1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
সাফল্যের ফুলেল সম্ভার নিয়ে সাধনার পায়ে ঢেলে দিয়ে গেলো - মুক্তকথা
মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন

সাফল্যের ফুলেল সম্ভার নিয়ে সাধনার পায়ে ঢেলে দিয়ে গেলো

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : মঙ্গলবার, ২০ জুন, ২০১৭
  • ২৫৭ পড়া হয়েছে

হারুনূর রশীদ।। ধনীর আদুরে দুলাল সবাই যেমন কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হতে পারে না ঠিক তেমনি ‘হে দারীদ্র তুমি মোরে দানিয়াছো খৃষ্টের সম্মান’ সকল দরীদ্রের কর্মে জোটে না। ওই সম্মান শুধুই ক্ষনজন্মা নজরুলের মতো লাখে একজন অতি মানবের কর্মেই হয়। আর এই লাখে একজনরাই ক্ষনজন্মা। এসব মানুষ লাখে লাখে জন্মায় না, জন্মায় না প্রতিদিন। বিশেষ তিথিতে বা সময়ে লাখে এক দু’জন হয়ে এরা ধরা নামক গ্রহধামে আসে। মানব সভ্যতার ইতিহাস ঘাটলে এসব ক্ষনজন্মা মানুষের কাতারে গৌতম বুদ্ধের মতো মহামণীষী রাজপুত্রকে যেমন পাওয়া যায় তেমনি অস্পৃশ্যকূলের একলব্য আর বেশ্যাপুত্র মহাবীর দ্রোণের মত অসাধারণ গুনের মানুষকেও পাওয়া যায়।
সৃষ্টি রহস্য উদ্ঘাটনে নিস্পৃহরা বলবে এটা সর্বময় ক্ষমতার একমাত্র অধিকারী স্রষ্টার লীলা! এভাবে ব্যাখ্যার অর্থই হলো কারণ তারা জানেনা এবং জানার ইচ্ছাও তাদের নেই। এরা খুঁজে দেখতে রাজী নয়। তাই তাদের এমন সিদ্ধান্ত! দুনিয়ায় এ ভাবধারাও নতুন কিছু নয়। অতি আদিকাল থেকেই এমন ধারনা আর বিশ্বাস চলে আসছে। কিন্তু অন্যদিকও আছে। সেই অন্যদিক বলে নিষ্ঠার সাথে মনোনিবেশ দিয়ে কাজ করলে সিদ্ধিলাভ হয়। অর্থাৎ লক্ষ্যে পৌঁছা যায়। সফলকাম হওয়া যায়। তেমনি এক কন্যা সাধনা।
সাধনা, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর মানুষ। সাধনাও, নিজের কর্মের প্রতি একনিষ্ঠ থেকে আন্তরিকভাবে মনোনিবেশ সহকারে কাজ করে গেছেন। তাই তিনি তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের একটিতে পৌঁছাতে পেরেছেন। যে কোন কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও মনোনিবেশ জন্মসূত্রে পাওয়া কিছু নয়। ভাষা দিতে গেলে এ প্রক্রিয়াকে ব্যাখ্যা করা যায় এ শব্দ সমষ্টি দিয়ে- ‘লক্ষ্যের প্রতি অবিচল থেকে বাঁধাকে অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়া।’ সাধনা তাই করতে পেরেছেন। তাই তিনিও আমাদের চিন্তায় এক ক্ষণজন্মা মানুষ। তার লক্ষ্য ছিল যেভাবেই হোক তিনি লিখা-পড়া করে একটা চাকুরী করে মা-বাবাকে সুখি করবেন। মা-বাবার অমানুষিক পরিশ্রম নামের পারিপার্শিকতা তার মাঝে নিষ্ঠা নিয়ে আসে। যা অনেকেই হতে পারেননা মায়া, লোভ কিংবা হিংসার বশবর্তী হয়ে। সাধনা এ তিন রিপুকে বিদেয় দিতে পেরেছিলেন বলেই তিনি লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেরেছেন। আর তাই তিনি আমাদের সমাজের ক্ষণজন্মা এক কন্যা।
সাধনা নিজে অকপটে অনেক কিছুই বলেছেন। পাহাড়ী জীবন। নিগূঢ় বৈদিক যুগের জীবন। সবকিছু পায়ে হেটে। সাঁঝ-সন্ধ্যায় পাখীর সাথে ঘরে ফেরা। এর পর ঘুমিয়ে পরা। আবার নিশিরাতের পরেই ঘুম থেকে উঠে খাদ্যের সন্ধানে বেরিয়ে পরা। এইতো পাহাড়ী জীবন! এতোসব পরিচিত প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি একটি বিষয় পক্ষে ছিল। সে ছিল আত্মীয়-প্রতিবেশীর দরদ আর ভালবাসা।
বাবার কেরোসিন কেনার টাকা ছিলনা তাই সন্ধ্যায় সন্ধ্যায় ঘুমিয়ে পড়তে হতো। কিন্তু কেরোসিনের সমস্যা তাকে জব্দ করতে পারেনি। সুপ্রতিবেশী শিক্ষক কৃত্তিত্তম চাকমা নিজের বাসায় থেকে পড়ার সুযোগ দিয়েছিলেন। বউ কেনার সামর্থ না থাকায় বান্ধবীর বাসায় গিয়ে তার বইদিয়ে লিখা-পড়া চালিয়ে যেতে হয়েছিল। কলেজে পড়তে গিয়ে জেলাপরিষদ চেয়ারম্যান মনিন্দ্রলাল ত্রিপুরা দেবদূতের মত সহায়তা করেছিলেন, পিসি(ফুফু) শাপলা ত্রিপুরার বাসায় থেকে তাঁর নিজের ব্যবহারের একমাত্র সৌখিন কাপড় বিক্রির টাকা আর সংসদ সদস্য জ্যোতিন্দ্র লাল ত্রিপুরার অর্থ সহায়তায় কলেজে ভর্তি হওয়া, বীণা ত্রিপুরা, যাকে এখন সাধনা মা বলে ডাকেন সেই বীণা ত্রিপুরার দ্বারা সারা বছরের খরচের দায়ীত্ব নেয়ার কাহিনী এসব অকপট আর বিনয়ী স্বীকারোক্তি সাধনার। শিক্ষক হিসেবে ভূমির দায়ীত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার রুবাইয়াত ই আশিকের সহায়তার কথা স্মরণ থেকে হারায়নি সাধনার। ছাত্র পড়ানোও বাদ যায়নি তার। এ সবকিছুই ছিল সাধনার কর্মের প্রতি নিষ্ঠা। নিষ্ঠা আর মনোনিবেশ একে অপরের সম্পূরক। এতোকিছুর পর সাধনার সাধনা কি আটকে থাকতে পারে! পারে না। এর পর সেই অপেক্ষার শেষ হলো। লক্ষ্যে পৌঁছার দিন এসে হাজির হলো। দীর্ঘ অধ্যবসায়ের অনুশীলন সাফল্যের ফুলেল সম্ভার নিয়ে সাধনার পায়ে ঢেলে দিয়ে গেলো ২০১৬ সালের ১৭ই আগষ্ট। সাধনা বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন। তিনি এখন বাংলাদেশের একমাত্র ত্রিপুর সম্প্রদায়ের মহিলা ম্যাজিষ্ট্রেট। তাকে অভিনন্দন।
তথ্যসূত্র: নিজউওয়ার্লডবিডি

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT