হারুনূর রশীদ।।
এটি কে নাজানে যে, ইরাণ মুসলিম প্রধান একটি দেশ। ইরাণ সামনের দিকে এগুতে চায়। কিন্তু ধর্মীয় আচরণের পাশাপাশি জিহাদী মতবাদের সম্প্রসারণ এমন পর্যায়ে গেছে যা এখন সে দেশের অগ্রগতির জন্য এক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইরাণের ভৌগলিক অবস্থান এমন এক স্থানে যে তার ডানে কিংবা বায়ে যারাই আছে তারা সকলেই বিভিন্ন মাত্রার অস্থিতিশীলতায় ভুগছেন।
এই ইরাণ শাহ পাহলভিদের আমলে আমেরিকার ঘনিষ্ট বন্ধুরাষ্ট্র ছিল। নতুনকরে আবার সেই বন্ধুত্বের ছেঁড়া খাতায় তালি দিতে চাইলে দিতেও পারে। হয়তো এই মূহুর্তে না হতে পারে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্যদিয়ে আমেরিকা বুঝতে পেরেছিল কৌশলগত দিক থেকে ইরাণ কত প্রয়োজনীয় দেশ। ফলে ১৯৫৩ সালে নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোসাদ্দেগকে সামরিক শাসনের মধ্যদিয়ে সরিয়ে একটি পুতুল সরকার গঠন করা হয়। অবশ্য একটু দেরীতে হলেও ইরাণীয়ানগন বুঝতে সক্ষম হয় যে তাদের শাসক কে! ফলে ২৬বছরের মাথায় ১৯৭৯সালে বিপ্লব ঘটে ইরাণে।
এর পর থেকেই ইরাণ হয়ে পড়ে আমেরিকার শত্রু আর সোভিয়েট ইউনিয়নের খাঁটী বন্ধু। শুরু হয় আমেরিকার ইরাণ বিরুধী বিভিন্ন ভূ-রাজনৈতিক কর্মযজ্ঞ। ইরাণকে কব্জায় আনতে এসব কৌশলের এক পর্যায়ে আসে নিষেধাজ্ঞা। বিগত ৩৯ বছর ধরে ইরাণ সামাল দিয়ে যাচ্ছে আমেরিকার বিভিন্ন নমুনার এসব রাজনৈতিক কূটকৌশল।
এ সবেরই ধারাবাহিকতায় অতিসম্প্রতি নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় ইরান এবার আন্তর্জাতিক আদালতে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম ঘাসমি বলেন, গতকাল অভিযোগটি তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এএফপি’র বরাতে ইত্তেফাক এ খবর দিয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাবাদ জরিফ তার টুইটার বার্তায় বলেন, ‘বে-আইনীভাবে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় যুক্তরাষ্ট্রকে জবাবদিহিতে বাধ্য করাই এই অভিযোগ দায়েরের উদ্দেশ্য।’
উল্লেখ করা ভাল যে, মার্কিন সরকার গত মে মাসে ইরানের সাথে ২০১৫ সালে করা পারমাণবিক চুক্তি বাতিল ঘোষনা করে। একটি বিষয় উল্লেখ করা ভাল যে দুনিয়ার বুকে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, জাপানের হিরোশিমা আর নাগাশাকি শহরের উপর এটম বোমা মেরে ইতিহাসের জঘণ্যতম নরহত্যার ঘটনা ঘটিয়েছিল আমেরিকা।
লণ্ডন, মঙ্গলবার ১৭ই জুলাই ২০১৮সাল