মুক্তকথা সংবাদকক্ষ।। টুপি আর দাড়ি থাকলে চাকুরী হবে না। কলকাতায় চাকরী খুঁজতে আসা মানজার হোসেনের অভিজ্ঞতা তাই। চাকুরী ক্ষেত্রে ভারতে ধর্মীয় বৈষম্য আছে। আর এই মানজার হোসেনের বরাতে এমন তথ্য দিয়ে খবর পরিবেশন করেছে বিবিসি। এই চাকুরী মেলার আয়োজন করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম’ আর ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ মুসলিম প্রফেশনালস’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। চাকুরী মেলার আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠানের পদস্ত একজন ব্যক্তিত্ব আব্দুল রাজ্জাক শেখ অবাক হওয়ার মত তথ্য দিয়েছেন। তার দেয়া তথ্যে জানা যায় যে, তাদের আয়োজিত চাকুরী মেলায় যারা অংশ নেয় তাদের মাত্র ৫০% ভাগ মুসলমান।
বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায়, ভারতের মোট জনসংখ্যার ১৪ শতাংশেরও বেশি মুসলমান। কিন্তু চাকরি ক্ষেত্রে তাদের সংখ্যা খুবই নগণ্য, চোখে পড়ার মত নয়। মুসলমানেরা এক শতাংশের সামান্য কিছুটা বেশি সংখ্যায় কাজ করেন সরকারী প্রতিষ্ঠানে। অবশ্য বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সমূহের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
ভারতে মুসলমানেরা চাকুরির ক্ষেত্রে যে পিছিয়ে রয়েছেন, তার স্পষ্ট উল্লেখ পাওয়া যায় বিচারপতি সাচারের বিবরণে। বিচারপতি সাচার তার বিবরণে ভারতীয় মুসলমানদের পশ্চাদপদতার কারণ খোঁজে দেখার চেষ্টা করেছেন।
জনাব রাজ্জাক শেখের মেলা আয়োজনের অভিজ্ঞতা প্রসূত ধারনা যে, মুসলমান চাকুরী প্রার্থীদের কাছে আসলে এসব খবরই পৌঁছায় না। কারণ এসব চাকুরী ও চাকুরী মেলা বিষয়ক খবর পৌঁছানোর মত সচেতন শিক্ষিত মানুষ বা পথ দেখিয়ে দেওয়ার মানুষ মুসলমান পরিবারে নেই। মুসলমান ছেলেমেয়েদের মধ্যে কিন্তু প্রতিভা বা যোগ্যতার অভাব নেই।
মেলার উদ্যোগ নিয়েছে যে সরকারি নিগম, তার চেয়ারম্যান ড. পি বি সেলিম বলেছেন, শিক্ষার দিক থেকে বা আর্থ-সামাজিকভাবে পিছিয়ে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রেও ওই সকল মানুষ পিছিয়ে পড়বেন।
ওই মেলায় প্রায় ৫০টির মত বেসরকারী প্রতিষ্ঠান চাকুরী প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। তাদের কাছ থেকে জানা যায় যে, সারা দিনে তাদের কাছে যেসব প্রার্থী কাগজপত্র জমা দিয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তাদের বেশীর অংশই মুসলমান। আর যোগ্যতার দিক থেকে উভয়ই সমান সমান। সংখ্যালঘুদের চাকুরী না পাওয়ার পেছনে এই আর্থ-সামাজিকভাবে পিছিয়ে থাকাটা একটা কারণ। অপর আর একটি বিষয়ের দিকে সাচার কমিটিতো বলেছেই যে অনেক সংস্থাতেই মুসলমানদের চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা বিরূপ মনোভাব রয়েছে। সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই।