মূল কাহিনী একটি হত্যা মামলা। আজ থেকে ১৩ বছর আগে ২০০৪ সালের। পাকিস্তানের এক কিশোরের। হত্যা মামলার আসামী হবার পর মানবেতিহাসখ্যাত এ উপমহাদেশের মামলা-মোকদ্দমার ধরণানুযায়ী আসামীর ফাঁসী হয়। ফাঁসীর দিনই, দেশের প্রচলিত আইনানুযায়ী ফাঁসীমঞ্চে আসামীর শেষ ইচ্ছা লিখে জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়। কাহিনীর শুরু এখান থেকেই।
সেই শেষ ইচ্ছা লিখে জানানোর পরই পরই তার ফাঁসীর আদেশ স্থগিত করা হয়। এ কাহিনীকে নিয়ে আমাদের অনলাইনগুলো খুব রসিয়ে খবর রচনা করে প্রকাশ করে, গেল বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর জুড়ে।
ফাঁসীর আসামী ওই শাফকাত হোসেনের পরিবার ও তার আইনজীবীর সূত্র উল্লেখ করে বিভিন্ন অনলাইন যে খবর লিখেছিল, তা সংক্ষেপে এরূপ ছিল। অনলাইনগুলো খুব রসদিয়ে লিখেছিল- তাকে ফাঁসীর সাদা পোষাক পরানো হলো। প্রস্তুত ছিল ফাঁসির মঞ্চ। এরপর ফাঁসীর নিয়মানুযায়ী তাকে বলা হলো তার শেষ ইচ্ছা লিখতে। এই লিখে দেয়ার পরই তার ফাঁসি কার্যকর স্থগিত করা হয়। ফাঁসীর আসামী শাফকাত হোসেন নামের ওই যুবকের আইনজীবী ওই সময় জানিয়েছিলেন, ২০০৪ সালে যখন তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছিল তখন তার বয়স ছিল ১৪ বছর।
তার পরিবারের অভিযোগ, হত্যার কথা স্বীকার না করায় তার উপর নির্মম নিপীড়ন চালানো হয়। তাকে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেয়া হয়। তার নখ উপড়ে ফেলা হয়। সে সময়ই শাফকাতের ভাই গুল জামান জানিয়েছিলেন, তার ফাঁসি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
রহস্য কিছুই নয়, পেছনের ঘটনা হলো, মানবাধিকার সংগঠনগুলো দাবি করেছিল, হত্যাকান্ডের সময় শাফকাতের বয়স আসলে কত ছিল জানাতে হবে এবং স্বীকারোক্তির জন্য তার ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছিল তার তদন্ত করতে হবে। পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের কম বয়সী কারো মৃত্যুদণ্ড- হয় না এবং নির্যাতনের মাধ্যমে স্বীকারোক্তি আদায়ও গ্রহণযোগ্য নয়। তার ভাই গুল জামান আরো বলেছিলেন, শাফকাতকে যখন ফাঁসির জন্য প্রস্তুত করা হয় তখন তিনি তার পাশেই ছিলেন। “ফাঁসির জন্য তাকে সাদা ইউনিফরম পরানো হয়। এ সময় তাকে তার শেষ ইচ্ছা লিখতে বলা হয়। শাফকাত লিখেন- আমি নির্দোষ। তারা যেজন্য আমাকে ফাঁসি দিতে চায় আমি সেই অপরাধ করিনি। তারা অপরাধীদের বাঁচাতে চায় এবং ইতোমধ্যেই তাদের খালাস দেয়া হয়েছে।”