গত ৮ জুলাই শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মৌলভীবাজার শহরের মুসলিম কোয়ার্টার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় এক হাত ও পা ভেঙ্গে গুরুতর আহত মৌলভীবাজারের অবসরপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডাঃ এম.এ মতিন (৬৫) সাহেবকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, উপন্যাস পড়ায় ব্যস্ত জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে চিকিৎসা দিতে বিলম্ব করেন। শুধু তাই নয়, এ হাসপাতালে দুই দুইজন অর্থোপেডিক ডাক্তার থাকা সত্তেও, এখানে চিকিৎসা হবেনা জানিয়ে তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে এই মৌলভীবাজারেরই একজন অবসরপ্রাপ্ত সিভিল সার্জনের ক্ষেত্রে যখন এ অবস্থা, তখন সাধারণ মানুষের অবস্থা কি হতে পারে তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে? মৌলভীবাজার নিউজ নামের ফেইচবুক এ খবরটি লিখেছে।
ওরা আরো লিখেছে, এখানে পর্যাপ্ত ডাক্তার ও পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্তেও এবং এখানেই চিকিৎসা সম্ভব এমন রোগীকেও ‘এখানে চিকিৎসা হবেনা’ জানিয়ে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রাক্তন এই সিভিল সার্জন মহোদয়ের চিকিৎসায় হাসপাতালের এই অনিহায় এবং তাকে সিলেট পাঠিয়ে দেয়ায় ফেইচবুক “মৌলভীবাজার নিউজ” বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে লিখেছে-“এই যখন এ হাসপাতালের অবস্থা, তখন এ হাসপাতালে থাকা ডাক্তারসহ সব লোককে ধিক্কার, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো কি অন্যায় হবে? আমি মৌলভীবাজারের অবসরপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডাঃ এম.এ মতিন (৬৫) সাহেবের সাথে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার দায়িত্বে থাকা ডাক্তারের এ অবহেলার জন্য ধিক্কার, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।” এ যেনো নিজের ঘরেই নিজে অপরিচিত পরিত্যাক্ত!অবসরের শেষ দিনগুলোতে এই ডাঃ আব্দুল মতিন নিজের জীবনের চেয়েও বেশী ভালবাসা দিয়ে গেছেন রোগীর সেবায় আর এই হাসপাতালের উন্নয়নে। তার চিকিৎসায় এমন উদাসিন্য ও অবহেলা কেউই মেনে নেবেনা, নিতে পারেনা।
দেশে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালগুলো জেলা পর্যায়ের একমাত্র নির্ভরযোগ্য সরকারী হাসপাতাল। মৌলভীবাজার জেলা হাসপাতালটি তাদেরই একটি। “মৌলভীবাজার নিউজ” এর এমনতর প্রতিক্রিয়ার পর নতুন করে ওই হাসপাতাল নিয়ে অন্য কিছু বলার প্রয়োজন পড়ে না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপরওয়ালারা একটু যত্নবান হবার আহ্বান জানানো ছাড়া আর কি বলার থাকতে পারে।