মৌলভীবাজারে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের(বাপাউবো) মনূ নদী উন্নয়ন প্রকল্পের ৯শ ৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৩০ হাজার টাকার কাজের ধীরগতি চলছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে জেলা শহরসহ সদর,রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলার ৭২টি প্যাকেজের উন্নয়নমূলক কাজ। এদিকে জেলার কুলাউড়া উপজেলা সীমান্তে ভারতের বিএসএফ’র বাধার মুখে বøকের কিছু কাজ বন্ধ রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডসূত্র জানায়, ২০২০ সালের জুন মাসে একেনেকে মনূনদ প্রকল্প অনুমোদন পেয়ে ২০২১ সালের মে মাসে কাজ শুরু হয়। চলতি বছরের গেল জুন মাসে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও সময়মত ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন না হওয়াতে প্রকল্পের কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময় বেধে দেয়া হয়েছে। মনূ নদের ৭২টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, ৩টি উপজেলার মনু নদী’র ৩০ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে নদী তীর সংরক্ষণের কাজ, ৮৫ কিলোমিটার জায়গায় চৌড়া করে পুরাতন বাঁধ উঁচুকরণের কাজ, ৩ উপজেলার মনূ নদে ১২ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে ৩৪টি চর অপসারণ ও মৌলভীবাজার শহরকে বন্যার আঘাত থেকে রক্ষা ও নদী ভাঙ্গনরোধে শহর ঘেঁষে বড়হাট থেকে শাহবন্দর পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার আরসিসি ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ। সবকটি কাজের টাকা এসেছে মাত্র ১৮ শতাংশ। যার মূল্য প্রায় ১শ ৮০ কোটি টাকা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড আরো জানায়, নদের মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় ৩৪ একর, রাজনগর উপজেলায় ৭১ একর ও কুলাউড়া উপজেলায় আরো ৩৩ একর জমি অধিগ্রহণ করতে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এদিকে জেলার রাজনগর উপজেলায় ৭১ একর ভ‚মি অধিগ্রহণের অনুমতি পেয়েছে পাউবো। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় থেকে এই ৭১ একর ভূমি ক্রয়ের টাকা পেলে নদী পাড়ের জমি মালিকদের দেয়া হবে বলে জানা গেছে।
এদিকে জেলার কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়ন সীমান্তে ভারতের বিএসএফ’র বাধার মুখে ব্লকের কাজ বন্ধ রয়েছে। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী এ প্রতিবেদককে জানান, মনূ নদী’র রাকজোর, তেলিবিল ও নিশ্চিন্তপুর এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ’র বাধায় তাদের ব্লকের কাজ বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে দিল্লীতে আলোচনা হয়েছে। ব্লকের কাজ করতে দিল্লী মৌখিক অনুমতি দিয়েছে। লিখিতাকারে না দিলে কাজ শুরু করা যাবে না।
এদিকে মৌলভীবাজার শহর ঘেষা মনু নদী পাড়ের ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ের আড়াই কিলোমিটার আরসিসি ফ্লাড ওয়ালের নির্মাণ কাজ দেখতে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, কাজের প্রায় আড়াই থেকে ৩শ মিটার সম্পন্ন হয়েছে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাবেদ ইকবাল শনিবার(৪ নভেম্বর) বলেন, মনু নদী উন্নয়ন প্রকল্পের ৪০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কি কারণে কাজে ধীরগতি হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে ওই প্রকৌশলী বলেন, ভূমি অধিগ্রহণ পুরোপুরি না হওয়াতে কাজের ধীরগতি হচ্ছে। এছাড়াও মালামাল’র দর বৃদ্ধি পাওয়াতে ঠিকাদার কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করছে।