির মত বাজারে তুলা হতো। এখানে শিল্পী এডউইনের সেই বিখ্যাত ছবি দেয়া হলো। সংগৃহীত