আব্দুল ওয়াদুদ।। দেশের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা ঢলে মৌলভীবাজারের কুশিয়ারা নদী ফুঁসে উঠছে। ইতিমধ্যেই কুশিয়ারায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঘর-বাড়ি প্লাবিত হয়ে গেছে। গেল ক’দিনে মনু ও ধলাই নদীর পানি কমে গেলেও এখনকার অবিরাম বৃষ্টিতে আবারও পানি বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে পাহাড়ি নদ মনুতে।
মৌলভীবাজার শহর ঘেষা মনু সেতুতে শনিবার পানির পরিমান রেকর্ড করেছে পানিউন্নয়ন বোর্ড। তারা জানিয়েছেন, মনু সেতুর চাঁদনীঘাট এলাকায় বিপদসীমার ৩৭কিঃ মিঃ উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মৌলভীবাজার শহরের মানুষের দুঃশ্চিন্তা সংগ ছাড়ছে না। গেল বছর শহরের পাশে বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়াতে এবারো আতঙ্কে আছেন তারা। এদিকে পাউবো জানিয়েছে, শহরের পাশে ঝুঁকিপূর্ণ দুটি যায়গা রয়েছে। মীরপুর ও ঢেউপাশা এলাকার মুহাম্মদপুরের এ দুটি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে আপাতত বাঁধ দিয়ে টিকিয়ে রাখা হয়েছে।
কুশিয়ারা নদীর মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মনূমূখ ইউনিয়ন, রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ও ফতেপুর ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী প্রায় ২৫টি গ্রামের ভেতর পানি ঢুকেছে। এতে ওই ভাটি এলাকার সিংহভাগ যাতায়াতের রাস্থা-ঘাট, বাড়ির আঙ্গিনা ও উঠানে পর্যন্ত পানি উঠে গিয়েছে। শ্রাবনী বৃষ্টির এ ধারাবাহিকতা বন্ধ না হওয়াতে কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হবে তা নিয়ে রীতিমত আলোচনার শেষ নেই নদী পাড়ের কৃষকসহ সাধারণ মানুষের মাঝে। রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউপির ছিক্কা গাঁও, কামালপুর, আমনপুর, সুরিখাল, যোগীকোনা, কেশরপাড়া, সুনামপুর, উমরপুর, কান্দিগাঁও, জোড়াপুর ও ফতেপুর ইউনিয়েনের সাদাপুর, হামিদপুর, বেড়কুড়ি, শাহাপুর, জাহিদপুরসহ প্রায় ২০-২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে বৈরী আবহাওয়া ও বন্যাক্রান্ত খেটে খাওয়া মানুষেরা বিভিন্ন রোগের আশঙ্কা করছেন। নানান রোগ-বালাই থেকে মুক্তি পেতে অনেকে ওষুধ সংকটে অছেন জানিয়ে ফতেপুর ইউনিয়নের জাহিদপুর গ্রামের মাধব
চন্দ্র দাশ বলেন, আমাদের গ্রামের প্রায় সবার বাড়ি প্লাবিত হয়েছে। এটুকু বন্যায় নদী পাড়ের মানুষ নাজেহাল। পানি আরো বৃদ্ধি পেলে পাশের ওয়াপধা সড়কে ঘুমাতে হবে হতদরিদ্রদের।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্ত্তী শনিবার বিকেলে এ সংবাদদাতাকে জানান, মনু রেলওয়ে সেতুতে বিপদসীমার ৮ সেঃ মিঃ নীচে, মৌলভীবাজার শহরের চাঁদনীঘাট এলাকায় ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর, ধলাই নদীতে ১৫সেঃ মিঃ নীচে ও কুশিয়ারা নদীর শেরপুরে বিপদসীমার ৪৫সেঃ মিঃ উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, “সদর উপজেলার মীরপুর ও মুহাম্মদপু’র ঝুঁকিপূর্ণ দুই এলাকায় আপাতত বাঁধ দিয়া ঠিকাইয়া রাখছি”।